• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসী আনোয়ারের করুণ কাহিনী: মৃত বাবার ছোঁয়া পেলেন ছোট্ট হিয়ান

প্রবাসী আনোয়ারের করুণ কাহিনী: মৃত বাবার ছোঁয়া পেলেন ছোট্ট হিয়ান

ছবি- সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সৌদি আরব প্রবাসী আনোয়ার হোসেন। অভাব অনটনের সংসারে হাসি ফুটাতে ২০০৩ সালে সৌদি আরবে পাড়ি জমান টগবগে এই যুবক। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিবারের জন্য হাঁড়ভাঙা শ্রম দিয়ে উপার্জন করেন সুদুর প্রবাসে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় আনোয়ার হোসেন যেন সব ভাইয়ের নয়নের মনি। সদালাপী ও মিষ্টভাষী হিসেবে আনোয়ার হোসেনের পরিচিতি দেশে-বিদেশে সবখানে।

পাঁচ বছরের ছোট্ট সন্তানের কাছে বাবা আনোয়ার হোসেনের আদর বলতে এখন মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের স্মৃতি ছাড়াই আর কিছুই নয়। কারণ আনোয়ার হোসেন পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। মৃত প্রবাসী আনোয়ার হোসেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার মধুরডিয়া গ্রামের মো. আলিমুদ্দিন খানের ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে সর্বশেষ দেশে আসেন আনোয়ার। কিছুদিন দেশে থাকার পর আবারও স্বপ্ন পুরণের আশায় পাড়ি জমান সৌদি আরব। বিদেশ বিভূঁইয়ে পৌছানোর মাস দেড়েক পর আনোয়ার জানতে পারেন, তিনি বাবা হতে চলেছেন। এরপর আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী হেনা খাতুন পুত্র সন্তান প্রসব করেন। আনোয়ারের সংসারে কোনো অভাব ছিল না।

কিন্তু প্রবাস জীবনের নির্মম বাস্তবতার কারণে গত পাঁচ বছরেও একমাত্র সন্তানের স্পর্শ পাননি আনোয়ার হোসেন। ছোট্ট শিশু আয়াত আল হিয়ান (৫) পায়নি বাবার হাতের স্পর্শ। এর আগেই গত ১২ মার্চ সৌদি আরবে আকষ্মিকভাবে মারা যান আনোয়ার হোসেন। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার।

প্রয়াত প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই জাফর আলী খান ‘আমরাই বাংলাদেশ’কে বলেন- ‘আমার ভাই দ্বিতীয় (মেজো), কিন্তু পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালনে তিনি সব সময় ছিলেন অভিভাবকের মতো। পরিবারের স্বপ্ন পুরণে ও অভাব দূর করতে দীর্ঘদিন তিনি সৌদিতে একা বসবাস করে উপার্জন করেছেন। আজ ভাই চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আমরা সব হারিয়ে ফেলেছি।’

গত ২৫ মে আনোয়ার হোসেনের লাশ দেশে আসে বলে জানিয়ে জাফর আরও বলেন-‘সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হলো, আমার ভাইয়ের একমাত্র শিশুপুত্র তার বাবার স্নেহ, ভালোবাসা এমনকি স্পর্শও পায়নি। অকালে আমার ভাইয়ের মৃত্যুশোক আমাদের পরিবারের জন্য চরম বেদনার। আমি সকলের কাছে আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া চাই।’

২৯ মে ২০২২, ০৭:১৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।