মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চান সেচ্ছাসেবক সাদি
শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা দারুণ এক সক্ষমতা। জিমন্যাস্টরা এই কাজটি ভালোই রপ্ত করতে পারেন। ছোটবেলা থেকে জিমন্যাস্টিকস না করে কঠোর পরিশ্রম আর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জিমন্যাস্টিকস কৌশলগুলো রপ্ত করেছেন সাজিদুল বাশার সাদি। তিনি টানা তিন বছর বাংলাদেশ ন্যাশনাল জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতায় প্রফেশনাল জিমন্যাস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
দৈনিক আমরাই বাংলাদেশ-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাজিদুল বাশার সাদি নিজের নানা কথা ব্যক্ত করেছেন। সাঁতার শেখা, কারাতে প্রশিক্ষণ ও থিয়েটারে কীভাবে তিনি যুক্ত হয়েছেন, সেসব নিয়েও কথা বলেছেন।
সাক্ষাৎকারে সাজিদুল বাশার সাদি বলেন, আমার বাবা চাইতেন আমি একাধারে ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সাঁতারু, সেচ্ছাসেবক, অভিনয় শিল্পী, চিত্রকর হবো। ছোট বেলা থেকেই আমাকে তিনি সেভাবে গড়ে তুলেছেন। গানের শিক্ষক ও কারাতে প্রশিক্ষক রেখেছিলেন বাবা। থিয়েটারের জন্য আমাকে নন্দননাট্যে ভর্তি করে দেয়া হয়।
জিমন্যাস্টিকসে আগ্রহ প্রসঙ্গে সাদি সাক্ষাৎকারে বলেন- ‘বাবা মারা যাওয়ার পর আম্মু আমাকে বললেন, এমন কিছু করো যেন, মানুষ তোমাকে মনে রাখে। আমি বলেছিলাম, ক্রিকেটার হবো। আম্মু বলেছিলেন সবচেয়ে কঠিন খেলা রপ্ত করো। আমি তখন থেকে জিমন্যাস্টিকস প্র্যাকটিস শুরু করি। এভাবেই জিমন্যাস্টিকস নিয়ে আমার পথচলা শুরু।’
ইউনিসেফের সেচ্ছাসেবক হওয়া প্রসঙ্গে সাজিদুল বাশার সাদি বলেন- ‘আব্বু মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর আম্মুও মারা যান। এরপর আমি চিন্তা করি, এমন কিছু করব যেন আমার মা-বাবার আত্মা শান্তি পায়। সেই ভাবনা থেকেই জনকল্যাণমূলক ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে সেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা শুরু করি। আমার বাবার অনুপ্রেরণা ও প্রচেষ্টায় আমি নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমার আম্মু আমাকে সব সময় সাহস জুগিয়েছেন। শহরে বসবাস করেও শুধু সাঁতার শেখানোর জন্য বাবা আমাকে গ্রামে নিয়ে যেতেন। খেলাধুলা, অ্যাক্টিং, ছবি আঁকা, থিয়েটার, সেচ্ছাসেবক হওয়ার মতো এতগুলো কাজ একসঙ্গে চালিয়ে নেয়া চ্যালেঞ্জিং।
সাদি বলেন- ‘ইউনিসেফের সেচ্ছাসেবক হিসেবে বর্তমানে আমি কাজ করে যাচ্ছি। এ ধরনের কাজ আমাকে মানসিক শান্তি দেয়। আমার আব্বু-আম্মু দুজনেই মারা গেছেন। আমি ভালো কাজ করার মাধ্যমে তাদের জন্য কিছু করতে চাই। এটাই আমার লক্ষ্য। দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকে আমি উচ্চতর পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর আমি যেন দেশে ফিরে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি, সেই প্রত্যাশা।