• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ঢাকা-যশোর উড়াল রেলপথ, থাকছে না লেভেল ক্রসিং

ঢাকা-যশোর উড়াল রেলপথ, থাকছে না লেভেল ক্রসিং

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রেলপথ যাচ্ছে যশোরে। ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথে ২৩ কিলোমিটার থাকবে এলিভেটেড (উড়াল)। রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের কোথাও থাকবে না কোনো লেভেল ক্রসিং।

এতে সময় বাঁচবে। কমবে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। দেশে উড়াল ও লেভেল ক্রসিংবিহীন প্রথম রেলপথ হতে চলেছে এটি। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করা হবে এই রেলপথে। পদ্মা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী নদী মাড়িয়ে নির্মিত হচ্ছে রেলপথ।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ২৩ কিলোমিটার উড়াল রেলপথ নির্মাণ করা হবে তিনটি ভাগে। প্রথম ভাগে (ভায়াডাক্ট-১ বা ভি-১) ঢাকার শ্যামপুর থেকে শুরু করে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার। এই পথে পড়েছে বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদী। এছাড়া নিচু ভূমির কারণেই এ অংশে উড়াল রেলপথ নির্মিত হচ্ছে।

এ ছাড়া দ্বিতীয় ভাগের (ভি-২) আওতায় পড়ছে পদ্মা সেতুর কাছে মাওয়া অংশ। এ অংশে পদ্মা সেতু মূলত সড়কপথ থেকে অনেক উঁচু দিয়ে নির্মিত হয়েছে। সড়কপথের সঙ্গে মিল রেখে ২ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার হচ্ছে উড়াল রেলপথ।

রেলপথের তৃতীয় অংশেও (ভি-৩) জাজিরায় উড়াল রেলপথ নির্মিত হবে। মাওয়ার মতো জাজিরা অংশেও অনেক উঁচু দিয়ে নির্মিত হয়েছে সড়কপথ। মূলত পদ্মা সেতুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই উড়াল সড়ক নির্মিত হয়েছে। সড়কের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই অংশেও ৪ দশমিক ০৩ কিলোমিটার উড়াল রেলপথ নির্মিত হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় ১৭২ কিলোমিটার মেইন লাইন ও ৪৩ দশমিক ২২ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মাণ করা হবে। এই রেলপথে চলাচলের জন্য ১০০টি ব্রডগেজ রেল কোচ সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়নে অধিগ্রহণ করা হবে ২ হাজার ৪২৬ একর ভূমি।

এজন্য বুড়িগঙ্গা নদীর উপরের ৪০০ মিটার দীর্ঘ আলাদা রেলসেতু নির্মিত হবে। এছাড়া মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে ৫০০, আড়িয়াল খাঁ নদীতে ৬০০, নড়াইলের লোহাগড়ার মধুমতি নদীতে ১২০০, নবগঙ্গায় ১০০, যশোর ভৌরবে ৮০ ও খুলনার চিত্রা নদীতে ১০০ মিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। এসব প্রকল্পের ৫৮টি মেজর ব্রিজ, ২৭৩টি মাইনর ব্রিজ (কালভার্ট ও আন্ডারপাস) নির্মিত হবে।

পাশাপাশি বাংলাদেশের রেলপথ মানেই ব্যালাস্ট্রেড। এই রেলপথে গ্রানাইট পাথর ব্যবহার করা হয়। এই পথে থাকে ইস্পাতের স্লিপার ও কাঠের বন্ধন। তবে পদ্মা সেতু রেল সংযোগের উড়ালপথে কোনো পাথর থাকবে না। অত্যাধুনিক এই উড়াল রেলপথে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারবে ট্রেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে ৯৭৮টি অনুমোদিত এবং ২৭১টি অননুমোদিত লেভেল ক্রসিং থাকলেও ঢাকা-যশোর ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে থাকছে না কোনো লেভেল ক্রসিং। এতে একদিকে যেমন দুর্ঘটনা ঘটবে না, অন্যদিকে সড়কেও পড়বে না জটলা।

ক্রসিং এড়াতে কোথাও কালভার্ট, আন্ডারপাস ও রেলওয়ে ওভারপাস নির্মিত হবে। ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া তৃতীয় ডুয়েলগেজ লাইন, ভাঙ্গা জংশনে ওভারহেড স্টেশন, কমলাপুরের টিটিপাড়ায় আন্ডারপাস, নড়াইলের তুলারামপুরে নতুন আন্ডারপাস নির্মিত হবে।

১১ মার্চ ২০২২, ০১:২৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।