• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
নতুন পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন : প্রধানমন্ত্রী

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন : প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনগণকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের দেয়া ভর্তুকির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে আরও বেশি সংখ্যক গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে পারব। গ্রাম ও শহরের মধ্যে বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং বৈষম্য কমিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে।

রবিবার সকালে ৭৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিদ্যুৎবিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন তিনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উদ্বোধন করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য অশুভ কোনো শক্তি যাতে এদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। দাসত্বের শৃঙ্খলে এই দেশে যেন আবার আবদ্ধ হয়ে না পড়ে, সেজন্য দেশের সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে। দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার ফলে গ্রাম পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারছি আমরা। গ্রামীন জনগোষ্ঠীর নাগরিক সুবিধা এখন আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্বপ্ন ছিল। তিনি গ্রাম ও শহরের মধ্যকার বৈষম্য দূর করতে চেয়েছিলেন। আমাদের সরকার সেই কাজটি করে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি, তা অনেক বেশি। তারপরও গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কিন্তু বিল হিসেবে গ্রাহককে দিতে হচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হোন, সচেতন হোন। যখন বিদ্যুৎ লাগবেনা, তখন বিদ্যুতের সুইচগুলো বন্ধ রাখুন। এতে বিল কম আসবে, অন্যরাও বিদ্যুৎ পাবে।

বিদ্যুৎভিত্তিক ভবিষ্যতের প্রকল্প প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে দেশে বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেল চালু হবে। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন চালু হবে, বিদ্যুৎচালিত গাড়ি উৎপাদন হবে দেশে। রেল খাত ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ নির্ভর করা হবে। কাজেই এখন থেকেই আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, আগে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ছিল দৈনিক ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট। এখন আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দৈনিক ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানী উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে নবনির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

উদ্বোধন করা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হল- হবিগঞ্জের জুলদায় বিবিয়ানা-৩ ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইউনিট-২, নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট ১০৪ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট, বাগেরহাটে মধুমতি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সিলেটের ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে এক হওয়ার আহŸান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন বলেই আমরা অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পেরেছি। দেশ এখন উন্নয়নের কাঙ্খিত ধারায় চলছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে এক হতে হবে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং শতবর্ষমেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম আসবে, তারা যেন দেশের উন্নয়নের গতিটা এগিয়ে নিতে পারে। আমরা সেই পরিবেশ রেখে যেতে চাই। বাংলাদেশকে যেন কেউ আর দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।

 

এবি/এসএন

১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৩০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।