শীতের পোশাক যেমন হবে
প্রতিকী ছবি
শীতের আমেজে মেতেছে দেশ। গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি এখন শহরগুলোতে শীতের হিমেল হাওয়ার দাপট বাড়ছে। সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে বের হলেই শীতের পরশ বুঝা যাচ্ছে। শীতে ত্বকের যত্ন দরকার। তেমনি শীতে বিশেষ পোশাকের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। বিশেষ করে, গরম কাপড় ছাড়া শীত যেন ভয়ঙ্কর। শীতজনিত রোগবালাই থেকে সুরক্ষিত থাকতে পোশাকের গুরুত্ব অনেক।
এছাড়া ফ্যাশন সচেতন মানুষেরা শীত এলেই পড়ে যান চিন্তায়। তাই এই পর্বে আমরা শীতকালীন পোশাক কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে কিছু তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ শীতকালে বিয়ে-সাদী, পার্টি, সামাজিক অনুষ্ঠান, পিকনিক ও ট্যুর চলতেই থাকে। এসব অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য পোশাক নির্বাচন যুতসই হওয়া উচিত।
শীতের পোশাক কেমন হবে
জনপ্রিয় সব লাইফস্টাইল বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাশন ডিজাইনারদের অধিকাংশের মত, শীতের সময়টাতে উষ্ণতার পরশ নিতে ফ্যাশন ও ট্রেন্ড বজায় রেখে পোশাক কেনা উচিত। শীতে তরুণ-তরুণীরা কনভার্স, জিনস ও ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ফুল স্লিভ পোলো শার্ট, জ্যাকেট, কাশ্মীরি শাল, চাদর, মাফলার ব্যবহার করে থাকেন। এসবই হালের ট্রেন্ড। তবে এসবের সঙ্গে যোগ হয়েছে হুডি ও জ্যাকেট। সেই সঙ্গে পোশাকের তালিকায় থাকতে পারে উলের তৈরি সোয়েটার।
কোন অনুষ্ঠানে কি পোশাক
আপনি কি ধরণের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করবে আপনি কি ধরণের পোশাক পরবেন। যদি বিয়ে বা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে যান, তাহলে শাড়ি বা কামিজ অথবা লেহেংগার সাথে মিল রেখে কাশ্মিরি অথবা অন্যান্য ডিজাইনের শাল বা চাদর পরতে পারেন।
ছেলেরা পাঞ্জাবীর সঙ্গে ম্যাচিং করে শাল বা চাদর বেছে নিতে পারেন। এতে করে পোশাকটি অনুষ্ঠানের সাথে যেমন মানানসই হবে, তেমনি শীতের কষ্ট থেকেও আপনি থাকবেন নিরাপদ। এছাড়া পিকনিক বা ট্যুরের জন্য ছেলেরা জিন্সের সাথে ব্লেজার, মাঙ্কিটুপি ও মাফলার পরতে পারেন।
তবে আপনার অনুষ্ঠান যদি হয় অফিসিয়াল কোনো পার্টি, তবে ছেলেদের জন্য জিন্স ব্লেজার হবে পারফেক্ট চয়েস। আর মেয়েরা লং গাউন, স্কার্ট, চুড়িদারের সাথে লং কামিজ, বা জিন্স এর সাথে ব্লেজার পরতে পারেন।
শীতকালীন পোশাকের রং কেমন হবে
শীতে পোশাকের রং বাছাই এর ক্ষেত্রে গাঢ় রং কে প্রাধান্য দিতে হবে। গরমে হালকা রংয়ের কাপড় আরামদায়ক হলেও শীতে গাঢ় রংয়ের কাপড় বেশি কার্যকরী। সেক্ষেত্রে নেভি ব্লু, কালো, গাঢ় মেরুন, ফেড ব্ল্যাক, ডিপ কফি কালার, গাঢ় বেগুনি, পার্পল কালারের পোশাক নির্বাচন করতে পারেন।
পোশাক হতে হবে মানানসই
শীতকালে আপনি যে পোশাক পরবেন, তা হতে হবে মানানসই। যেমন শাড়ির সঙ্গে শাল বা চাদর পরা মানানসই। জিন্সের সঙ্গে ফিটিং সোয়েটার বা ব্লেজার, ছেলেদের ফর্মাল প্যান্টের সাথে ফর্মাল কোর্ট বা ব্লেজার, গ্যাভাডিন এর সাথে ওভারকোর্ট মানানসই। আবার ছেলেদের পাঞ্জাবীর সাথে শাল বা চাদর মানানসই।
পোশাক হবে আরামদায়ক
পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনাকে সবার আগে আরামের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। আপনি পোশাক পরে আরাম পাচ্ছেন কিনা, সেটি খেয়াল রাখবেন। এমন পোশাক পরবেন না, যা খুবই ঢিলেঢালা। আবার এমন পোশাকও পরা স্বাস্থ্যকর নয়, যা একেবারেই টাইট ফিটিং। এমন পোশাক বাছাই করুন, যা পরে আপনি সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ফ্যাশন সচেতন হওয়ার পাশাপাশি নিজের সুরক্ষার বিষয়েও আপনাকে দৃষ্টি দিতে হবে।
শীতের জুতা
শীতকালে যথাসম্ভব পা ঢাকা জুতা পরুন। এতে করে পা ফাটার সমস্যায় পড়বেন না। আপনার পা থাকবে সতেজ। ছেলে, মেয়ে ও শিশুসহ সব বয়সীদের জন্য এখন বাজারে নানা ধরণের জুতা পাওয়া যায়। কেডস, উঁচু হিলের ফর্মাল জুতা ও স্যু পরতে পারেন। তবে বাচ্চাদের জুতা অবশ্যই নরম হওয়া উচিত। খেয়াল রাখবেন, বাচ্চাদের জুতা যেন চামড়ার, কাপড়ের অথবা তুলার তৈরি হয়।
ছোটদের শীতের পোশাক
শীতের পোশাকের ক্ষেত্রে সোয়েটার বা জ্যাকেট বেশ জনপ্রিয়। শিশুদের জন্য নানা ধরণের সোয়েটার ও জ্যাকেট পাওয়া যায়। তবে শিশুকে উলের সোয়েটার পরানোর আগে অবশ্যই যেন সুতি কাপড়ের পাতলা গেঞ্জি পরানো হয়। অন্যথায়, শিশুর দেহে এলার্জি ও অস্বস্তির সৃষ্টি হতে পারে। শিশুর দেহে ফুসকুড়িও হতে পারে। শিশুদের শীতের পোশাক পরানোর আগে ভেতরে পাতলা সুতি কাপড়ের গেঞ্জি বা অন্য কাপড় পরানো যেতে পারে।
শিশুদের কাপড়ের মধ্যে রয়েছে- ফুলহাতা শার্ট, উলেন সোয়েটার ও নিটেড সুতির কার্ডিগান। সেই সঙ্গে স্কার্ফ, মাফলার বা রঙিন টুপিও পরাতে পারেন।
তথ্যসূত্র: ইনস্টাইল ডট ও সিম্পলি ড্রেস।