• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
বিসিএস নবীন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সমাপনী

জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনগণের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে মাঠ প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আইন ও প্রশাসন কোর্স থেকে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সময়োপযোগী উন্নয়নমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত থাকতে হবে। মানুষ যাতে ন্যায় বিচার পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

বুধবার বিসিএস প্রশাসন একাডেমির ১১৯ এবং ১২০তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী ও সনদ বিরতণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার ভার্চুয়াল কোর্ট চালু রেখেছিল। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষকে আইনের সেবা দেয়া সম্ভব। এছাড়া বিচার ব্যবস্থাও অব্যাহত রাখা যাবে। সরকার চেষ্টা করছে, কেউ যেন বিচার চাইতে গিয়ে ভুক্তভোগী না হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর যাতে খুনিদের বিচার না হয়, সেজন্য ইনডেমনিটি (অর্ডিন্যান্স জারি) দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ বিচারের হাত থেকে খুনিদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছিল। ১৫ আগস্টে স্বজন হারানোর পরও আমাদের সেদিন মামলা করা বা বিচার পাওয়ার অধিকার ছিল না।

৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ইনডেমনিটি বাতিল করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দেশের বিচার ব্যবস্থায় মানুষের আস্থা ফিরেছে। জাতির পিতার খুনিদের বিচার করা হয়েছে।

জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে দিয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, সেনা শাসক জিয়াউর রহমান কারাবন্দি যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কলঙ্কের দাগ লাগিয়েছিল। এটি দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আমরা সরকার গঠন করার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছি। চিহ্নিত অপরাধীদের বিচার হয়েছে, শাস্তি হয়েছে।

বিচারের বাণী যেন আর নিভৃতে না কাঁদে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ যাতে ন্যায় বিচার পায়, মানুষ যেন প্রশাসনের কাছে সেবা পায় আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। তবে সরকারের এই লক্ষ্য পূরণে মাঠ প্রশাসনকে সক্রিয় হতে হবে। সাধারণ মানুষের পাশে মাঠ প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তাদের দাঁড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবেন। কারণ, আজকে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, এই বিশ্বায়নের যুগে আমাদেরকেও এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের বিশে^র সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমি আশা করি আপনারা আপনাদের প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান, মেধা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সম্মিলিতভাবে দেশের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির রেক্টর মোমিনুর রশিদ আমিন।

এছাড়া ১১৯ এবং ১২০তম ব্যাচের শীর্ষ স্থান অর্জনকারি এবং রেক্টর পদকপ্রাপ্ত স্বীকৃতি প্রামাণিক ও উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ এবং মেধা তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকারকারীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। পরে বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির কর্মকান্ডের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও চিত্র উপভোগ করেন।

 

এবি/এসএন

০৬ অক্টোবর ২০২১, ০৩:১৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।