• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রথম পর্ব

সিয়াম পালনে রোজাদারের শরীরে যা ঘটে

সিয়াম পালনে রোজাদারের শরীরে যা ঘটে

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম বা রোজা পালনের পাশাপাশি ইবাদতে মশগুল থাকেন মুসল্লীরা। রমজানে এক মাসের দীর্ঘ সিয়াম পালনকালে রোজাদারের দেহে নানা পরিবর্তন ঘটে। শারীরিক ক্রিয়াকলাপেও আসে ভিন্নতা। রমজান মাসে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার বন্ধ থাকায় রোজাদারের শরীরের পরিপাক্ক, রক্ত সঞ্চালন, অক্সিজেন প্রবাহসহ বেশকিছু পরিবর্তন ঘটে। এসব পরিবর্তন নিয়ে বিবিসি বাংলাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ওয়েব জার্নালে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

বিবিসি বাংলার নিবন্ধে বলা হয়েছে, গীষ্মকালে দীর্ঘ সময় রোজা রাখতে হয় মুসল্লীদের। এতে করে গ্রীষ্মের রোজার প্রথম সপ্তাহে অনেকেই বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়েন। রোজার সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরও মানিয়ে নিতে শুরু করে।

গ্রীষ্মের রোজায় প্রথম দশকে দেহে যা ঘটে

⇒ চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা বলছে, সেহরি খাওয়ার পর প্রথম আট ঘণ্টা পর্যন্ত মানুষের শরীরে রোজার কোনো প্রভাব তেমন পড়ে না। কারণ, মানুষ যে খাবার খায়, পাকস্থলীতে তা পুরোপুরি হজম হতে ও এর পুষ্টি শোষণ করতে অন্তত আট ঘণ্টা সময় লাগে।

⇒ আট ঘণ্টা পরে শরীর সমস্ত খাবার হজম করে ও খাদ্যশক্তি শোষণ করে নেয়। ফলে আট ঘণ্টা পর থেকে শক্তি সংগ্রহ করতে শরীর নিজে নিজেই লিভার ও মাংসপেশি থেকে গ্লুকোজ সংগ্রহ করে। এভাবেই পরবর্তি কয়েক ঘণ্টা শরীর শক্তি গ্রহণ করে।

⇒ শরীরে জমে থাকা চর্বি থেকে শক্তি গ্রহণের ফলে রোজাদারের ওজন কমতে শুরু করে। এটি প্রক্রিয়ার কারণে সিয়াম পালনকারীর দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমে যায়।

⇒ গ্রীষ্মে রোজা রাখলে প্রথম প্রথম মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, বমি বমি ভাব, নিশ্বাসে দুর্গন্ধ, বুক জ¦ালাপোড়া, বদহজম, ক্লান্তি ভাব ও ঘন ঘন থুথু উঠার মতো সমস্যা হতে পারে।

প্রথম দিকের সতর্কতা

রোজার সময় দিনের বেলায় যেহেতু রোজাদার কিছুই খেতে বা পান করতে পারছেন না, তাই ইফতারির পর অবশ্যই প্রচুর পানি পান করতে হবে। না হলে রোজাদার মারাত্মক পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন। তাই, প্রথম রোজাগুলোতে একজন রোজাদারের পুষ্টিকর খাবারের প্রতি নজর দেয়া উচিত। খাবারের মধ্যে হালকা-পাতলা কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ ও প্রোটিন জাতীয় সাধারণ খাবার খাওয়া উচিত।

রোজার দ্বিতীয় দশকে দৈহিক পরিবর্তন

গবেষকরা বলছেন, রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহে একজন রোজাদারের দেহ নতুন অভ্যাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করে। সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়ে থাকি। যার ফলে আমাদের শরীর অন্য অনেক কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। কিন্তু রোজার সময় যেহেতু আমরা পানাহার থেকে বিরত থাকছি, তাই শরীর তখন অন্যান্য কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। এই সময়টাতে রোজাদার নিজের শক্তি ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে শুরু করে।

শেষ দশকে দেহে যা ঘটে

রমজান মাসের শেষ দশকে শরীরের পাচকতন্ত্র, যকৃৎ, কিডনি এবং দেহত্বক একধরনের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যায়। সেখান থেকে সব দূষিত বস্তু বেরিয়ে শরীরকে বিশুদ্ধ করে তুলতে শুরু করে। রোজার সময় শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তাদের পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পায়। স্মৃতি এবং মনোযোগের উন্নতি ঘটায় এবং শরীরে শক্তি জোগায়।

 

তথ্যসূত্র: মুসলিম এইড ও বিবিসি।

১০ এপ্রিল ২০২৩, ০২:৪১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।