• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের হার, ১-০ তে এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে

বাংলাদেশের হার, ১-০ তে এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে

স্পোর্টস প্রতিবেদক

জ্যেষ্ঠদের সরিয়ে তারুণ্যনির্ভর দল গঠন। পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার নানা চেষ্টা। এমনকি টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে বিশ্রামে পাঠিয়ে পঞ্চ-পাণ্ডবমুক্ত জাতীয় দল। তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে অন্তত একটি জয়ের আশা ছিল সবার। শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পেল না বাংলাদেশ।

 

নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বে জিম্বাবুয়ে সফরের প্রথম ম্যাচে ২০৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭ রানে হেরেছে টাইগাররা। তিন ম্যাচ টি-টেয়েন্টি সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।

 

শনিবার (৩০ জুলাই) হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় শুরু হয়েছে ম্যাচ। টস জিতে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জিম্বাবুয়ে। মাধেভেরে আর সিকান্দার রাজার ব্যাটে ভর করে ৩ উইকেটে বাংলাদেশ দলকে ২০৫ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।

 

২০৬ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে সমান তালে পাল্লা দিয়ে ছুটলেও বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৬ উইকেটে ১৮৮ রানে। শুরুতেই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার সাজঘরে ফিরেন। ৮ বলে ৪ রান করেন তিনি। সেই ধাক্কা কাটিয়ে লিটন দাস আর এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে ৬০ রান তোলে সফরকারীরা। তবে সপ্তম ওভারে উইলিয়ামসের বলে শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ দেন লিটন। কিন্তু উদযাপন করতে গিয়ে ফেলে দেন এনগ্রাভা।

 

লিটন না বুঝে হাঁটা দেন ড্রেসিংরুমের দিকে। এই সুযোগে উইকেট ভেঙে দেন উইলিয়ামস। নানা নাটকীয়তার পর আউট দেন টিভি আম্পায়ার। নিজের ভুলে রানআউটের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। ৬ চারে ১৯ বলে ৩২ রান করেন তিনি।

 

২৭ বল খেলে ২৬ রান করে আউট হন এনামুল হক বিজয়। পাঁচে নামা আফিফ হোসেন দ্রæত রান তুলতে গিয়ে ৮ বলে ১০ রানে সাজঘরে ফিরেন। শান্তকে সঙ্গ দিয়ে অধিনায়ক সোহানে সঙ্গে ২১ বলে ৪০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে আশার পথে রাখে। ইনিংসের ১৬তম ওভারে থামে শান্তর ব্যাট। ৩ চার, ১ ছয়ে ২৫ বলে করেন ৩৭ রান।

 

১৬ ওভারে ১৪৬ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশের তখন জয়ের জন্য ২৪ বলে প্রয়োজন ৬০ রান। সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ঝড় তোলেন সোহান। ১৯তম ওভারে ৩২ রান প্রয়োজন হলেও গুরুত্বপূর্ণ এই ওভারে রিচার্ড নারাভা চেপে ধরেন দুই ব্যাটসমেনকে। মোসাদ্দেক হোসেন ১০ বলে ১৩ রান করে ওভারের শেষ বলে ক্যাচ আউটের শিকার হন। শেষ ওভারে যোগ হয় আরও ১০ রান। অধিনায়ক সোহান ২৬ বলে অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংস খেলেন। ১টি চার ও ৪টি ছয়ে সাজানোর সোহানের এই ইনিংস পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র, জয়ের প্রান্তরে পৌঁছাতে পারেনি।

 

নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৮৮ রানে। এতে ১৭ রানের জয়ে সিরিজের এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।

এর আগে হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি জিম্বাবুয়ের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ওপেনার রেগিস চাকাভাকে ফেরান বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। মিডউইকেটে নাজমুল হোসেনের তালুবন্দি হন তিনি। ১১ বলে ৮ রান করেন চাকাভা।

 

পাওয়ার-প্লেতে ৪৩ রান তোলা স্বাগতিকরা সপ্তম ওভারে হারায় আরেক ওপেনার ক্রেইগ আরভিনকে। মোসাদ্দেকের কুইকার ডেলিভারিতে ব্যাকফুটে গিয়ে অন সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন ক্রেইগ আরভিন। কিন্তু বল ব্যাট মিস করে ভেঙে দেয় উইকেট। ১৮ বলে ২১ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে ওয়েসলে মাধেভেরে ও শন উইলিয়ামস ৩৭ বলে গড়েন ৫৬ রানের পার্টনারশিপ।

 

ব্যাট হাতে ঝড় তোলা উইলিয়ামসকে থামান মুস্তাফিজ। ৪ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ১৯ বলে ৩৩ রান করেন তিনি। ৯৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সিকান্দার রাজাকে নিয়ে ব্যাট চালিয়ে যান মধেভেরে। ৬ চারে ৩৭ বলে অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। সঙ্গে রাজা সমানে ব্যাট চালিয়ে যান। ৫ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় মাত্র ২৩ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

 

শেষ ওভারে ৪৬ বলে ৬৭ রান করে চোট নিয়ে মাঠ (রিটায়ার্ড) ছাড়েন মাধেভেরে। ২৬ বলে ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন রাজা। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকান এই অলরাউন্ডার। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে।

 

বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজুর রহমান ৫০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। আর তাসকিন ৪২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি।

 

জিম্বাবুয়ের হয়ে বোলিংয়ে লুকে জং ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট, রাজা ৩ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ১ উইকেট, মাসাকাদজা ২৩ রান দিয়ে ১ উইকেট এবং রিচার্ড ৪৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।

৩০ জুলাই ২০২২, ০৯:২৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।