• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুকে হারিয়ে যাওয়া মায়ের ছবি, ১০ বছর পর ঘরে ফিরলেন সুফিয়া

ফেসবুকে হারিয়ে যাওয়া মায়ের ছবি, ১০ বছর পর ঘরে ফিরলেন সুফিয়া

ছবি- (বাঁ থেকে) সুফিয়া বেগম, ‘সহায়’ সংগঠনের প্রধান মঞ্জিলা মিমি ও সুফিয়া বেগমের ছেলে শাওন।

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানসিক ভারসাম্যহীন সুফিয়া বেগম (৪০) ফিরে পেয়েছেন পরিবার। দীর্ঘ ১০ বছর পর তিনি ফিরেছেন নিজের বাড়িতে। দীর্ঘদিন পর মানসিক ভারসাম্যহীন হারিয়ে যাওয়া মাকে কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা সন্তানরা। এমনই চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়গ্রাহী ঘটনা ঘটেছে ফেনীর সোনাগাজীতে।

জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন সুফিয়া বেগম দশ বছর আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যান। দীর্ঘদিন সন্ধান করেও পরিবারের লোকজন তার খোঁজ পায়নি। এক পর্যায়ে সুফিয়া বেগম (৪০) ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের পাশে পরিত্যক্ত একটি বাসে আশ্রয় নেন। সেখানেই জরাজীর্ণ অবস্থায় বসবাস করছিলেন সুফিয়া।

বিষয়টি ‘সহায়’ নামে ফেনীর একটি মানবিক ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীদের নজরে আসে। তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারসামহীন সুফিয়াকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে সংগঠনটির কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই নারীর ছবি পোস্ট করে প্রচারণা চালায়। এক পর্যায়ে সুফিয়ার পরিবারের লোকজন তাকে ফিরে পায়।

সামাজিক সংগঠন ‘সহায়’ এর প্রধান সমন্বয়ক মঞ্জিলা মিমি বলেন, ওই নারী নিজের নাম ছাড়া কোনো তথ্যই দিতে পারছিলেন না। আমরা তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। পরে ফেসবুকে ওই নারীর ছবি পোস্ট করে প্রচারণা চালায়। এছাড়া তার ছবি পুলিশের কাছেও দিয়েছি। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে শাওন নামের এক ব্যক্তি কুমিল্লার হোমনা থেকে সোনাগাজী থানা পুলিশের ফেসবুক পেজে সুফিয়াকে শনাক্ত করেন। শাওন নামের ওই ব্যক্তি সুফিয়া বেগমের সন্তান। সুফিয়া বেগমের বাড়ি নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার পুরান চর গ্রামে। সুফিয়ার স্বামীর নাম মোহাম্মদ আলম। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আলী।

সোনাগাজী থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শাওন ও তাঁর ফুফাতো ভাই সিফাত ৬ সেপ্টেম্বর ফেনীতে আসেন। তারা ভিডিও কলের মাধ্যমে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সুফিয়ার কথা বলার ব্যবস্থা করেন। কথা বলার সময় সুফিয়া সবাইকে চিনতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

সুফিয়া বেগমের ছেলে শাওন বলেন, আমার মা ২০১১ সাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। আমরা সব জায়গায় খোঁজ করেও মাকে পায়নি। আমরা দুই ভাই তখন খুব ছোট ছিলাম। মা হারিয়ে যাওয়ার পর নানার বাড়িতে বড় হয়েছি। আমরা বড় হওয়ার পর থেকেই মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি।

শাওন আরও বলেন, মাকে ফিরে পেয়েছি, আমাদের আর কিছুর দরকার নেই। মায়ের ভালো চিকিৎসা দরকার। আর্থিকভাবে আমরা অসচ্ছল, তারপরও মায়ের চিকিৎসার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ইকবাল হোসেন ভূঁঞা বলেন, পরিবারের সদস্যদের পরিচর্যা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সুফিয়া স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারেন।

 

এবি/এসএন

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৩৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।