‘মানুষের মরণ আমাকে আঘাত করে না, করে মনুষ্যত্বের মরণ দেখিলে’
প্রতিকী ছবি
মানুষ মাত্রই মৃত্যু অবধারিত। প্রতিটি মানুষকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মানুষ একবারই মারা যায়। কিন্তু কলুষিত হৃদয়ের মানবিকতা বিবর্জিত মানুষের মৃত্যু বারবার হয়। যে মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব বা মানবিক গুণাবলীর উপস্থিতি কম, সে মানুষের বেঁচে থাকার কোনো স্বার্থকতা নেই।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন-‘মানুষের মরণ আমাকে আঘাত করে না, করে মনুষ্যত্বের মরণ দেখিলে।
কালজয়ী দেবদাস উপন্যাসের স্রষ্টা শরৎচন্দ্রের ভাষায়, মানুষের মৃত্যু খুবই সাভাবিক একটি নিয়তি। এটা মেনে নেয়ার মাঝেই আনন্দ। কিন্তু বেঁচে থেকে অমানবিক ও মনুষ্যত্ব বিবর্জিত কাজ করা ন্যাক্কারজনক।
তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, মনুষ্যত্বহীন কাজ করে বেঁচে থাকার চেয়ে মানুষের মৃত্যুই বেশি সুন্দর। এমনকি যে মানুষের মাঝে মনুষ্যত্বহীনতা ফুটে ওঠে, সেই মনুষ্যত্বহীনতাকে তিনি মৃত্যুর চেয়েও বিষাদময় বলে উল্লেখ করেছেন।
মানবতাবাদী এই সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারকের ভাষায়, মানুষের মনুষ্যত্ব যখন লোপ পায়, সমাজে তখন অনাচার বেড়ে যায়। হেন কাজ নেই, যা মনুষ্যত্বহীন মানুষ করতে দ্বিধা করে। সমাজের সকল অন্যায়, অনাচার ও নষ্টের মূলে রয়েছে মানুষের মনুষ্যত্ব বিবর্জিত বোধ। এই বোধ একজন জীবিত মানুষের অন্তরেও মৃত্যুর ছাঁয়া ডেকে আনে।