• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
মাস্টারমাইন্ড জাবেদের যাবজ্জীবন

আদালত চত্বরে বোমা হামলা: পলাতক মিজানের মৃত্যুদণ্ড

আদালত চত্বরে বোমা হামলা: পলাতক মিজানের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের আদালত ভবনের পুলিশ চেকপোস্টে আত্মঘাতী বোমা হামলার মামলায় পলাতক আসামি জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর আসামি ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জমিয়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক কমান্ডার জাবেদ ইকবালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে বিচারিক কার্যক্রম শেষে রবিবার চট্টগ্রাম সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুল হালিম রায় প্রদান করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. ইউনুস গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশ চেকপোস্টে বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি জাবেদ ইকবালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মামলা শীর্ষ আসামি জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মো. ইউনুস।

আসামি পক্ষের এই আইনজীবী বলেন, আমরা সন্তুষ্ট নই। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।

এদিকে মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আদালতে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। প্রধান পলাতক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া গ্রেপ্তার আসামি জাবেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আইনজীবী আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, জাবেদের পরিকল্পনায় আদালত ভবনের পুলিশ চেকপোস্টে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজান। জাবেদ এ ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ন্যাক্কারজনক ওই হামলায় দুইজন নিহত হন। আহত হয়েছিলেন অনেকে।

জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের পুলিশ চেকপোস্টের সামনে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশ কনস্টেবল রাজীব বড়ুয়া ও ফুটবলার শাহাবুদ্দীন। হামলায় আহত হন পুলিশ কনস্টেবল আবু রায়হান, সামসুল কবির, রফিকুর ইসলাম ও আবদুল মজিদসহ অন্তত ১০ জন।

চাঞ্চল্যকর ওই হামলার ঘটনায় পরে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। মামলার শীর্ষ আসামি বোমা মিজান ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। এছাড়া দ্বিতীয় আসামিক জাবেদ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। মামলার রায় ঘোষণার সময় আসামি জাবেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রবিবার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বোমা হামলায় নিহতের ঘটনায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এরপর ২০০৬ সালের ১৮ মে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ও বোমা তৈরির কারিগর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্ত চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক পরিদর্শক হ্লা চিং প্রু।

পরে ২০০৬ সালের ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে অন্য একটি মামলায় জেএমবির সাবেক প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই এবং জেএমবির সাবেক সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানির ফাঁসির আদেশ কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে এই মামলার অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হলে মামলাটি ওই ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

 

এবি/এসএন

০৩ অক্টোবর ২০২১, ০৩:০৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।