• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নান্দনিক বৈচিত্র্যময় বরফের হোটেল

নান্দনিক বৈচিত্র্যময় বরফের হোটেল

ছবি- সংগৃহিত

ফিচার ডেস্ক

সুইডেনে শীতকালে তুষারপাত হয়। তুষারে ঢাকা পড়ে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চল। ওই সময়টাতে সুইডেনে গড়ে তোলা হয় বরফের হোটেল। সুইডেন ছাড়াও জাপান, নরওয়ে, কানাডা ও ফিনল্যান্ডের অস্থায়ী এসব হোটেল গড়ে তোলা হয়। তবে এসব হোটেলগুলোর মধ্যে সুইডেনের জাক্কাসজারভি হোটেল সবচেয়ে দর্শনীয় ও বিস্ময়কর। নির্মাণশৈলীর নান্দনিকতার কারণে এই হোটেলটি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়েছে।

জুক্কাসজারভি হোটেলের পরিচিতি

জুক্কাসজারভি হোটেলটি খোলা থাকে প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। এটিই বিশ্বের প্রথম আইস হোটেল। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা নিয়ে তৈরি এটি। এর কদর অন্যদের চেয়ে আলাদা। এখানে ৮০টি রুম ও স্যুট রয়েছে। এখানে একটি চমৎকার নকশা করা এন্ট্রেস হল ও একটি বার রয়েছে। বারের জানালার কাঁচও তৈরি বরফ দিয়ে। অপূর্ব শৈল্পিক নকশার জন্য এ হোটেলটির খ্যাতি বিশ্বজুড়ে।

সুইডেনের বিখ্যাত এই বরফের হোটেলের প্রবেশদ্বার বলতে পারেন কিরুনা শহরকে। কিরুনা থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুন্দর, ছোট্ট এক গ্রাম জুক্কাসজারভি। সেখানেই টর্নি নদীর তীরে হোটেলটির অবস্থান।

কি আছে বরফের হোটেলে

বরফের হোটেলগুলো মূলত ক্ষণস্থায়ী। শীতকালে এগুলো নির্মাণ করা হয়। তাই প্রতিবছরই নতুন করে তৈরি করতে হয়। বরফের হোটেলের সবকিছুই বরফ ও তুষার দিয়ে তৈরি। হোটেলের বিছানা, টেবিল, চেয়ার, এমনকী বাথরুমও তুষার দিয়ে বানানো হয়।

হোটেলের দেয়াল ও ছাদে করা হয় চমৎকার বরফের নকশা। এসবের সঙ্গে নানা রঙের আলোর ঝলকানি তো থাকেই।

কবে কখন বরফের হোটেলের যাত্রা

১৯৮৯ সালে জনৈক জাপানি আইস ভাস্কর সুইডেনের জুক্কাসজারভি গ্রামে আইস শিল্পকর্মের এক প্রদর্শনী হল স্থাপন করেছিলেন। পরের বছর ১৯৯০ সালে ফরাসি শিল্পী জেনট ডেরিস ওই গ্রামেই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেন। প্রদর্শনীতে অনেক দর্শক সমাগম হয়। একরাতে নিকটবর্তী হোটেলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অতিথিরা প্রদর্শনী হলটিতে রাত যাপনের জন্য আবেদন করেন। প্রদর্শনী হলটি ছিল বরফ দ্বারা তৈরি। অতিথিরা স্লিপিং ব্যাগ ও সম্বরের চামড়া গায়ে জড়িয়ে বরফের প্রদর্শনী হলে রাত কাটান। এরপর থেকেই বরফের হোটেল তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়।

যেভাবে তৈরি করা হয় বরফের হোটেল

মোটা শক্ত আইসবার দিয়ে বরফের হোটেলের কাঠামো তৈরি হয়। আইসবারগুলো কাচের মতো স্বচ্ছ। আবার কোনো কোনো আইসবার অস্বচ্ছও হয়ে থাকে। হোটেলের প্রতিটি কক্ষ, বিছানা, দেয়াল, আসবাবপত্র, ঝাড়বাতি, শিল্পকর্ম সবই তৈরি হয় আইস দিয়ে। হোটেলের খাদ্যসামগ্রী, ব্যবহারিক বস্তুগুলোও তৈরি হয় আইস থেকে। পার্শ্ববর্তী নদী থেকে নিয়ে আসা বিরাট বরফের চাঁই কেটে তৈরি হয় বরফের ইট। ওই ইট দিয়ে তৈরি হয় বিশাল আইস হোটেল।

বরফের ঘরে রাত্রি যাপন

আইস হোটেলে রাত্রি যাপন করা যায়। এর জন্য রয়েছে শীতল ও উষ্ণ কক্ষ। প্রতিটি কক্ষের তাপমাত্রা মাইনাস পাঁচ ডিগ্রি। শীতল কক্ষগুলোয় বরফের বিছানায় সম্বরের চামড়ার চাদর ও লেপ দিয়ে বিছানা সাজানো, তবে স্নান করার ব্যবস্থা নেই।

খরচ কেমন

বিচিত্র এই কক্ষগুলোর প্রতিরাতের ভাড়া বিভিন্ন রকম। তবে কোনো কোনো কক্ষের ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম। ইচ্ছে করলে আপনি এক রাতের মধ্যে অর্ধেক রাত শীতল কক্ষে ও অর্ধেক রাত উষ্ণ কক্ষেও থাকতে পারেন। দুটি পরিবেশেরই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। আইস হোটেলে বিয়ে আয়োজনের ব্যবস্থাও রয়েছে।

০৯ মে ২০২৪, ০৩:৩৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।