• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাক মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

ট্রাক মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রাকচালক ও মালিকপক্ষের ১৫ দফা দাবিতে আহুত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। ফলে বন্দরে কন্টেইনার জট সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি বুধবার প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর এ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।

এর আগে গত শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কদমতলীতে আন্তঃজেলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৭২ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দেয়া হয়।

জানা গেছে, ১৫ দফা দাবিতে কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক সমিতি ও ট্রাকচালকদের কর্মবিরতিতে স্থবির হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম বন্দর। সেই সঙ্গে সারাদেশে পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক গমনাগমন বন্ধ হয়ে যায়।

বুধবার বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজি উল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের পর আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি।

জানা গেছে, বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহনকারী মালিক-শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের ১৮ জন নেতা। বিকাল পৌনে ৩টায় বৈঠক শেষ হয়।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, পণ্য পরিবহনে কর্মবিরতির কারণে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি বন্ধ হয়ে গেছে। বন্দরের অভ্যন্তরে জাহাজ থেকে মালামাল খালাস অব্যাহত থাকলেও তা সারাদেশে সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে বন্দরে কন্টেইনার জট সৃষ্টি হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বন্দরে পণ্য ডেলিভারি বন্ধ থাকায় ডিপোতে কনটেইনার যাওয়া ও ডিপো থেকে রপ্তানি কনটেইনার আসা বন্ধ রয়েছে। কর্মবিরতি চলতে থাকলে সংকট বাড়বে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।

বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের ১৫ দফা দাবিগুলো হল- মোটরযান মালিকদের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর বা বর্ধিত আয়কর অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, এরই মধ্যে আদায় করা বর্ধিত কর স্ব স্ব মালিককে ফেরত দিতে হবে, পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যসহ সড়কে সবধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

অন্যান্য দাবিগুলো হল, গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করতে হবে, যেসব চালক ভারী মোটরযান চালাচ্ছেন তাদের সহজ শর্তে এবং সরকারি ফি-র বিনিময়ে অবিলম্বে ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে, সব শ্রেণির মোটরযানে নিয়োজিত সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মতো রেশনিং সুবিধার আওতায় আনতে হবে, চট্টগ্রামে অবস্থিত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মনোনীত প্রতিনিধি এবং সব ড্রাইভার ও সহকারিকে চট্টগ্রাম বন্দরে হয়রানিমুক্ত প্রবেশের সুবিধা সম্বলিত নবায়নযোগ্য বায়োমেট্রিক স্মার্টকার্ড দিতে হবে, প্রতি ৫০ কিলোমিটার পরপর পণ্যপরিবহন শ্রমিকদের জন্য দেশের সড়ক-মহাসড়কের নিরাপদ দূরত্বে বিশ্রামাগার ও কার্ভাডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে।

দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, সারাদেশের জন্য একই পরিমাণ ওজন নির্ধারণ করে অতিরিক্ত (ওভারলোড) পণ্যপরিবহন বন্ধে লোডিং পয়েন্ট তথা পণ্যপরিবহনের উৎসস্থলে সরকার নির্ধারিত ওজন নিশ্চিত করে পণ্যবাহী গাড়িগুলোতে মালামাল লোড করতে হবে এবং লোড করা গাড়িগুলোকে উৎসস্থলে পণ্যের ওজন স্লিপ দিতে হবে।

 

এবি/এসএন

২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:১৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।