• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

লোকতাক লেক: বিশ্বের একমাত্র ভাসমান উদ্যান

লোকতাক লেক: বিশ্বের একমাত্র ভাসমান উদ্যান

ছবি- সংগৃহিত

ফিচার ডেস্ক

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে অবস্থিত ‘লোকতাক লেক’। এটিই নাকি বিশ্বের একমাত্র ভাসমান লেক বা হ্রদ। এই লেকে রয়েছে পৃথিবীর সবথেকে বড় ভাসমান জাতীয় উদ্যান! এই উদ্যানের নাম ‘কেইবুল লামজাও’।

২৪০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এই প্রাকৃতিক হ্রদ বা লেকের রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপ। এই দ্বীপগুলো দেখতে ভাসমান গ্রামের মতো। স্থানীয় ভাষায় এই গ্রামগুলোর নাম ‘ফুমডি’। উদ্ভিদ, মাটি এবং পচনশীল জৈব পদার্থ একত্রিত হয়ে ফুমডি তৈরি হয়। এরপর ফুমডির ওপর গড়ে ওঠে ছোট ছোট বসতি।

ভারতীয় গবেষকদের তথ্য বলছে, ফুমডি’র ২০ শতাংশ পানিতে ভেসে থাকে, ২০ শতাংশ পানিতে ডুবে থাকে। গ্রীষ্মকালে ফুমডি’র গাছগুলে লেকের তলদেশ থেকে পুষ্টি আহরণ করে বেঁচে থাকে। বর্ষাকালে ফুমডি নতুন শেকড় ছেড়ে বিস্তার ঘটায়।

মণিপুরের লোকতাক লেকের এই ফুমডি তৈরি হয়ে প্রাকৃতিকভাবেই। লোকতাক লেকের ফুমডি সেখানকার স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব রাখে। বর্তমানে লোকতাক লেকে প্রায় চার হাজার ফুমডি রয়েছে। এসব ফুমডি’র কোনোটিতে রয়েছে বাজার, কোনোটিতে বিদ্যালয় আবার কোনো ফুমডিতে রয়েছে প্রার্থনালয়।

এছাড়া ফুমডি’তে বসবাসের জন্য ধাতব প্লেট, রড, বাঁশ, কাঠ ও পাথর দিয়ে ঘর তৈর করা হয়। ঝুপড়ির মতো এসব ঘরে থাকে খড়ের বিছানা, রান্নার সামান্য সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় আসবাব। ২০১৭ সালে এই লেকে প্রথম ভাসমান বিদ্যালয় উদ্বোধন করে ভারত সরকার। ওই বিদ্যালয় থেকেই লোকহাক লেকে প্রাথমিক শিক্ষার আলো ছড়াতে শুরু করে। একই বিদ্যালয়ে বৃদ্ধদেরও শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

কথিত আছে, মণিপুর রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী ‘মেইতেই’ গোষ্ঠীর। হিন্দুরা যেমন গঙ্গা নদীকে দেবীরূপে পূজা করেন, তেমনই মেইতেই-রা লোকতাক লেককে মাতৃরূপে ভক্তি করেন। ‘মেইতেই’ সম্প্রদায়ের জীবনধারার এক অবিচ্ছেদ্য অংশের নাম ‘লোকতাক লেক’।

০৫ জুন ২০২২, ০১:৫৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।