• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষায় পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি এড়াতে করনীয়

বর্ষায় পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি এড়াতে করনীয়

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

সিলেট, সুনামগঞ্জ ও দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যা শুরু হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন বানভাসি লাখ লাখ মানুষ। কোথাও কোথাও বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতি হয়তো কিছুদিন পর সাভাবিক হবে। মানুষ আবারও ঘরে ফিরবে। কিন্তু বন্যা পরবর্তি রোগ ও সংক্রমণের ঝুঁকি পরবর্তি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে।

বিশেষ করে পানিবাহিত রোগ এরই মধ্যে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরে বসেই অনেকে এসব রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া বর্ষাকালে সারাদেশেই জন্ডিস, ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েডসহ নানা ধরণের পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়।

আমরা যদি একটু সচেতন ও সতর্ক থাকি তাহলে পানিবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব। তবে রোগাক্রান্তদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। প্রিয় পাঠক, আজকের এই পর্বে আমরা পানিবাহিত কয়েকটি রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায় আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক-

বিখ্যাত মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবজার্নাল হেলথ লাইন, হেলথ বেনেফিট টাইমস ও বাংলাদেশের বরেণ্য কয়েকজন চিকিৎসকের পরামর্শ মতে আমাদের এই পর্ব সাজানো হয়েছে।

শহরবাসী সুরক্ষিত থাকবেন যেভাবে

শহরে পানিবাহিত রোগের সংক্রমণ অনেক বেশি। বিশেষ করে শহর কর্তৃপক্ষ সাপ্লাইয়ের মাধ্যমে যে পানি দেয়, তা বেশ ত্রুটিযুক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ। এসব পানি পান করার আগে ভালো করে ফুটিয়ে কিংবা জীবাণুনাশক দিয়ে পরিশুদ্ধ করে নেয়া উচিত। সাপ্লাই লাইনের পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়মিত পরিস্কার করা প্রয়োজন। সাপ্লাইয়ের পানি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটিয়ে নিলে ঝুঁকি থাকে না। তবে তা অবশ্যই আধাঘণ্টা ধরে ফুটাতে হবে।

টাইফয়েড, জন্ডিস বা এই ধরনের রোগ হলে যা করবেন

পানিবাহিত রোগের মধ্যে টাইফয়েড, জন্ডিস ও ডায়রিয়া অন্যতম। এসব রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে বাইরের খোলা পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। যত্রতত্র রাস্তাঘাটের ট্যাপ থেকে পানি পান করবেন না। রাস্তার পাশে খোলা খাবার ও সরবত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এসব সরবতের দোকানে ব্যবহৃত পানির মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সর্বপরি, রাস্তায় ও খোলা পরিবেশে বিক্রি হওয়া যাবতীয় খাবার ও পানীয় বর্জন করুন।

টাইফয়েড জ্বর হলে যা করবেন

জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সাত দিনের আগে আপনি টাইফয়েডের কথা মাথায়ও আনবেন না। জ্বর যদি সাত দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে সেটি টাইফয়েড বলে বিবেচিত হবে। কারণ, ওষুধ না খেলে সাত দিন বা ১০ দিনের আগে এই জ¦র কমবে না। ওষুধ খেলেও অনেক সময় ৭ থেকে ১০ দিন লেগে যায় টাইফয়েড জ্বর সারাতে। অতএব, কোনো জ্বর যদি থাকে সঙ্গে সঙ্গে টাইফয়েড চিন্তা করবেন না। যদি শরীরের তাপমাত্রা ১০৩ থেকে ১০৪, আবার কখনো ১০০ তে নেমে আসছে, এমন পরিস্থিতি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

যেসব সতকর্তা মেনে চলবেন

♦ খাবার পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ ও জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। পানি পরিশুদ্ধ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে একটি পরিষ্কার পাত্রে সংরক্ষণ করা।

♦ ফিটকিরি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে।

♦ পুকুর বা নদীর পানি ও সাপ্লাইয়ের ট্যাপের পানি সরাসরি পান ও ব্যবহার করবেন না।

♦ রান্নার বাসনপত্র নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন। কাঁচা শাকসবজি ও ফলমূল কখনোই ভালো করে না ধুয়ে খাবেন না। বাসি খাবার পরিহার করুন।

♦ বাইরের খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। গরমে বাইরে বিক্রি হওয়া পানি, শরবত, জুস প্রভৃতি পান করবেন না।

♦ খাবার গ্রহণের আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে দুই হাত ভালো মতো ধুয়ে নিন।

৩০ জুন ২০২২, ০৪:০৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।