• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
চূড়ান্ত আদেশ বুধবার

ইভ্যালি পরিচালনায় বোর্ড গঠন করবেন হাইকোর্ট

ইভ্যালি পরিচালনায় বোর্ড গঠন করবেন হাইকোর্ট

প্রতিকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনা ও দায়-দেনা পরিশোধে একটি বোর্ড গঠন করবেন হাইকোর্ট। ওই বোর্ড ইভ্যালির সকল কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবে। হাইকোর্টের গঠন করে দেয়া বোর্ডে দায়িত্ব পালন করবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, একজন সচিব ও একজন চার্টার্ড একাউনটেন্ট। আগামীকাল বুধবার এ বিষয়ে আদেশ দিবেন হাইকোর্ট। এদিকে ইভ্যালি নিয়ে উচ্চ আদালতের এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লাখ লাখ গ্রাহক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিশ্চয়তা দূর হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মঙ্গলবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান। এর আগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনায় বোর্ড গঠনের পক্ষে রিট আবেদন করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন।

এসব বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন বলেন, আদালত যে কমিটি গঠন করে দেবেন, তাদের কাজ হবে ইভ্যালির দায়-দেনা নিরূপণ করা এবং প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কর্মকাণ্ড মনিটরিং করা।

এদিকে মঙ্গলবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এন এম মাসুম ও ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। শুনানিতে ব্যাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অংশ নেন আইনজীবী তাপস বল।

জানা গেছে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সব নথি এরই মধ্যে হাইকোর্টে জমা দেয়া হয়েছে। গত সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে এসব নথি দাখিল করেন জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই নির্দেশনায় জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রারকে আদালতে ইভ্যালির সব নথি দাখিল করতে বলা হয়।

পরে ইভ্যালির সম্পত্তিতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ থাকায় তারই ধারাবাহিকতায় বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার প্রতিষ্ঠানটির মনিটরিংয়ের জন্য বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

এছাড়া গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চান সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিবাদীদের জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়ে নোটিশও জারি করেন হাইকোর্ট।

এদিকে রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানিয়েছেন, ফরহাদ হোসেন নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক সেপ্টেম্বর মাসে ইভ্যালিতে একটি ইলেকট্রনিক পণ্য অর্ডার করেন। অর্ডারের সময়ই পণ্যের সম্পূর্ণ মূল্য তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। বিনিময়ে ইভ্যালি তাকে একটি রশিদ প্রদান করে। পণ্যটি অর্ডার করার পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ফরহাদ হোসেন তার পণ্যটি হাতে পাননি। এ বিষয়ে তিনি ইভ্যালি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলে তারা পণ্যটি দেয়ার আশ^াস দেয়। পরে আর কিছুদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও পণ্যটি না পেয়ে এবং রিফান্ড না পাওয়ায় ফরহাদ হোসেন আদালতে অভিযোগ করেন। তিনি ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।

পরে ফরহাদ হোসেনের আবেদনটি আদালত গ্রহণ করে ইভ্যালির সকল সম্পদ বিক্রি অথবা হস্তান্তরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এব্যাপারে আদালত একটি নোটিশও ইস্যু করেছিলেন।

আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে, ফরহাদ হোসেনের ওই আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস- এর রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজ্যুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।

 

এবি/এসএন

১২ অক্টোবর ২০২১, ০৩:৩৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।