• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

টক মিষ্টি আমড়ার যত গুণ

টক মিষ্টি আমড়ার যত গুণ

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বর্ষাকাল মানেই দেশীয় ফলের সমাহার। এখন সারা দেশেই নানা দেশী ফল পাওয়া যাচ্ছে। আম, কাঁঠালের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু আমড়া, চালতা, পেয়ারার এখন ভরা মৌসুম। এসব ফল দামে সস্তা, পুষ্টিগুণে সেরা। উচ্চমূল্যে বিদেশি ফল না কিনে অল্প দামের দেশী ফল থেকেই আমরা পেতে পারি কাঙ্খিত পুষ্টি উপাদান।

‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য এবারের পর্বে থাকছে ‘আমড়া’র পুষ্টিগুণ নিয়ে কিছু কথা।

পরিচয়

আমড়ার ইংরেজি নাম Hog Plum। এটি মাঝারি আকারের পর্ণমোচী বৃক্ষের ফল। আমড়ার বৈজ্ঞানিক নাম Spondias pinnaata Kurz। আফ্রিকা, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় এই ফল পাওয়া যায়।

কি আছে আমড়ায়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপেলের চেয়ে আমড়ায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমড়ায় রয়েছে ভিটামিন সি ২০ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ২৭০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম ৩৬ মিলিগ্রাম, আয়রন ৪ মিলিগ্রাম।

এছাড়া আমড়ায় যথেষ্ট পরিমাণ পেকটিনজাতীয় ফাইবার এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টজাতীয় উপাদান থাকে। আমড়ার ৮৩ শতাংশ জলীয় অংশের মধ্যে ০.৬ শতাংশ খনিজ, ০.৩৯ শতাংশ আয়রন, ০.১ শতাংশ চর্বি, ১.১ শতাংশ আমিষ, ১৫ শতাংশ শর্করা এবং ০.৫৫ শতাংশ ক্যালসিয়াম রয়েছে।

আমড়া খাবেন যেভাবে

টকমিষ্টি স্বাদের মশলায় মেখে কাঁচা আমড়া খেতে পারেন। এছাড়া আমড়া দিয়ে সুস্বাদু চাটনি, আচার ও জেলি তৈরি করতে পারেন। আমাদের দেশে কাঁচা আমড়ার তরকারি খাওয়ারও প্রচলন রয়েছে।

আমড়া খাওয়ার উপকারিতা

দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমড়ায় রয়েছে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম, যা দাঁত ও মাড়ির ফুলে যাওয়া রোধ করে। এছাড়া দাঁতের গোড়া দিয়ে পুজ ও রক্তপড়া এবং দাঁতের ব্যাথা নিরাময়ে আমড়া বেশ কার্যকরি।

সংক্রমণ প্রতিহত করে : আমড়ায় থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজ উপাদান সর্দি-কাশি ও সাধারণ জ্বর থেকে রক্ষা করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আমড়ার জুড়ি মেলা ভার।

রুচি বৃদ্ধি করে : এই ফল খেলে মুখের রুচি বৃদ্ধি হয়। আমড়ার জলীয় অংশ ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও আয়রনে ভরপুর, যা রুচিবর্ধক হিসেবে ব্যাপক কার্যকরি।

রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে : আমড়ায় রয়েছে প্রচুর ক্যারোটিন, যা রক্ত চলাচলে সহায়তা করে। এছাড়া আমড়া রক্তের খারাপ টক্সিন ধ্বংস করে।

থুথু ও কফনাশক : অতিরিক্ত থুথু ও কফের কারণে অনেকেই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। কিন্তু নিয়মিত আমড়া খেলে এই সমস্যা দূর হয়।

হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় : আমড়া নিয়মিত খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। কারণ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক আঁশ। যা পরিপাকে সহায়তা করে।

কোষ্ঠাকাঠিন্য দূর করে : হজমশক্তি বৃদ্ধি পেলে মল নরম হয়। আর মল নরম হলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কাজেই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হলে নিয়মিত আমড়া খান।

পরামর্শ

যারা নিম্ন রক্তচাপ ও কিডনী রোগে ভুগছেন, তারা আমড়ার আচার, চাটনি ও তরকারি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পাশাপাশি সুস্থ থাকার জন্য পরিমিত আমড়া খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

 

এবি/এসএন

০৫ আগস্ট ২০২১, ০৫:৪৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।