• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

কপ-২৬ সম্মেলন: বন উজাড় বন্ধে শীর্ষ দেশগুলোর ঐক্য

কপ-২৬ সম্মেলন: বন উজাড় বন্ধে শীর্ষ দেশগুলোর ঐক্য

প্রতিকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক চলমান কপ-২৬ সম্মেলনে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের শতাধিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা। ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধে একমত হয়েছে দেশগুলো। চলমান কপ-২৬ সম্মেলনে এটাই প্রথম বৃহৎ কোনো চুক্তি, যা বন উজাড় বন্ধে কার্যকর হতে চলেছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আমেরিকার বিশাল এলাকাজুড়ে আমাজন বনাঞ্চল বিস্তৃত। এই বনভূমির বিশাল অংশ ব্রাজিলের মধ্যে পড়েছে। কিন্তু দেশটির এক শ্রেণির মানুষ প্রতি বছর আমাজন থেকে লাখ লাখ গাছ কেটে ফেলছেন। এতে উজাড় হচ্ছে বন। পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত আমাজন ক্রমেই তার রূপ হারাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ঝুঁকি আরও বাড়বে বলেও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এসময় বিষয় মাথায় রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে চলমান কপ-২৬ সম্মেলনে শতাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঐক্যমতে পৌছান। এসব দেশের মধ্যে ব্রাজিলও রয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে, বন উজাড় বন্ধের চুক্তিতে ব্রাজিলের ঐক্যমতে পৌছানোর বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। এখন দেখার বিষয় তারা কিভাবে চুক্তিটি কার্যকর করে।

বিবিসি আরও জানিয়েছে, বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে এবং চুক্তি মোতাবেক বনাঞ্চলের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে প্রায় ১ হাজার ৯২০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল গঠন করা হবে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিপুল অংকের এই তহবিল গঠন করা হবে।

বনাঞ্চলে দাবানল নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি সংস্কার ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যথাযথ নিরাপত্তা খাতে এই তহবিল ব্যয় করা হবে। তহবিলের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উন্নয়নশীল দেশগুলোও পাবে বলে কপ-২৬ সম্মেলনের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে সর্বশেষ গৃহীত এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশবিদ, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। তবে সতর্কতাও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বনভূমি উজাড়ে ধীরগতি আনার বিষয়ে ২০১৪ সালের একটি চুক্তি হয়েছিল, যা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। আর ঠিক এই কারণে বিশ্ব নেতাদের আরও পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন নতুন অঙ্গীকার পূরণে সবাই সচেষ্ট থাকে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং থাকছেন। এছাড়া ব্রাজিল, কানাডা, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও চুক্তিতে রয়েছে।

জানা গেছে, পৃথিবীর মোট বনভূমির প্রায় ৮৫ শতাংশ ব্রাজিল, কানাডা, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছে। কাজেই বন উজাড় বন্ধ করতে হলে এই চার দেশের ঐক্যমতে পৌছানোর বিকল্প নেই। উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এখন স্পষ্ট। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে নিয়মিত ভাবে দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা।

এছাড়া অবাধে বনের গাছ কেটে ফেলার কারণে উজাড় হচ্ছে বন, ফলে জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একটি বৈশ্বিক চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

 

এবি/এসএন

০২ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৩১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।