• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

পর্যাপ্ত এবং পরিমিত ঘুম কেন দরকার?

পর্যাপ্ত এবং পরিমিত ঘুম কেন দরকার?

প্রতিকী ছবি

স্বাস্থ্য ডেস্ক

ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। বলা হয়ে থাকে স্বাস্থ্যকর খাওয়া এবং শরীরচর্চার মত শরীরকে সুস্থ রাখতে ভাল ঘুমের বিকল্প নেই। তবে নানা কারণে আমাদের ঘুমে বিঘ্ন ঘটে থাকে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বর্তমান সময়ে মানুষের ঘুমের পরিমাণ কমে গেছে, সেই সাথে হ্রাস পেয়েছে এর গুণমান। সে যাই হোক, সুস্থ দেহের জন্য ভাল ঘুম অপরিহার্য।

আসুন জেনে নিই সুস্থ ও সবল দেহের জন্য ঘুম কেন অত্যন্ত দরকারি-

অপরিমিত ঘুম ওজন বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কযুক্ত:
পাব মেড সেন্ট্রালে প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে যাদের ঘুমের দৈর্ঘ্য তুলনামূলকভাবে কম হয় তাদের ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা বেশি দেখা যায়। গবেষণায় দেখা যায় যেসকল প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশু স্বল্প সময়ের জন্য ঘুমায় তাদের ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা ৮৯% এবং ৫৫% বেড়ে যায়।

পরিমিত ঘুম অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের প্রবণতা কমায়:
একই গবেষণা থেকে জানা যায়, পর্যাপ্ত সময় না ঘুমালে ঘ্রেলিন নামক হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি ঘটে, ফলে ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যায়। এর ফলে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়, যা পর্যায়ক্রমে ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরিপূর্ণ ঘুম মনোযোগ এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে ও একে সতেজ রাখতে ঘুম খুব প্রয়োজনীয়। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে জ্ঞান, উৎপাদনশীলতা এবং কর্মক্ষমতা। ঘুমের ঘাটতি ঘটলে এগুলি নেতিবাচক-ভাবে প্রভাবিত হয়। অন্যদিকে পরিমিত ঘুম সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি ঘটায়।

খেলাধুলার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
পর্যাপ্ত ঘুম খেলোয়াড়দের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের উপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, দীর্ঘ সময়ের ঘুম তাদের গতি, প্রতিক্রিয়ার সময় এবং মানসিক সুস্থতা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।

ঘুমের ঘাটতির ফলে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়:
দীর্ঘদিনের ঘুমের ঘাটতি স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে এর ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় যারা প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ ঘণ্টার কম ঘুমান তাদের হৃদরোগে ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

অপর্যাপ্ত ঘুম টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়:
অপরিমিত ঘুম রক্তের শর্করাকে প্রভাবিত করে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা হ্রাস করে। এর ফলে ডায়াবেটিস টাইপ-২ রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। গবেষণায় জানা যায় ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে ডায়াবেটিস টাইপ-২ রোগটিতে আক্রান্ত হবার উচ্চ ঝুঁকি বেশি থাকে।

অপর্যাপ্ত ঘুম বিষণ্ণতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে:
বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন বিষণ্ণতার সাথে অপর্যাপ্ত ঘুমের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিষণ্ণতায় ভোগা প্রায় ৯০% রোগী জানিয়েছেন যে তাদের ঘুমের সমস্যা বা স্লিপিং ডিজঅর্ডার রয়েছে।

ঘুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি। যারা তুলনামূলকভাবে ৭-৮ ঘণ্টার কম ঘুমিয়ে থাকেন তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে দুর্বল হয়।
এছাড়াও ঘুমের ঘাটতি থাকলে দেহের প্রদাহ বৃদ্ধি পায় এবং এর থেকে ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি অপর্যাপ্ত ঘুম আমাদের সামাজিক যোগাযোগের ক্ষমতা হ্রাস করে এবং আমাদের অনুভূতিগুলিকে নানাভাবে ব্যাহত করে। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন।

 

এবি/এনজি/এসএন

০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০২:১২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।