• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভর্তা-ঝোলে পুষ্টিকর ‘টাকি’ মাছের গুণাগুণ

ভর্তা-ঝোলে পুষ্টিকর ‘টাকি’ মাছের গুণাগুণ

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বাংলাদেশে বহুল জনপ্রিয় একটি মাছ ‘টাকি’। এটি দেশীয় প্রজাতির মাছগুলোর মধ্যে অন্যতম। রক্তশূন্যতা দূর করতে টাকি মাছের জুড়ি মেলা ভার। রোগাক্রান্ত মানুষের খাদ্য তালিকায় চিকিৎসকরা টাকি মাছ রাখার পরামর্শও দিয়ে থাকেন। বর্তমানে দেশি প্রজাতির এই মাছের বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বাজারে এখন আগের তুলনায় বেশি পাওয়া যায় এই মাছ। স্বাদ ও গন্ধে দেশি প্রজাতির টাকি মাছের চেয়ে চাষের মাছ পিছিয়ে। কিন্তু পুষ্টিমাণে কেউ কাউকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।

উচ্চমূল্যের এই মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। তবও দেশের গ্রামাঞ্চলের হাটে বাজারে এখনো খাল-বিলের টাকি মাছ পাওয়া যায়। পুষ্টিগুণে এই মাছ অন্যসব মাছের মতো হলেও, এই মাছের চাহিদা বেশি।

প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক, কী আছে টাকি মাছে-

পরিচয়:
টাকি মাছ লাটি বা ওকন বা চাইতান নামেও পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Channa punctata। ইংরেজিতে এই মাছকে বলা হয় Spotted Snakehead। এটি মূলত স্বাদু পানির মাছ। বাংলাদেশে টাকি মাছ বেশ জনপ্রিয়। গবেষকরা বলছেন, শোল মাছের ক্ষুদ্র সংস্করণ টাকি মাছ। মাথা গোলাকার চ্যাপ্টা ও দেহ দেহ লম্বাটে এবং আঁশযুক্ত। এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে টাকি মাছ বেশি পাওয়া যায়। তবে এই প্রজাতির মাছ ভারত, বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকায় প্রচুর রয়েছে।

পুষ্টি উপাদান:
অ্যাকুয়া ফিস সিআরএসপি, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সাইন্স ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, টাকি মাছে অন্যান্য মাছের মতই রয়েছে, ওমেগা-৩ ফ্যাট, ফাইবার, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, পটাসিয়াম, প্রোটিনসহ অন্যান্য খনিজ উপাদান।

উপকারিতা:
অ্যাকুয়া ফিস, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সাইন্স ও উইকিপিডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, টাকি মাছ-

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: এই মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। কাজেই নিয়মিত এই মাছ খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি ও ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: এই মাছে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্স (মস্তিষ্কের কোষের ভিত্তি) তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। গবেষকরা বলছেন, নিয়মিত টাকি মাছ খাওয়ার অভ্যাস যাদের, তাদের দৃষ্টিশক্তি অন্যদের চেয়ে উন্নত।

তারুণ্য ধরে রাখে: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্যজনিত শারীরিক জটিলতা বাড়তে থাকে। কিন্তু নিয়মিত টাকি মাছ খেলে তারুণ্য বজায় থাকে এবং বার্ধক্য দেরিতে আসে।

মস্তিষ্ক ভালো রাখে: মস্তিষ্ক ভালো রাখতে টাকি মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে। কারণ এই মাছে থাকা পুষ্টি উপাদান ও খনিজ উপাদান অ্যালঝাইমার্স রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

ভুলে যাওয়া রোগ দূরে রাখে: যারা ডিমেনশিয়া অর্থাৎ ভুলে যাওয়ার অসুখে ভুগছেন, তারা টাকি মাছ খাবার তালিকায় রাখুন। এই মাছের তেল ভুলে যাওয়া রোগ দূরে রাখে। একই সঙ্গে এটি বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

রক্ত বৃদ্ধি করে: রক্তনালির স্বাস্থ্য রক্ষায় টাকি মাছের জুড়ি মেলা ভার। এ ছাড়া এটি রক্ত তৈরিতেও বিশেষভাবে কার্যকরী।

ত্বক ভালো রাখে: টাকি মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাট ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে থাকা প্রোটিন কোলাজেনের অন্যতম উপাদান। এই কোলাজেন ত্বক নমনীয় রাখতে সাহায্য করে।

দাঁত ও হাড়ের সুরক্ষা: এই মাছে রয়েছে পর্যাপ্ত আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও জিংক। এসব উপাদান হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকরী।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: এতে রয়েছে এমন কিছু খনিজ উপাদান, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

তথ্যসূত্র: অ্যাকুয়া ফিস, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সাইন্স এবং উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

২৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:১১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।