শেষ পর্ব
রোজা রাখার অভাবনীয় উপকারিতা
প্রতিকী ছবি
পবিত্র রমজান মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেছে। বছরের এই সময়ে তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্থ। এমন বৈরি আবহাওয়ার মাঝেও সিয়াম পালন করছেন মুসল্লীরা। দীর্ঘ প্রায় ১২ ঘণ্টা পানাহার বন্ধ থাকায় রোজাদারের শরীরে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। পুষ্টিবিদ ও গবেষকরা বলছেন, সিয়াম পালনের ফলে রোজাদারের দেহে অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের ফলে মানবদেহ বুস্ট হয় বা তার হারানো শক্তি সামর্থ্য ফের ফিরে পায়।
রোজা রাখার উপকারিতা
বিখ্যাত স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইন ও মুসলিম এইড ওয়েব জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধে রোজা রাখার বেশ কিছু উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলো হলো-
রক্তচাপ কমে
দিনের বেলা দীর্ঘ একটা সময় খাবার না খাওয়ার কারণে শরীর লবণ গ্রহণ করে না এবং সারাদিনে ইউরিন বা মুত্রের সাথে লবণ বের হয়ে যায়। ফলে রোজাদারের দেহে রক্তচাপ কমে গিয়ে তা সাভাবিক মাত্রায় থাকে।
শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ দূর হয়
পবিত্র রমজান মাসে টানা ৩০ দিন রোজা পালনে রোজাদার যাবতীয় পানাহার থেকে বিরত থাকেন। এতে রোজাদারের শরীরের লিভার, পাকস্থলী এবং অন্যান্য অঙ্গ বিশ্রাম পায়। এ ছাড়া নিজস্ব প্রক্রিয়ায় দেহে জমে থাকা বিষাক্ত টক্সিন শারীরিক ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। ফলে রোজাদারের দেহের অঙ্গ-প্রতঙ্গের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
ওজন কমে
এটি বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত যে, রোজা রাখলে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়েই একজন রোজাদারের শারীরিক ওজন কমে যায়। কেননা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শরীর তার চালিকাশক্তি হিসেবে দেহে জমে থাকা চর্বি থেকে ক্যালরি গ্রহণ করে। এতে করে শরীরের চর্বি গলতে শুরু করে। ফলে দ্রুত ওজন কমে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়
গবেষণায় দেখা গেছে, রোজা রাখা অবস্থায় রক্তে “এনডোরফিনস” নামক হরমোন বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন মস্তিষ্কে প্রশান্তির অনুভূতি সৃষ্টি করে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়
দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকার কারণে রোজাদারের পরিপাকতন্ত্র বিশ্রাম পায়। এ ছাড়া লিভার থেকে যে এনজাইম নিঃসরণ হয়, যেগুলো শরীরের চর্বি এবং কোলেস্টেরলকে ভেঙ্গে ফেলে। এ কারণে রোজা রাখলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। টানা এক মাস রোজা রাখার কারণে ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমে যায়। এভাবে পরিপাকতন্ত্র এবং হজমশক্তির উন্নতি হয়।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
সিয়াম পালনের ফলে ক্যালরি, চিনি এবং লবণ কম গ্রহণ করা হয়। এই উপাদানগুলো আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু রোজার সময় এসব উপাদান রোজাদারের দেহে কম প্রবেশ করে। এ ছাড়া রোজাদার ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকেন। ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটে।
হৃদযন্ত্র উন্নত হয়
শরীরে জমে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে হৃদযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রোজা রাখার কারণে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয় ও হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন ও মুসলিম এইড।