• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাণ্ডা-শীতে সোনামণিদের যত্ন

ঠাণ্ডা-শীতে সোনামণিদের যত্ন

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

ঋতু পরিক্রমায় দেশে শীত নেমেছে। শীত থেকে সুরক্ষার জন্য গরম কাপড় যেমন প্রয়োজন, তেমনি শীতের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে প্রয়োজন সতর্কতা। বিশেষ করে শীতে শিশুদের স্বাস্থ্য বেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কাজেই, শীতের সময় বিশেষ পরিচর্যা নিলে আপনার শিশু থাকবে নিরাপদ ও সুস্থ।

দেশী-বিদেশী শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, প্যারেন্টস ডট কম ও হিন্দুস্তান টাইমসের পৃথক নিবন্ধে শীতে শিশুস্বাস্থ্যের পরিচর্যা বিষয়ে বেশকিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নিবন্ধগুলোতে বলা হয়েছে, শীতে শিশুরা সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, জ্বর এমনকি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। কারণ, শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক ও বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায় মূলত শিশুরা এসব রোগে আক্রান্ত হয়। কাজেই, শীতকালে অভিভাবকদের বাড়তি সচেতনতার বিকল্প নেই।

শিশুকে সুরক্ষিত রাখবেন যেভাবে

গরম পানি: শিশুর গোসল ও খাওয়ানোর সময় হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর দাঁত ব্রাশ করা, হাত-মুখ ধোয়া, খাওয়াসহ শিশুর সব কাজে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করলে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবে।

এ ছাড়া শীতকালে আপনার শিশুকে নিয়মিত গোসল করান। তবে নবজাতক কিংবা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছে এমন শিশুকে হালকা গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে শরীর ভালো করে মুছে দিন।

গরম কাপড়: শীত থেকে সুরক্ষার জন্য শিশুকে অবশ্যই গরম কাপড় পরাবেন। চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের উলের কাপড় পরানো ঠিক নয়। সূতির গরম কাপড় শিশুদের জন্য আদর্শ পোশাক। কারণ, উলের ক্ষুদ্র লোম শিশুর দেহে অ্যালার্জি তৈরি করে। খেয়াল রাখবেন শিশুর কাপড় যেন নরম, কোমল ও বড়সড় হয়। শীতে শিশুর পায়ে অবশ্যই মোজা ব্যবহার করবেন।

খাবার: শীতের সময়টা শিশুদের খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ফলে তাদের শরীরের ওজন কমে যেতে পারে। তাই, শীতে শিশুকে বারবার পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান। বিশেষ করে, শিশুদের ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে ডিমের কুসুম, সবজির স্যুপ এবং ফলের রস খাওয়ানো যেতে পারে।

শীতকালে বাজারে প্রচুর সতেজ শাক-সবজি পাওয়া যায়। এসব শাক-সবজি দিয়ে পাতলা খিচুরি আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন। এটি শিশুর দেহের জন্য খুবই উপকারী।

ত্বকের যত্ন: শিশুদের ত্বক বড়দের তুলনায় বেশি স্পর্শকাতর। তাই, শীতে শিশুদের ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। শিশুর ত্বক ভালো রাখতে বেবি লোশন, বেবি অয়েল, অলিভ অয়েল ও গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন।

শীতে শিশু দেহে সংক্রমণের লক্ষণ

গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে শিশুরা বেশি রোগে আক্রান্ত হয়। অভিভাবকরা একটু সতর্ক থাকলেই এসব সংক্রমণ শুরুতেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শিশুদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ

* শিশু ঘনঘন কাশি ও মাঝে মাঝে বমি করতে পারে।
* আপনার শিশু শ্বাস নেয়ার সময় হাঁপিয়ে যায় বা ছোট ছোট ও ঘন ঘন শ্বাস নিতে পারে।
* আপনার শিশু ঘুমনোর সময় বা কাশি হওয়ার পরেও শ্বাস নেওয়ার চিকন শব্দ হতে পারেন।
* শ্বাসকষ্টের সংক্রমণের ফলে ফুলে যাওয়া ফুসফুসের কারণে তার বুকে ব্যথা হতে পারে।
* শিশুদের মাথা ব্যথার সঙ্গে নাক দিয়ে সর্দি ঝরা, জ্বর, কাশিও হতে পারে।

পরামর্শ

→ আপনার শিশুর মাঝে উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা মাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ব্যতিত কোয়াক বা হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে শিশুর চিকিৎসা করাবেন না।

→ আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি নিয়মিত খেয়াল রাখুন। সে ঠিক মতো খাবার খাচ্ছে কিনা, তার প্রস্রাব-পায়খানা ঠিক আছে কিনা দেখুন।

→ শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে বাবা-মা দুজনই সতর্ক থাকুন। বুকের দুধ পান করাচ্ছেন, এমন মায়েরা অবশ্যই ঠাণ্ডা থেকে দূরে থাকুন। এছাড়া পুইশাক, বাসি খাবার ও ফ্রিজিং খাবার এড়িয়ে চলুন।

→ শিশুর ঘরে আলো প্রবেশের ব্যবস্থা রাখুন। শিশুর বালিশ, কাথা, কম্বল, তোষক নিয়মিত রোদে শুকিয়ে গরম করে নিন। এতে শিশুর ঘুম ভালো হবে, বিছানাও থাকবে জীবাণুমুক্ত।

 

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, প্যারেন্টস ডট কম ও হেলথ লাইন।

০৮ নভেম্বর ২০২২, ০৫:১৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।