• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে করোনার অ্যান্টিবডি

দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে করোনার অ্যান্টিবডি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণের পর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। দেশের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর’বি) ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান ও ড. ফেরদৌসী কাদরী এ কথা বলেছেন। এশিয়ার নোবেল খ্যাত র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার-২০২১ জয় করেছেন এই কৃতী বিজ্ঞানী।

র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার জয় উপলক্ষে শুক্রবার আয়োাজিত ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশে এখন করোনা সংক্রমণ কমে এসেছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরই তা কমে গিয়েছে। আমাদের দেশে সংক্রমণ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে কোভিড-১৯ ভাইরাস মোকাবিলায় সক্ষম অ্যান্টিবডি এখন অ্যাকটিভ রয়েছে।

বরেণ্য এই চিকিৎসা বিজ্ঞানী বলেন, সংক্রমণ কমে এলেও আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। নিয়মিত হাত ধোয়া ও মাস্ক পরতে হবে। সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার বিকল্প নেই। পাশাপাশি টিকাদান কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখতে হবে।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট এশিয়ার নোবেল খ্যাত ‘র‌্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশন’-এর বোর্ড অব ট্রাস্টি ২০২১ সালের জন্য বিজ্ঞানী ফেরদৌসী কাদরীকে বিজয়ী ঘোষণা করে। ডা. ফেরদৌসী কাদরীর পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখায় পাকিস্তানের বৃহৎ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মদ আমজাদ সাকিবকে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাস্তুচ্যু শরণার্থীদের জীবন পুনর্গঠনে কাজ করার স্বীকৃতি স্বরূপ র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছেন স্টিভেন মুনচি।

জানা গেছে, কলেরা টিকা আবিষ্কারে সহায়ক ভূমিকা পালন করায় বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি মেডিকেল গবেষণার মধ্যদিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। আর তাই ১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর,বি) যোগদান করেন তিনি। বর্তমানে আইসিডিডিআর,বির ইমিউনোলোজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন ফেরদৌসী কাদরী।

এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করা কলেরা এবং টাইফয়েডের বিরুদ্ধে বার বার কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন ড. কাদরী। এক পর্যায়ে কলেরা নির্মূলে তিনি স্বল্প মূল্যে ভ্যাকসিন (ওসিডি) আবিষ্কার করেন। এই ট্যাবলেট মুখে খাওয়া যায় এবং এটি টাইফয়েডের ভ্যাকসিন হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

ড. ফেরদৌসী কাদরী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) টিকাবিষয়ক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফের তত্ত্বাবধানে তিনি গণ ওসিডি টিকাদান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন। আর এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরেই র‌্যামন ম্যাগসেসে বোর্ড অব ট্রাস্টির নজরে আসেন তিনি। র‌্যামন ম্যাগসেসে বোর্ড অব ট্রাস্টি জানিয়েছে, ড. ফেরদৌসী কাদরী টিকাদানের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করেছেন। এটি অবিস্মরনীয়।

 

এবি/এসএন

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৪৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।