• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
বিশ্বব্যাংকের ষান্মাষিক রিপোর্ট

করোনার ধাক্কা সামলেও বাড়বে বাংলাদেশের জিডিপি

করোনার ধাক্কা সামলেও বাড়বে বাংলাদেশের জিডিপি

প্রতিকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারি করোনার ধাক্কা সামলেও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। করোনার দুর্যোগের মাঝেও রপ্তানি এবং ভোগ ব্যয় বাড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের ষান্মাষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে হয়েছে ৫ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে তা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ হওয়ার কথা।

‘শিফটিং গিয়ার্স: ডিজিটাইজেশন অ্যান্ড সার্ভিস লেড ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এবারের প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের বর্তমান গতি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। বিশ্বে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেড়েছে। সেই সঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ ঢেউয়ের বিস্তার ব্যাপক না হওয়ায় এলাকাভিত্তিক বিধিনিষেধ আরোপ তেমন দেখা যায়নি। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনার প্রভাবে পিছিয়ে পড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত উন্নতির দিকে গেলেও তার গতি সব দেশে সমান বা টেকসই নয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গতি টেকসই ও সব দেশে সমান হার নিশ্চিত করতে এখনো সময় লাগবে। খুব দ্রুতই  এটি বাস্তবায়ন হবে না।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রকাশিত প্রাক্কলন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ ভারতের অর্থনীতি ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনার প্রভাবে সঙ্কুচিত হয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। মহামারির মধ্যে মালদ্বীপেও বড় ধরনের অর্থনৈতিক পতন দেখা গেছে। গত বছর দ্বীপ রাষ্ট্রটির অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছিল ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ। পর্যটন নির্ভর অর্থনীতির দেশ হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাকালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে পিছিয়ে গেছে মালদ্বীপ।

সার্বিক ভাবে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিও অনেকটা ধীর। বিশেষ করে ভুটান চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, নেপাল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পাকিস্তান ৩ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে।

এসব বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টভিগ শেফার বলেছেন, মহামারি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে, তবে এক্ষেত্রে সফলতা নির্ভর করছে টিকাদানের ওপর। করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের আবির্ভাব হলে সেই ধাক্কা সামাল দিতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে।

জানা গেছে, করোনা মহামারির ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে গিয়ে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। যা দেশটির প্রবৃদ্ধির রেকর্ডের হিসেব গতা তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম।

সরকার গত অর্থবছরের বাজেটে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও করোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় তা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

এবি/এসএন

০৭ অক্টোবর ২০২১, ০৩:৩২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।