নারী ক্রিকেট লীগের শিরোপা সিলেটের
সিলেট ও বরিশাল বিভাগের সামনে ছিল শিরোপার হাতছানি। প্রয়োজন একটি জয়। দুই দলই নিজেদের ম্যাচে জিতেছে। তবে তাতে লাভ হয়নি নিগার সুলতানার বরিশালের। রান রেটে এগিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছে ফাহিমাদের সিলেট।
টি-টোয়েন্টি সংস্করণে মেয়েদের জাতীয় লিগের শেষ দিন শনিবার ঢাকাকে ২৩ রানে হারায় সিলেট। ১০৪ রানের পুঁজি নিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামিয়ে দেয় ৮১ রানে।
বরিশালের প্রয়োজন ছিল বড় জয়ের। কিন্তু দিনের অপর ম্যাচে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে তারা জিতেছে ৭ রানে। ১২৫ রানের লক্ষ্যে রংপুর সংগ্রহ করেছে ১১৭ রান।
টুর্নামেন্টে ৫টি করে জিতে সিলেট ও বরিশালের পয়েন্ট সমান ১০। কিন্তু সিলেটের রান রেট ০.৬২১ ও বরিশালের ০.৫৯৩। অল্পের জন্য শিরোপা না পাওয়ার হতাশায় পুড়তে হলো নিগারদের।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটারদের সম্মিলিত চেষ্টায় একশ ছাড়ানো পুঁজি গড়ে সিলেট। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ রানের ইনিংস খেলেন ইশমা তানজিম।
রান তাড়া করে ঢাকার হয়ে একাই লড়াই করেন ফারজানা হক। ইনিংস শুরু করতে নেমে তিনি করেন ৫২ রান। শেষ বলে আউট হওয়া ব্যাটারের ৬৩ বলের ইনিংসে ১ ছক্কার সঙ্গে চার ৫টি।
ঢাকার হয়ে দুই অঙ্কে যেতে পারেন আর কেবল সুমি আক্তার (১১)। তাদের পাঁচ ব্যাটারই আউট হন শূন্য রানে।
দারুণ বোলিংয়ে ১০ রানে ৩ উইকেট নেন লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন। ব্যাট হাতে করেন তিনি ৯ রান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে তারই হাতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট বিভাগ: ২০ ওভারে ১০৪/৪ (শামীমা ১৪, ইশমা ২৬, দিপা ১৮, ফাহিমা ৯, নাসিমা ১০*, মারুফা ১৯*; রিতু ৪-০-২০-০, হাসনাত ৪-০-১৬-০, পিংকি ২-০-১৩-০, রূপা আবেদীন ৩-০-১৫-০, রূপা রায় ২-০-১০-০, শানু ২-০-৯-১, তানজিলা ২-০-১৯-১)
ঢাকা বিভাগ: ২০ ওভারে ৮১/৯ (ফারজানা ৫২, লিপি ০, সুমি ১১, রিতু ০, তানজিলা ৫, হাসনাত ০, পিংকি ০, রূপা রয় ১, রূপা আবেদীন ০, শানু ১*; মারুফা ৪-০-১৫-১, লাবনি ৪-০-২২-০, অর্থি ৪-০-১৭-১, ইসমত ৪-০-১৩-২, ফাহিমা ৪-০-১০-৩)
ফল: সিলেট বিভাগ ২৩ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ফাহিমা খাতুন
হতাশ টিম বরিশাল
ব্যাট হাতে আরও একবার নিজেকে মেলে ধরলেন নিগার সুলতানা। দলকে বড় পুঁজি এনে দিতে তার সঙ্গে অবদান রাখলেন শারমিন আক্তার। রান তাড়ায় ব্যাটারদের মিলিত চেষ্টায় কাছে গিয়েও হেরে গেল রংপুর।
সিলেট একাডেমি মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন নিগার। বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কের ৪৩ বলের ইনিংস গড়া ১ ছক্কা ও চারটি চারে।
৪টি চারে ২৮ রান করেন শারমিন। শেষ দিকে ২ ছক্কায় ১১ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন দিপা বিশ্বাস।
দিপা পরে বল হাতেও নিজেকে মেলে ধরেন। ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
রংপুরের হয়ে ৫ চারে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন ওপেনার মুর্শিদা খাতুন। দুই অঙ্কের ঘরে যান আরও তিন জন। কিন্তু কেউই খেলতে পারেননি বড় ইনিংস।
বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয় দিনের প্রথম দুই ম্যাচ। রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের ম্যাচে মাঠে গড়ায়নি একটি বলও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল বিভাগ: ২০ ওভারে ১২৪/৭ (মিষ্টি ৮, শারমিন সুপ্তা ৯, নিগার ৪৯, শারমিন আক্তার ২৮, সুলতানা ০, রাবেয়া ০, মুর্শিদা ৩, দিশা ১৯*, ফাতেমা ১*; তৃষ্ণা ৪-০-২১-৪, সালমা ৪-০-২৬-০, তিথি ৪-০-৩২-২, সাবেকুন ৪-০-২৫-০, জেসি ৪-০-১৮-০)
রংপুর বিভাগ: ১৯.৫ ওভারে ১১৭ (মুর্শিদা ৩৬, সাথী ১৭, জেসি ০, সালমা ১৫, উন্নতি ৮, তাজিয়া ১৫, ইসমত ০, তিথি ৯, ফারজানা ৭, সাবেকুন ২, তৃষ্ণা ১*; ফোয়ারা ৪-০-২৫-০, সুলতানা ১-০-১০-০, দিশা ৪-০-১৬-৩, রাবেয়া ৪-০-১৯-৩, লিলি ৪-০-৩২-১, ফাতেমা ২.৫-০-১৫-২)
ফল: বরিশাল বিভাগ ৭ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: দিশা বিশ্বাস
প্লেয়ার অব দ্যা লীগ : নিগার সুলতানা জ্যোতি (২৭৮ রান ও ১১ ডিসমিসাল), অধিনায়ক, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দল ও বরিশাল বিভাগীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী : লিলি রানী বিশ^াস (৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট) , বরিশাল বিভাগীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক : ফারজানা হক পিংকি (৩১৬ রান), ঢাকা বিভাগীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
বেস্ট পারফর্মিং প্লেয়ার : মারুফা আক্তার (৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট, ইকোনমি ২.৭৬), সিলেট বিভাগীয় মহিলা ক্রিকেট দল।