• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

পুষ্টির সেরা কমলা বেল বেদানার জুস

পুষ্টির সেরা কমলা বেল বেদানার জুস

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

শীত বিদায় নিয়েছে। আসছে গ্রীষ্ম। ভ্যাপসা গরমে তৃষ্ণা মেটাতে জুস ও পানীয়ের বিকল্প নেই। মানুষ গরমে প্রশান্তি পেতে নানা রকম ফলের জুস খেয়ে থাকে। শরীর ভালো রাখতে ফলের জুসের জুড়ি মেলা ভার। পুষ্টি উপাদানে ভরপুর পাঁচটি ফলের জুস সম্পর্কে আপনিও জেনে নিতে পারেন।

জনপ্রিয় মার্কিন স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবজার্নাল হেলথ লাইন ও ওয়েব এমডিতে বিশে^র জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি ফলের জুস নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এই পর্বে আমরা পাঁচটি ফলের জুস সম্পর্কে তথ্য দিয়েছি।

কমলা

মার্কিন স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইনে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, কমলায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম কমলায় রয়েছে- ক্যালরি- ৪৭ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট- ১২ গ্রাম, প্রোটিন- ০.৭ গ্রাম, ফ্যাট- ০.৩ গ্রাম, খাদ্যআঁশ- ২ গ্রাম, ভিটামিন সি- ২৬ শতাংশ, ম্যাগনেসিয়াম- ২.৫ শতাংশ, পটাসিয়াম- ৩ শতাংশ, কপার- ৪ শতাংশ এবং আয়রন- ১ শতাংশ।

উপকারিতা

কমলার জুস ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর বায়োফ্যাভোনয়েড। কমলার জুস ক্যান্সারের সেল ধ্বংস করে। এটি স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকি কমে। এ ছাড়া কমলার রস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এটি হজমশক্তি, ত্বকের সতেজতা, দাঁত ও মাড়ির রোগ নিরাময়, রক্ত পরিষ্কার করে। পাশাপাশি কমলার জুস ওজন কমায়।

পেঁপেঁ

পুষ্টিগুণে ভরপুর পেঁপের রয়েছে নানা ধরণের ভেষজ ও ঔষধি গুণাগুণ। রোগ নিরাময়ে পাকা ও কাচা পেঁপের জুস অত্যন্ত উপকারী। পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপের জুসে রয়েছে- শর্করা- ৭.২ গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৩২ কিলোক্যালরি, ভিটামিন সি- ৫৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৬.০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম- ৬৯ মিলিগ্রাম, খনিজ- ০.৫ মিলিগ্রাম এবং ফ্যাট- ০.১ গ্রাম।

উপকারিতা

পুষ্টি গবেষকরা বলছেন, পেঁপের জুস ভেষজ ঔষুধ। পেঁপে রস হজমের জন্য খুবই উপকারি। পোকামাকড়ের কামড় ও অল্প মাত্রার পোড়া ও ক্ষত নিরাময়েও পেঁপে খুব কার্যকরী। অত্যাধুনিক কসমেটিকস সামগ্রী তৈরির অন্যতম কাঁচামাল পেঁপে। পেঁপেঁর জুস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি আথ্রারাইটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, ব্যথা ও ব্রণ দূর করে। পেঁপেঁর জুস দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।

বেলের জুস

গরমে প্রশান্তি পেতে বেলের শরবত সবার প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। বেলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম বেলের জুসে রয়েছে- খাদ্য শক্তি ৮৭ কিলোক্যালরি, শর্করা ১৮.৮ গ্রাম, আমিষ ২.৬ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৮ মিলিগ্রাম, আয়রণ ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.২ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন সি ৯ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

বেলের জুস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এতে থাকা ভেষজ উপাদান ডায়রিয়ার প্রকোপ কমায়। এ ছাড়া বেলে থাকা পেপটিক নামক উপাদান আলসার থেকে মুক্তি দেয়। এটি ডায়াবেটিস, যক্ষ্মা, জয়েন্টের ব্যথা দূর করে। বেলের জুস স্কার্ভি রোগ নিরাময় করে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। এ ছাড়া বেলের জুস লিভার সুস্থ রাখে এবং আমাশয় ও পেটের সমস্যা দূর করে।

বেদানা

ডালিম, আনার বা বেদানা একই জাতীয় ফল। এই ফলের জুস পৃথিবী বিখ্যাত। হিন্দী, ফার্সি ও পশতু ভাষায় বেদানাকে আনার বলা হয়। বেদানা অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ একটি ফল। প্রতি ১০০ গ্রাম বেদানার জুসে রয়েছে- ক্যালরি ৩৪৬ কিলোক্যালরি, শর্করা ১৮.৭ গ্রাম, গ্লুকোজ ১৩.৭ গ্রাম, আমিষ ১.৭ গ্রাম, চর্বি ১.২ গ্রাম, আঁশ ৪ গ্রাম, ভিটামিন বি৯ ৩৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন সি ১০ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ২৩৬ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম এবং জিঙ্ক ০.৩৫ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

বেদানার জুস সবচেয়ে কার্যকরী রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে। এটি আর্থ্রাইটিস দূর করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। বেদানার জুস স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে, রক্তশূন্যতা দূর করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এটি হজমশক্তি বাড়িয়ে হাড় ও মাড়ির সুরক্ষা দেয়।

বাতাবি লেবু

অন্যতম জনপ্রিয় একটি ফল বাতাবি লেবু। এই লেবুর জুস গরমে প্রশান্তি দেয়। আর কিছু দিন পরেই বাজারে বাতাবি লেবু পাওয়া যাবে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম বাতাবি লেবুর জুসে রয়েছে- খাদ্যশক্তি ৩৮ কিলোক্যালরি, প্রোটিন ০.৫ গ্রাম, স্নেহ ০.৩ গ্রাম, শর্করা ৮.৫ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ১ গ্রাম, থায়ামিন ০.০৩৪ মিলিগ্রাম, খনিজ লবণ ০.২০ গ্রাম এবং ভিটামিন সি- ১০৫ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

বাতাবি লেবুর জুস ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এতে থাকা বায়োফ্যাভোনয়েড উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এই জুস হজমশক্তি ও ত্বকের সতেজতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া এটি দাঁত ও মাড়ির রোগ নিরাময় করে। বাতাবি লেবুর জুস রক্ত পরিষ্কার রাখে। এটি ওজন কমাতে সহায়ক।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন ও ওয়েবএমডি।

১৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:১৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।