• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

প্রতিকী ছবি

স্বাস্থ্য ডেস্ক

আমাদের পছন্দের যে সকল খাবার রয়েছে গাজর তার মধ্যে অন্যতম। গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ বলে শেষ করা যাবে না।
পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক গাজর চীনে উৎপাদিত হয়। বিভিন্ন ধরনের খাদ্য তৈরিতে গাজরের ব্যবহার হয়। গাজর কাঁচা, রান্না করে বা সালাদে সব ভাবেই খাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশে মানুষের মাঝে সালাদে গাজর খাওয়াই বেশি পছন্দনীয়। পৃথিবীতে উৎপাদিত বেশির ভাগ গাজর কমলা রঙের হয় তবে বেগুনি, হলুদ, লাল ও সাদা রঙের গাজরও হয়ে থাকে।

গাজরের পুষ্টিগুণ
গাজরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ অনেক কারণ এতে রয়েছে ক্যালোরি, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-সি, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, বিটাক্যারোটিন ও আয়রন।

চোখের জন্য গাজর উপকারী
চোখের ডাক্তাররা চোখের যত্নের জন্য প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ খেতে বলেন। গাজরে আছে বিটাক্যারোটিন যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। লাল-কমলা শাকসবজি, ফলমূলে বিটাক্যারোটিন বেশি থাকে। শরীরে ভিটামিন-এ কম থাকলে তা রাতকানা রোগের কারণ হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-এ এর জন্য নিয়মিত গাজর খেতে অভ্যাস করুন।

ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবারে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে। শরীরে ফ্রি-রেডিক্যাল উৎপন্ন হয়ে শরীরের কোষকে নষ্ট করে দেয়। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এসকল ফ্রি-রেডিক্যাল তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। গাজরে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি যা একত্রিত হয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তৈরি করে। তাছাড়া গাজরে থাকা বিটাক্যারোটিন ক্যান্সার হওয়ার হাত থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়। মহিলাদের পেট, কোলন ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও গাজরের ভূমিকা অনেক। অনেক গবেষকদের মতে গাজর খেলে মুখের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গাজর খুবই উপকারী
ডায়াবেটিস রোগের কোন ওষুধ না থাকায় এই রোগকে পরিমিত খাবার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। গবেষকরা জেনেছেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের শরীরে ভিটামিন-এ কম থাকে। আর গাজর ভিটামিন-এ এর প্রাকৃতিক উৎস। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় গাজরকে স্থান দিতে পারেন। তাছাড়া গাজরে থাকা ফাইবার ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজের পরিমাণকে বৃদ্ধি করে থাকে।

দাঁতের যত্ন গাজরের উপকারিতা অনেক
এমন অনেক খাবার আছে যেগুলোকে বলা হয় প্রাকৃতিক টুথব্রাশ, গাজর তাদের মধ্যে অন্যতম। খাবারের পরে কুলকুচি করলেও তা থেকে উৎপন্ন ফলিক মুখে থেকে যায়, যা দাঁতের ক্ষয়ের কারণ। খাবার গ্রহণের পরে গাজর চিবিয়ে খেলে তা থেকে উৎপাদিত হওয়া লালা এ সকল ফলিককে দাঁতের ক্ষয় করা থেকে রক্ষা করে।

ত্বকের যত্ন নিতে গাজর
গাজর ক্যারিনোয়েড সমৃদ্ধ। আর গবেষকরা বলে থাকেন ক্যারিনোয়েড যুক্ত খাবার ত্বকের যত্ন নিতে বিশেষ ভাবে কাজ করে। গাজরে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পটাসিয়াম যা ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। ত্বকে দাগ পরা, ত্বক শুষ্ক হওয়া এসকল রোগ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন।

চুলের যত্নে গাজর
চুলের যত্ন নিতে গাজর খাওয়ার গুরুত্ব অনেক। গাজর আপনার চুলের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সাপ্লাই দেয়। যা আপনার চুলকে ঘন, শক্ত ও মসৃণ করে তোলে। গাজর হলো ভিটামিন-এ, ক্যারোটিনয়েড, পটাসিয়াম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট তৈরির প্রাকৃতিক উৎস। আর এসব উপাদান চুলের যত্ন নিতে সাহায্য করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
যাদের খাবার তালিকায় প্রতিদিন বিটাক্যারোটিন থাকে তাদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। বিটাক্যারোটিন শরীরের ক্ষতিকারক ক্যালোরিকে সরিয়ে দেয়। সেজন্য বিটাক্যারোটিনে সমৃদ্ধ গাজর খেলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যাবে। এছাড়াও গাজর আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক ভাবেই উপকার করে থাকে। যেমন, হাড়কে মজবুত করতে, ওজন কমাতে, লিভারকে সুস্থ রাখতে, বাতের ব্যথা কমাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গাজর উপকারী। তাই আপনার খাবারের তালিকায় গাজর রাখুন এবং প্রতিদিন অন্তত একটি হলেও গাজর খান। তথ্যসূত্র: ওয়েবএমডি।

 

এবি/এনজে/এসএন

২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:১৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।