• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা, কঠোর হচ্ছে প্রশাসন

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা, কঠোর হচ্ছে প্রশাসন

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইভ্যালি ও ইঅরেঞ্জের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা বাজার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে পণ্য দেয়ার কথা বলে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ডিএমপির এ মুখপাত্র আরও বলেন, ই-কমার্সের নামে এসব প্রতিষ্ঠান মূলত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কাজ করে যাচ্ছে। প্রতারণাকারী কোনো প্রতিষ্ঠানকে আর কোনো সুযোগ দেয়া হবে না।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা চাই দেশে সুন্দর ও আস্থা রাখার মতো ই-কমার্স প্লাটফর্ম তৈরি হোক। কেউ যাতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে প্রতারিত না হয়, সে জন্য কাজ শুরু হয়েছে। সবাইকে নিয়মের মধ্যে থেকে কাজ করতে হবে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার দেশের শীর্ষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সিইও রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর ওই দিন বিকেলেই রাসেল ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের দুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

জানা গেছে, ইভ্যালির বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ৪৪ লাখেরও বেশি। শিশু পণ্য দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও শেষমেষ নামকাওয়াস্তে পুঁজি নিয়ে ই-কমার্স ব্যবসায় নামে রাসেল। প্রতিষ্ঠা করেন ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালকের পদে বসে রাসেল তার স্ত্রীকে কোম্পানীর চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে রাসেল-শামীমা দম্পতি হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। এরই মধ্যে তারা নামে বেনামে ঢাকার সাভারসহ বিভিন্ন এলাকায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

গত ৪ মাসে ইভ্যালিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা আটকে দিলেও মো. রাসেল ও তার স্ত্রী মাসে ১০ লাখ টাকা করে বেতন ভাতা নিয়েছেন। যার পুরো অর্থ এসেছে ইভ্যালি কোম্পানীর তহবিল থেকে। এছাড়া রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিলাসবহুল ফ্লাটে বসবাসের পাশাপাশি দামী ব্রান্ডের দুটি গাড়ি কিনেছেন। এই গাড়ি ক্রয়ের টাকার উৎসও ইভ্যালির তহবিল।

অন্যদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিকপক্ষ প্রতারণামূলকভাবে গ্রাহকের প্রায় ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এরই মধ্যে ই-অরেঞ্জের মালিকপক্ষের নামে একাধিক মামলা হয়েছে। মামলায় ই-অরেঞ্জের মূল মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, অপর মালিক বীথি আক্তার, কোম্পানীর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা আমানউল্লাহ চৌধুরী প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ তিন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি আসামিরা পলাতক। এছাড়া ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজধানীর বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

 

এবি/এসএন

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৩০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।