• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

খাল খননে বদলে গেল গ্রামের চিত্র

খাল খননে বদলে গেল গ্রামের চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী

পলিমাটি ও আবর্জনায় ভরা খাল ফিরে পেয়েছে পুরনো রূপ। ঝোঁপঝাঁড় ও লতাপাতায় আটকে যাওয়া খাল এখন প্রশস্ত স্রোতে ভরপুর। বহুদিন পর মৃতপ্রায় খালে জোয়ার-ভাটার পানির দেখা মিলছে। ফলে বহুদিনের পড়ে থাকা অনাবাদি জমি আবারও চাষাবাদের আওতায় এসেছে।

পরিত্যক্ত সংকীর্ণ খালের এমন রূপ দেখে স্থানীয়রা বেজায় খুশি। কৃষকের মুখেও ফুটেছে প্রশান্তির হাসি। খালের ভেঙে যাওয়া পাড় আবারও প্রশস্ত হয়েছে। দুধারে লাগানো হয়েছে গাছ। খাল দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ছলছল জল।

এমনই চিত্র নোয়াখালীর হাতিয়ায়। গত দুই বছরে হাতিয়ায় ৯টি খালের প্রায় ৩০ কিলোমিটার খনন করা হয়। ফলে বদলে গেছে খালগুলোর চিত্র। কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে এসব খাল খনন করা হয়। এতে খালের পাড়ের পাশের অনেক অনাবাদি জমিতে এখন আবাদ হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, গ্রামের মাঝখানে অবস্থিত বুড়ির দোনা শাখা খালটি। এটি আনুমানিক ৪৫ বছর আগে একবার খনন করা হয়েছিল। খালটি পলি জমে জমে নালায় পরিণত হয়। বড় খালগুলো অনেক দূরে হওয়ায় এই খাল দিয়ে জোয়ার-ভাটার পানি চলাচল করতে পারত না। এতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে খালের দুই পাশে শত শত একর জমি অনাবাদি থেকে যেত। বর্ষায় গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো ডুবে থাকত পানিতে।

একই চিত্র চরকিং ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের। গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোজাহার উদ্দিন জানান, বোয়ালিয়া গ্রামে অধিকাংশ রাস্তা কাঁচা। এখানে বেশির ভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। নদী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে গ্রামটি। একমাত্র খালের সংস্কার না হওয়ায় এতদিন জোয়ার-ভাটার পানি চলাচল করতে পারত না।

তিনি বলেন, খালের দুই পাড়ের পাশের জমিগুলো অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা লেগেই থাকত। খুবই উর্বর এই জমিতে রবিশস্যের ভালো ফলন হতো। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় অনাবৃষ্টিতে ক্ষতির মধ্যে পড়তে হতো কৃষকদের। এসব এলাকার কৃষকেরা নিজেদের জমি বিক্রি করতে চাইলেও ভালো মূল্য পেতেন না।

হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, হাতিয়ায় অনেকগুলো খাল খনন করা হয়েছে। এসব খাল খননে স্থানীয় কৃষক চাষাবাদের ক্ষেত্রে উপকৃত হচ্ছেন। তবে চরঈশ্বর, জাহাজমারা ও নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের আরও কিছু খাল দ্রুত সময়ের মধ্যে খনন করা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (ক্ষুদ্র সেচ) নোয়াখালী জেলার সহকারী প্রকৌশলী মো. জুয়েল হোসেন বলেন, হাতিয়াতে গত দুই বছরে আমরা প্রায় ৩০ কিলোমিটার খাল খনন ও পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন করেছি। এতে প্রায় ৬০ কিলোমিটার মাটির রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। হাতিয়া উপজেলায় ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। উপজেলার জন্য আরও একটি প্রকল্পের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আছে।

০১ মার্চ ২০২২, ০৭:১৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।