• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
‘আরবান রেজিলেন্স প্রজেক্ট’

ঢাকা উত্তর সিটির দুর্যোগ মোকাবিলা প্রকল্পে খরচ বাড়ল

ঢাকা উত্তর সিটির দুর্যোগ মোকাবিলা প্রকল্পে খরচ বাড়ল

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্যোগ মোকাবিলায় ঢাকা সিটি ও সিলেটে চলমান ‘আরবান রেজিলেন্স প্রজেক্ট’-এর অধীন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশেনের দ্বিতীয় অংশের প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক দফা বাড়ানো হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৬৬ কোটি টাকা। চলমান এই প্রকল্প শুরু হয় ২০১৫ সালে, মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের জুন মাসে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পটির মেয়াদ না বাড়ালে কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বেড়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এ সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় গত একনেক সভায় এর প্রথম সংশোধনী আনা হয়।

এদিকে পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৪৬ কোটি টাকা। প্রথম সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ৮১২ কোটি ২২ লাখ টাকা করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং বাকি ৭৯৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা থেকে সংস্থান করা হবে।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে একনেক সভায় বলা হয়েছে, ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার ও ডিএমআর নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য ১৮টি গ্রিনফিল্ড টাওয়ারের নির্মাণকাজ সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (আরডিপিপি) নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ইকুইপমেন্ট ও আইসিটি ইকুইপমেন্ট আমদানির জন্য সিডি/ভ্যাট প্রদান, জিআইএস অঙ্গ সার্ভিস খাতে স্থানান্তর, বিটিআরসি থেকে ফ্রিকোয়েন্সি ক্রয়, নতুন ইকোনমিক কোড ব্যবহার, বাস্তবতার নিরিখে জনবলের বেতন-ভাতা, অনিয়মিত শ্রমিক, আইসিটি ইকুইপমেন্ট, ফার্নিচার, বিজ্ঞাপন, ইন্টারনেট/ফ্যাক্স, পরামর্শক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এছাড়া সংশোধনীতে সেমিনার/কনফারেন্স ব্যয়, বিদ্যুৎ, পানি, ডাক, টেলিফোন বিল, বই/জার্নাল, অফিস ভাড়া, প্রশিক্ষণ, ভ্রমণ ব্যয়, গ্যাস/ফুয়েল, স্টেশনারি/সিলসহ বিবিধখাতে ব্যয় কমানো হয়েছে।

সংশোধনীতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ঢাকা ও সিলেট শহরে দুর্যোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের সক্ষমতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা শহরে দুটি ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার এবং ১০টি জোন অফিসে স্যাটেলাইট কন্ট্রোল সেন্ট্রাল রুম প্রতিষ্ঠা করা হবে।

এছাড়া সিলেট শহরে একটি ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার নির্মাণ, ঢাকা-সিলেট শহরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য ফিক্সড মোবাইল ইমারজেন্সি কমান্ড ও কন্ট্রোল রুম, আইসিটি, লাইফ সেভিং ইকুইপমেন্ট, ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যাসেট রাখার জন্য ওয়ার হাউজেজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

জানা গেছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ‘স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন কৌশলে’ সিটি করপোরেশনের জন্য যেসব উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে প্রধান হলো- মানবসম্পদ উন্নয়ন নিয়মিতকরণ, বিনিয়োগ-সহায়ক টেকসই নগর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা। এর মাধ্যমে সড়ক সংযোগ, অবকাঠামো নির্মাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সিটি করপোরেশনগুলোর সাংগঠনিক দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনা উন্নতীকরণ।

প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে ডিএমআর নেটওয়ার্ক স্থাপন, ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সেটআপসহ অপারেটিং সেন্টার ও ওয়ার হাউজ নির্মাণের মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে এবং ঢাকা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মামুন-আল-রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ইমারজেন্সি অপারেটিং সেন্টার এবং ১০টি জোন অফিস (স্যাটেলাইট কন্ট্রোল রুম) চালু হবে। ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নতুন যুগে প্রবেশ করবে ঢাকা সিটি ও সিলেট। প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে।

 

এবি/এসএন

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:৫৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।