• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

তারুণ্য ধরে রাখার অনন্য উপাদান ‘মেথি’

তারুণ্য ধরে রাখার অনন্য উপাদান ‘মেথি’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

তিতা স্বাদের মেথি সবাই চেনেন। মেথিকে মসলা, খাবার ও পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ঔষধি গুণে ভরা মেথি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে কার্যকরী। কারণ এতে রয়েছে রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর বিস্ময়কর শক্তি। গবেষকরা বলছেন, তারুণ্য ধরে রাখার বিস্ময়কর এক ক্ষমতা রয়েছে মেথির। কাজেই যাঁরা নিয়মিত মেথি খান, তাঁদের বুড়িয়ে যাওয়ার গতিটা অত্যন্ত ধীর।

প্রিয় পাঠক, আজকের পর্বে মেথির গুণাগুণ ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছি। চলুন দেখে নেয়া যাক-

পরিচয়:
মেথির বৈজ্ঞানিক নাম Trigonella foenum-graecum। এটি একটি মৌসুমী গাছ। এর পাতা শাক হিসাবে খাওয়া হয়। মেথি শাক গ্রাম বাংলার মানুষের প্রিয় খাদ্য। ইউনানী, কবিরাজী ও লোকজ চিকিৎসায় বহুবিধ ব্যবহার হয়। মশলা হিসাবেও এটি প্রচুর ব্যবহার হয়। মেথি পাঁচ ফোড়নের একটি উপাদান। মেথি থেকে ষ্টেরয়েডের উপাদান তৈরি হয়। ভেষজ উদ্ভিদ হিসাবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, ইরান, নেপাল ইত্যাদি দেশে ব্যবহার করা হয়।

কিভাবে খাবেন মেথি:
পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্যগবেষকরা বলছেন, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করলে শরীরের রোগ-জীবাণু বিনাশ হয়। বিশেষ করে পেটে থাকা কৃমি মারা যায়। এটি রক্তে থাকা চিনির মাত্রাও কমিয়ে আনে।

উপকারিতা:
জি নিউজ, আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়া, হেলথ লাইন ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে, মেথি-

ওজন কমায়: প্রাকৃতিক ফাইবার থেকে জন্ম নেয় মেথি। এগুলো চিবিয়ে গিলে খাওয়া যায় এবং পাকস্থলীর ফাঁকা স্থান এরা পূর্ণ করে। এতে ওজন কমানোর বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। খুব বেশি নয়, সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সামান্য মেথি চিবিয়ে খান। এতেই স্পষ্ট বুঝবেন উপকার পাচ্ছেন। স্থূলতা কমাতে প্রতিদিন সকালে মেথি ভেজানো পানি পান করতে পারেন।

জ্বর ও খুসখুসে কাশি উপশম করে: লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে এক টেবিল চামচ মেথি চিবিয়ে খেলে জ্বর থেকে মুক্তি মেলে। আবার এতে রয়েছে মুসিলেজ নামের এক ধরনের যৌগ, যা গলার খুসখুসে ভাব দূর করে।

নারীদের জন্য বিশেষ উপকারী: নারীদের স্বাস্থ্যগত বিষয়েও মেথির উপকারিতা রয়েছে। মেথিতে রয়েছে সাইটো-ইস্ট্রোজেন, যা নারীদেহে প্রোলাকটিন নামের হরমোনের মাত্রার বৃদ্ধি ঘটায়। এই হরমোন নারীদেহকে সুগঠিত করে। এ ছাড়া ঋতুকালীন বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয় মেথি।

চুল পড়া রোধ করে: স্বাস্থ্যহীন চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে মেথির জুড়ি মেলা ভার। চুল পড়া রোধে বহুকাল ধরে মেথি ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি খেতেও পারেন অথবা বেটে মাথায় লাগাতে পারেন। মেথি বাটা সারা রাত নারিকেল তেলের মধ্যে চুবিয়ে রেখে সেই তেল সকালে চুলে মাখুন। ঘণ্টাখানেক পর গোসল করে ফেলুন।

হজমশক্তি বাড়ায়: বুকে বা পেটের ওপরের দিকে এসিডের প্রদাহ থেকে মুক্তি দেয় মেথি। সেই সঙ্গে বদহজমের সমস্যায় ওষুধের মতো কাজ করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ সবই দেহের বিষাক্ত উপাদানগুলোকে বের করে দেয়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: দেহে গ্লুকোজের মাত্রা দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মেথি। এর অ্যামাইনো এসিড অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন ক্ষরণে সহায়তা করে। এতে দেহে গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস পায়। ফলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ত্বক উজ্জ্বল করে: রূপচর্চায়ও মেথি সবার শীর্ষে। সারা দেহে বয়ে বেড়ানো নানা ক্ষতিকর উপাদান চেহারায় বলিরেখা ফেলে দেয়। এ ছাড়া চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল সৃষ্টি করে। কিন্তু মেথি দেহের সব অপ্রয়োজনীয় উপাদান বের করে দেয়।

খুশকি দূর করে: বিশেষ ধরনের চুলে প্রচুর খুশকির উৎপাত ঘটে। মাথার শুষ্ক ও মৃত ত্বক থেকে খুশকি হয়। গোটা রাত পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে তা বেটে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে লাগান। আধাঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। খুশকি চলে যাবে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, জি নিউজ ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:৪৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।