• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী

হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী

ফিচার ডেস্ক

হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী বিখ্যাত বাঙ্গালী রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ছিলেন। যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূলনেতাদের মধ্যে অন্যতম। গণতান্ত্রিক রীতি ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন, তাই সুধী সমাজ কর্তৃক ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ বলে আখ্যায়িত হন।

১৮৯২, সেপ্টেম্বর ৮: হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯১৩: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আরবি ভাষা এবং সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক অর্জন করেন। এছাড়া এখানে তিনি আইন বিষয়েও পড়াশোনা করেন এবং ‘ব্যাচেলর অব সিভিল ল’ (বি. সি. এল.) ডিগ্রী অর্জন করেন।

১৯১৮: গ্রে’স ইন হতে বার এট ল ডিগ্রী অর্জন করেন।

১৯২১: কলকাতায় ফিরে এসে আইন পেশায় নিয়োজিত হন।

১৯২৪ সালে তিনি কলকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাস।

১৯২৭: সোহরাওয়ার্দী পদত্যাগ করেন।

১৯২৮: সর্বভারতীয় খিলাফত সম্মেলন এবং সর্বভারতীয় মুসলিম সম্মেলন অনুষ্ঠানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

১৯৩৬: তিনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টি নামক দল গঠন করেন।

১৯৩৬ - ১৯৪৩: এই দলটি বাংলা প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাথে একীভূত হয়। এই সুবাদে তিনি বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল মুসলিম লীগ তথা বিপিএমএল এর সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।

১৯৪৩: শ্যমা-হক মন্ত্রীসভার পদত্যাগের পরে গঠিত খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রীসভায় তিনি একজন প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন। খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রীসভায় তিনি শ্রমমন্ত্রী, পৌর সরবরাহ মন্ত্রী ইত্যাদি দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৬: এ বছর নির্বাচনে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের বিপুল বিজয়ে তিনি এবং আবুল হাশিম মূল কৃতিত্বের দাবিদার ছিলেন।

১৯৪৬: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তান আন্দোলনে তিনি ব্যাপক সমর্থন প্রদান করেন।

১৯৪৬, ১৬ আগস্ট: স্বাধীন ভারতবর্ষের ব্যাপারে কেবিনেট মিশন প্ল্যানের বিরুদ্ধে জিন্নাহ প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসের ডাক দেন। বাংলায় সোহ্‌রাওয়ার্দীর প্ররোচনায় এই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।

১৯৪৬: তার উদ্যোগে দিল্লী সম্মেলনে মুসলিম লীগের আইনপ্রণেতাদের নিকট লাহোর প্রস্তাবের একটি বিতর্কিত সংশোধনী পেশ করা হয়। এই সংশোধনীতে অখণ্ড স্বাধীন বাংলার প্রস্তাবনা ছিল। কিন্তু কলকাতায় হিন্দু মুসলমান দাঙ্গায় তার বিতর্কিত ভূমিকার কারণে হিন্দুদের নিকট তার গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়।

১৯৪৭: তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যান। তবে পদত্যাগের পর তিনি সাথে সাথে পাকিস্তান না গিয়ে কলকাতায় থেকে যান।

১৯৪৯: তৎকালীন ভারত সরকার তার উপর ক্রমবর্ধমান করের বোঝা চাপালে তিনি ভারত ত্যাগ করে পাকিস্তান চলে যেতে বাধ্য হন।

১৯৪৭: সোহরাওয়ার্দীকে পাকিস্তানের আইনসভার সদস্য পদ থেকে অপসারিত করা হয়।

১৯৪৯, ২৩ জুন: হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঢাকার টিকাটুলীর কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৫৩: তিনি একে ফজলুল হক এবং মাওলানা ভাসানীর সাথে একত্রে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। এই যুক্তফ্রন্ট ২১ দফার একটি নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে।

১৯৫৪: পূর্ব পাকিস্তান পরিষদের নির্বাচনে ২৩৭ টি মুসলিম আসনের মধ্যে মওলানা ভাসানী, আবুল কাশেম ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী কর্তৃক গঠিত যুক্তফ্রন্ট ২২৩ টি আসন পায়। এর মধ্যে ১৪৩ টি পেয়েছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।

১৯৫৫: আওয়ামী মুসলিম লীগ ‘মুসলিম’ শব্দটি বর্জন করে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এরপর মোহাম্মদ আলী বগুড়ার মন্ত্রিসভায় সোহরাওয়ার্দি আইনমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

১৯৫৬: পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণয়নে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

১৯৫৬, সেপ্টেম্বর - ১৯৫৭ অক্টোবর: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এসময় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যেকার অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে তিনি পদক্ষেপ নেন।

১৯৫৯ আগস্ট: ইলেক্টিভ বডি ডিসকোয়ালিফিকেশান অর্ডার অনুসারে তাকে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

১৯৬২, ৩০ জানুয়ারি: পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে রাষ্ট্রবিরোধী কাজের অপরাধ দেখিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং করাচি সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ করা হয়।

১৯৬২, ১৯ আগস্ট: এ বছর তিনি জেল থেকে মুক্তি পান।

১৯৬২, অক্টোবর: তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের উদ্দেশ্যে ন্যাশনাল ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট (এন. ডি. এফ.) গঠন করেন।

১৯৬৩: স্বাস্থ্যগত কারণে দেশের বাইরে যান এবং লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থানকালে ওই বছরের ডিসেম্বরে তিনি মারা যান। তবে তার মৃত্যু অনেকের কাছে রহস্যমণ্ডিত।

 

তথ্যসুত্র: উইকিপিডিয়া

এবি/এসজে

 

 

০৮ আগস্ট ২০২১, ০৩:৫২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।