• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিনের আলোচনায় ওবায়দুল কাদের

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সততা বিশ্বে বিরল

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সততা বিশ্বে বিরল

প্রধান অথিতির বক্তব্য দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘আশ্বিনের রোদ্দুর মাখা দুপুরে টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা জন্মেছিলেন বলেই দেশে আজ উন্নয়ন আর উন্নয়ন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ এদেশ আলোয় আলোকিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা ছিলেন বলেই দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের প্রতিটি ঘরে আজ পৌছে গেছে বিদ্যুৎ। দারিদ্র বিমোচনে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সততা আজ বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কাজেই জননেত্রী শেখ হাসিনার সততা থেকে নেতাকর্মীদের শিক্ষা নেয়া উচিত।’

কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। সোমবার সকালে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আগামীকাল মঙ্গলবার। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।  

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব ফরিদুন্নাহার লাইলী।

অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এবং এ দেশের গণমানুষের পক্ষ থেকে জানাই ৭৫তম জন্মদিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা। মধুমতির তীরে শ্যামল মায়ায় বেড়ে উঠেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। গ্রামীণ জীবনের সারল্য বঙ্গবন্ধুকন্যার জীবনে গভীর ভাবে রেখাপাত করেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার শৈশব কেটেছে বর্ষার কাদাপানিতে, শীতের মিষ্টি রোদ্দুরে, শিশিরের কণায় কণায়, লতায়পাতায় মিলেমিশে। তিনি আজ দেশ ও দেশের কোটি মানুষের আস্থার প্রতীক। তিনি ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল আগলে রেখেছেন পরম মমতায়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এনে দিয়েছেন স্বাধীন দেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের দিয়েছেন স্বনির্ভর সোনার বাংলাদেশ। জননেত্রী শেখ হাসিনার সফলতা আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়ে তিনি যে মানবতা দেখিয়েছেন, তা বিশ্বে বিরল। তিনিই মানবতার ‘মা’।

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের স্মৃতি স্মরণ করে আওয়ামী লীগের সম্পাদক বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্ট এ জাতির জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট দিন। এই দিন জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবনের কালো দিন। ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু ১৫ আগস্ট-ই নয়, এর পরেও বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে। অন্তত ২০ বার দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে। এখনো ষড়যন্ত্র তাঁর পিছু ছাড়েনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভয় পেয়ে থেমে থাকেননি। তিনি সব ভয়কে জয় করে দেশকে এগিয়ে নিতে দিন রাত কাজ করে চলেছেন। কিন্তু দেশ বিরোধী চক্র আজ দেশের উন্নয়ন দেখে না, দেশের অর্জন দেখে না। তারা দিনের আলোতেও রাতের অন্ধকার দেখে। তারা মেট্রোরেল দেখে না, এক্সপ্রেস হাইওয়ে দেখে না, তারা চার লেনের হাইওয়ে দেখে না, তারা শিক্ষায় উন্নয়ন দেখে না। বাংলাদেশের কৃষিতে আজ নিরব বিপ্লব ঘটে গেছে। খাদ্য ঘাটতির দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

ভ্যাকসিন নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে কম প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়নি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার করা হয়েছে। কিন্তু আজ আল্লাহর রহমতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আমরা ভালো ভাবেই সামাল দিয়েছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে আমরা করোনা মোকাবিলায় সফল হয়েছি।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিখেছেন, আপনারা অনেকেই নাকি আফসোস করেন। কিন্তু আপনারা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের দিকে তাকান। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ইতিহাস থেকে শিক্ষাগ্রহণ করুন। সততার রাজনীতির বিরল দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু পরিবার। ৭৫ এর পর বঙ্গবন্ধু পরিবার যখন নিঃস্ব, তখন শেখ হাসিনা সেই পরিবারের হাল ধরে আজ এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। সজিব ওয়াজেদ জয় আজ ডিজিটাল বিশ্বের অন্যতম এক ব্যক্তিত্ব। আজ দেশরত্ন শেখ হাসিনার দুই সন্তান এক একটি আদর্শে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা আজ জাতিসংঘের বিশেষ দূত। শেখ রেহানা এখনো লন্ডনে ট্রামে করে চলাফেরা করেন। কিন্তু তাঁর মেয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য। তারপরও তাদের পরিবারের মধ্যে সেরকম চালচলন নেই। তাঁরা সবসময় গণমানুষের সঙ্গে মিশে যান। বঙ্গবন্ধুর পরিবারে সবসময় মেধাবী প্রজন্ম তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তাদের সন্তানদের নিয়ে কোনো হাওয়া ভবন তৈরি করেননি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরা আজ শেখ হাসিনার সততা থেকে শিক্ষা নিন। টাকা পয়সার প্রতি তাঁর কোনো লোভ নেই। দেশের বহু গরিব মানুষ, অসুস্থ মানুষ শেখ হাসিনার টাকায় চলে। দেশের সেবায় তিনি সব সময় কাজ করে চলেছেন। ২৪ ঘণ্টার প্রতিটি মূহুর্ত তিনি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন।

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটা রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাওয়ার খোয়াব দেখছে সবসময়। তারা কথায় কথায় আন্দোলনের ডাক দিচ্ছে। তারা আন্দোলন করে সরকার হটানোর দিবাস্বপ্ন দেখছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা আবারও পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে। ১৩ বছর ধরে তারা বহু চেষ্টা করেছে, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে, ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে তারা বারবার মানুষকে প্রতিপক্ষ বানিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আবারও ডাক দিয়েছে। তারা গতবারও ঐক্য করেছিল। আমি বিএনপিকে বলতে চাই, আগামী নির্বাচনে আপনাদের লিডার কে? আমাদের লিডার শেখ হাসিনা। আপনারা শেখ হাসিনার মতো একজনকে দেখান। আপনাদের নেতা দণ্ডিত পলাতক এক ব্যক্তি। তাকে দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। মানুষ জানে বিএনপিকে ভোট দিয়ে লাভ নেই। আগামী নির্বাচনের আগে যেসব প্রকল্প উদ্বোধন হবে, তখন বিএনপি চোখে সরিষা ফুল দেখবে।

কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. মির্জা আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের আপ্যায়নের দায়িত্বে ছিলেন কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন।

 

এবি/এসএন

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:৫৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।