নৌকার বিপক্ষে স্লোগান দিয়ে আনারসে ভোট চাইলেন এমপি একরামুল!
ফাইল ছবি
নোয়াখালী-৪ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। নৌকার প্রতিপক্ষ আনারসে ভোট চেয়েছেন তিনি। এমনই একটি অডিও বার্তা এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি দলের এমপি হয়েও নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
গত বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে নৌকার বিরুদ্ধে মুঠোফোনে স্বতন্ত্রপ্রার্থীর জনসভায় বক্তব্য দেন এমপি একরাম। ওই বক্তব্যের ১০ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি এ ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অডিওতে এমপি একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী এতদিন আমার পা চেটে দুই-তিন তলা বিল্ডিংয়ের মালিক হইছে। আর এখন সে আমাকে বলে রোহিঙ্গা। সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যানের (জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম) কত টাকার প্রয়োজন। সে আর ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) ভুল বুঝিয়ে আমাকে দাবিয়ে রেখেছে। আমি উপরে আল্লাহ আর দল যেহেতু করি নিচে শেখ হাসিনা ছাড়া কাউকে পরোয়া করি না।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ৫ নম্বর চরজুবলী ইউনিয়নে দেওয়া বক্তব্য এটি। সেখানে নিজেকে শেখ হাসিনার প্রতিনিধি দাবি করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নৌকার প্রার্থী হানিফ চৌধুরীকে ভোট না দিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল্লাহ খসরুকে ভোট দিতে ওয়াদা করান এমপি একরামুল করিম চৌধুরী।
এছাড়াও মাইকে আনারস প্রতীকের পক্ষে স্লোগান দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নিজের ছেলের মতো ভালোবাসেন বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া তাকে জেতানোর জন্য যা যা করা লাগে সব করাতে নিজের অনুসারীদের নির্দেশ দেন তিনি। নির্বাচনে অনিয়ম হলে প্রতিপক্ষের (নৌকার) লোকজনের হাত কেটে রেখে দিতেও নির্দেশ দেন এমপি একরাম।
এদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য হয়ে প্রকাশ্যে নৌকার বিরোধিতা করায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ ভোটাররা পড়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অডিওটি আমিও শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে পর্যালোচনা করে দলের নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি।’
এদিকে অডিও ক্লিপ সম্পর্কে জানতে এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোনকাল রিসিভ করেননি।
তবে তাঁর পরিবারের একটি সূত্র জানান, এমপি একরাম করোনা আক্রান্ত হয়ে কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। ষড়যন্ত্র করে অডিও রেকর্ড ছড়ানো হয়ে থাকতে পারে বলে এমপি একরামের পরিবারের সদস্যদের দাবি।
এসব ব্যাপারে একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী কবিরহাট উপজেলার চেয়ারম্যান শিউলী একরাম গণমাধ্যমকে বলেন- ‘আমিসহ বাসার সবাই করোনা আক্রান্ত। আমাদের বাসা এখন হাসপাতাল হয়ে গেছে। এমন সময় ষড়যন্ত্রকারীরা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।’
এবি/এসএন
