• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামী বিবেকানন্দ

স্বামী বিবেকানন্দ

ফিচার ডেস্ক

স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার প্রকৃত নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। বাংলা তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সবচেয়ে বিখ্যাত দার্শনিক তিনি। দার্শনিক ছাড়াও তিনি ছিলেন লেখক ও সঙ্গীতজ্ঞ মানুষও। তাঁর লেখা প্রত্যেকটা বই এর মধ্যে রয়েছে: পরিব্রাজক (১৯৯৯), প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য (১৯০৩), ভাববার কথা (১৯০৫), বর্তমান ভারত (১৯০৫), কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ, রাজযোগ ইত্যাদি।

১৮৬৩, ১২ জানুয়ারি: মকর সংক্রান্তি উৎসবের দিন উত্তর কলকাতার সিমলা অঞ্চলে ৩ নম্বর গৌরমোহন মুখোপাধ্যায় স্ট্রিটে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

১৮৭১: নরেন্দ্রনাথ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন। তার পরিবার সাময়িকভাবে রায়পুরে স্থানান্তরিত হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন।

১৮৭৯: দত্ত পরিবার আবার কলকাতায় ফিরে আসেন। নরেন্দ্রনাথ প্রেসিডেন্সি কলেজের (অধুনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা) প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনিই ছিলেন সেইবছর উক্ত পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ একমাত্র ছাত্র। তিনি প্রচুর বই পড়তেন। দর্শন, ধর্ম, ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, শিল্পকলা ও সাহিত্য বিষয়ে বই পড়ায় তার বিশেষ আগ্রহ ছিল।

১৮৬১: স্পেনসারের এডুকেশন বইটি তিনি বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন। পাশ্চাত্য দার্শনিকদের রচনাবলি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থ ও বাংলা সাহিত্য নিয়েও চর্চা করেন।

১৮৮১: তিনি চারুকলা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৮৮০: তিনি কেশবচন্দ্র সেনের নব বিধানের সদস্য হয়েছিলেন, যা রামকৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাৎের পর এবং খ্রিস্টান ধর্ম থেকে হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার পর সেন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

১৮৮৪: নরেন্দ্রনাথ ফ্রিম্যাসনারি লজের সদস্য হয়েছিলেন।

১৮৮১ - ১৮৮৪: তিনি সেনের ব্যান্ড অব হোপ-এ সক্রিয় ছিলেন, যা যুবসমাজকে ধূমপান এবং মদ্যপানে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিল।

১৮৮৪ নরেন্দ্রনাথের পিতা হঠাৎ মারা যান।

১৮৮৬, ১৬ আগস্ট: রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর নরেন্দ্র ও তাঁর ১২ জন শিষ্য কলকাতার উপকণ্ঠ বরাহনগরে একটি ‘মঠ’ প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে তাঁরা গুরুর নিকট থেকে শিক্ষালদ্ধ আধ্যাত্মিক সাধনা শুরু করেন। এশিয়াটিক সোসাইটি গ্রন্থাগার থেকে বই এনে তাঁরা সেখানে গভীরভাবে বৌদ্ধিকচর্চাও শুরু করেন।

১৮৮৬, ডিসেম্বর: নরেন্দ্রনাথের গুরুভ্রাতা বাবুরামের মা নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য সন্ন্যাসীদের আঁটপুর গ্রামে আমন্ত্রণ জানান। আঁটপুরেই বড়দিনের পূর্বসন্ধ্যায় নরেন্দ্রনাথ ও আটজন শিষ্য আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। নরেন্দ্রনাথ ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ নাম গ্রহণ করেন।

১৮৮৭: নরেন্দ্রনাথ বৈষ্ণব চরণ বসাকের সঙ্গে সঙ্গীতকল্পতরু নামে একটি সঙ্গীত-সংকলন সম্পাদনা করেন। নরেন্দ্রনাথ-ই এই বইটির অধিকাংশ গান সংকলন ও সম্পাদনা করেছিলেন।

১৮৮৮: বারাণসী থেকে তার যাত্রা শুরু করেন। বারাণসীতে তার সঙ্গে সাক্ষাত হয় বিশিষ্ট বাঙালি লেখক ভূদেব মুখোপাধ্যায় ও বিশিষ্ট সন্ত ত্রৈলঙ্গস্বামীর। এইখানেই বিশিষ্ট সংস্কৃত পণ্ডিত বাবু প্রেমদাস মিত্রের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে, যাঁর সঙ্গে পরবর্তীকালে একাধিক পত্রালাপে তিনি হিন্দু ধর্মশাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।

১৮৯০, জুলাই: গুরুভ্রাতা স্বামী অখণ্ডানন্দের সঙ্গে তিনি পুনরায় পরিব্রাজক সন্ন্যাসীরূপে দেশভ্রমণে বের হন। প্রথমে তিনি যান নৈনিতাল, আলমোড়া, শ্রীনগর, দেরাদুন, ঋষিকেশ, হরিদ্বার এবং হিমালয়ে।

১৮৯১, জানুয়ারি: অন্যান্য গুরুভ্রাতাদের ছেড়ে তিনি একাকী দিল্লির পথে অগ্রসর হন।

১৮৯২, জুন: তিনি খান্ডোয়া ও ইন্দোর ভ্রমণ করেন। কাথিয়াওয়াড়ে তিনি বিশ্বধর্ম মহাসভার কথা শোনেন।

১৮৯২: বড়োদিনের প্রাক্কালে পায়ে হেঁটে কন্যাকুমারী পৌঁছান। স্বামীজি "ভারতীয় পাহাড়ের শেষ প্রান্তে" তিন দিন ধরে ধ্যান করেন যা পরে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল হিসেবে খ্যাতি লাভ করে।

১৮৯৩: শিকাগো যাবার পথে বিবেকানন্দ জাপান ভ্রমণ করেন।

১৮৯৩, জুলাই: চীন, কানাডা হয়ে তিনি আমেরিকার শিকাগো পৌঁছান।

১৮৯৩, ১১ সেপ্টেম্বর: প্রথম বিশ্বধর্ম মহাসভা শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউটে উদ্বোধন হয়। এদিন বিবেকানন্দ তার প্রথম সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন।

১৮৯৩, সেপ্টেম্বরে: শিকাগো আর্ট ইনস্টিটিউটে ধর্মসভা শেষ হওয়ার পর বিবেকানন্দ পুরো দু-বছর পূর্ব ও কেন্দ্রীয় যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ করে শিকাগো, ডেট্রয়েট, বোস্টন এবং নিউইয়র্কে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

১৮৯৪: তিনি নিউইয়র্কে বেদান্ত সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।

১৮৯৫: বসন্তকালের মধ্যে তার অব্যাহত প্রচেষ্টার কারণে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং তার স্বাস্থ্য হয়ে পড়ে দুর্বল। তার বক্তৃতাদান সফর স্থগিত করার পর স্বামীজি বেদান্ত ও যোগের উপর বিনামূল্যে ব্যক্তি পর্যায়ে শিক্ষা দেওয়া শুরু করেন।

১৮৯৫, জুন: দুই মাসব্যাপী তিনি থাউজ্যান্ড আইল্যান্ড পার্কে তার এক ডজন শিষ্যকে ব্যক্তি পর্যায়ে শিক্ষা দেয়ার জন্য ভাষণ দেন। বিবেকানন্দ এটিকে আমেরিকায় তার প্রথম ভ্রমণের সবচেয়ে সুখী অংশ বলে বিবেচনা করতেন।

১৮৯৫ - ১৮৯৬: তিনি দু-বার ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেন এবং সেখানে তার বক্তৃতাসমূহ সফল ছিল। এখানে তিনি সাক্ষাৎ পান এক আইরিশ মহিলা মিস মার্গারেট নোবলের। যিনি পরে ভগিনী নিবেদিতা নামে পরিচিত হন।

১৮৯৭, ১ মে: কলকাতায় বিবেকানন্দ ধর্ম প্রচারের জন্য সংগঠন ‘রামকৃষ্ণ মঠ’ এবং সামাজিক কাজের জন্য সংগঠন ‘রামকৃষ্ণ মিশন’ প্রতিষ্ঠা করেন।

১৮৯৯, জুন: পাশ্চাত্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তার সঙ্গী ছিলেন ভগিনী নিবেদিতা এবং স্বামী তুরিয়ানন্দ। তিনি স্বল্প সময় ইংল্যান্ডে অবস্থান করার পর যুক্তরাষ্টে যান।

১৯০২, ৪ জুলাই: ওইদিন রাত নয়টার দিকে ধ্যানরত অবস্থায় বিবেকানন্দ মৃত্যু বরণ করেন। তার শিষ্যদের মতে, বিবেকানন্দের মহাসমাধি ঘটেছিল।

 

তথ্যসুত্র: উইকিপিডিয়া

এবি/এসজে

 

 

০৮ আগস্ট ২০২১, ১২:৩২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।