• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাসক পাতায় মিলবে শতরোগের নিরাময়

বাসক পাতায় মিলবে শতরোগের নিরাময়

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশের গ্রামীণ ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যতম উপাদান ‘বাসক’। গ্রামাঞ্চলে রাস্তার পাশে, ঝোঁপঝাঁড়ের মধ্যে বাসক গাছ পাওয়া যায়। ভেষজ চিকিৎসায় বাসকের গুণাগুণ খুবই কার্যকরি। যা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত।

বাসকের পাতা দিয়ে নানা ধরণের ইউনানী ও আয়ুর্বেদীয় ওষুধ তৈরি করা হয়। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ নানা রোগের প্রতিষেধক ও রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এই পর্বে ‘বাসক পাতা’র ভেষজ গুণাগুণ ও উপকারিতা নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রিয় পাঠক চলুন, দেখে নিই কী আছে বাসক পাতায়-

পরিচয়

বাসক একটি ভারত উপমহাদেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ। এ উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম Justicia adhatoda। ভারত উপমহাদেশের প্রায় সর্বত্র বাসক গাছ জন্মে। হিন্দীতে একে বলা হয় ‘আড়ুসা’, ‘বানসা’ অথবা ‘ভাসিকা’। তবে সংস্কৃত নামের ভিত্তিতে এটির ব্যবসায়িক নাম ‘বাসক’।

বাসক গাছ লম্বায় ১-১৫ মিটার (৩-৫ ফুট) পর্যন্ত হয়। কচি অবস্থায় গাছের গোড়া সবুজ হলেও পরিণত অবস্থায় হাল্কা বেগুনি রঙ ধারণ করে।

বাসক পাতার উপকারিতা

সর্দি-কাশি নিরাময় : সাধারণ জ্বর, সর্দি ও কাশি নিরাময়ে বাসক পাতা খুবই কার্যকরি। বাসক পাতার ১-২ চামচ রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : নিয়মিত বাসক পাতার রস খেলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বের করে দেয়। প্রদাহ শুকাতে বাসক পাতা খুবই কার্যকর। যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

উকুন নাশক : আপনি কি উকুন নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন? আপনার জন্যই বাসক পাতা। গোসলের আধা ঘণ্টা আগে বাসক পাতার রস মাথায় লাগান। এতে উকুন মরে যাবে এবং মাথার বিভিন্ন চর্মরোগ দূর হবে।

প্রস্রাবের সংক্রমণ নিরাময় : প্রস্রাবের পর অনেকের প্রস্রাবের নালীতে জ্বালা-পোড়া করে। এ ধরণের সমস্যায় যারা ভুগছেন, তারা বাসকের ফুল বেটে ২-৩ চামচ রস করে নিন। এরপর ওই রসের সঙ্গে মিছরি ও পানি মিশিয়ে সরবতের মতো পান করুন। উপকার পাবেন।

জন্ডিস নিরাময় : জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের ১/২ চামচ বাসক পাতা বা বাসক ফুলের রসের সঙ্গে মধু বা চিনি খাওয়ান। জন্ডিস বিদায় নেবে।

মাড়ির যত্নে : যারা পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যায় ভুগছেন, তারা ২০টি বাসক পাতা থেঁতলে ২ কাপ পানিতে মিশিয়ে সেই পানি গরম করে নিন। এরপর ওই পানি দিয়ে কুলকুচি করুন। মাড়ি ও দাঁতের সমস্যা দূর হবে।

হাঁপানি নিরাময় : যারা হাঁপানিতে ভুগছেন, তারা বাসক পাতা শুকনো করে ওই পাতা বিড়ি বা সিগারেটের মতো টান দিয়ে পান করুন। বাসক পাতা দিয়ে ধুমপান করলে শ্বাসকষ্ট দূর হয়।

কফ নিরাময় ও শ্বাসকষ্ট দূর করে : দীর্ঘদিন বুকে জমে থাকা কফ দূর করতে বাসক পাতার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন। কফ জমে থাকা ও শ্বাসকষ্ট থেকে উপশম পাবেন।

চুলকানি দূর করে : ১০/১২টি বাসকের কচিপাতা ও এক টুকরো হলুদ এক সঙ্গে বেটে চুলকানি ও দাউদের স্থানে লাগালে চুলকানি ও চর্মরোগ নিরাময় হয়।

শরীরের দুর্গন্ধ দূর করে : অনেকের পায়ে ও শরীরে দুর্গন্ধ তৈরি হয়। তারা বাসক পাতার রস পায়ে ও শরীরে মাখুন, উপকার পাবেন।

খিঁচুনি রোগ নিরাময় : বাসক পাতার রস নিয়মিত খান, খিঁচুনি রোগ নিরাময় হবে।

ওজন কমায় : বাসক পাতা ওজন কমাতে খুব দ্রুত কাজ করে। নিয়মিত বাসক পাতার রস খেলে আপনার অতিরিক্ত ওজন এক সপ্তাহের মধ্যেই কমে যাবে।

পরামর্শ
যারা কিডনী ও নিম্ন রক্তচাপসহ অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছেন, তারা বাসক পাতার রস খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।

তথ্যসূত্র : ডাবর ডট কম ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

২১ আগস্ট ২০২১, ০৮:০৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।