• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাহরি ও ইফতারে কেমন খাবার খাবেন

সাহরি ও ইফতারে কেমন খাবার খাবেন

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বছর ঘুরে আবার এলো সিয়াম সাধনার মাস রমজান। মুসলমানদের কাছে এই মাসের তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুরো একমাস রোজা রাখার জন্য মুসল্লিরা নানা রকম প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। তবে রমজানে রোজার জন্য সবার আগে ইফতার ও সাহরি নিয়ে পরিকল্পিত প্রস্তুতি থাকা উচিত।

এবার গরমের মধ্যে রোজা পড়েছে। কাজেই ইফতার ও সাহরিতে খাবার নির্বাচনেও ভিন্নতা আনতে হবে। এ নিয়ে পুষ্টিবিদরা নানা রকম পরামর্শ দিয়েছেন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, রোজা পালন করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী, এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

এ নিয়ে গণমাধ্যম ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ সোনিয়া সাবরিন। রাজধানীর খিলখেতের লেকসিটি ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারে কর্মরত এই পুষ্টিবিদ বলেছেন, রমজান মাসে আমাদের খাবারের রুটিনে অনেকটা পরিবর্তন আসে। সাহরি, ইফতার ও রাতের খাবার থেকেই আমাদের দৈনিক ক্যালরি, ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করতে হয়। তাই রমজান মাসে সাহরি, ইফতার ও রাতের খাবার, তিনটিই আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাহরি কেমন হবে

পুষ্টিবিদ সালভিয়া আনজুম জানিয়েছেন, সারা দিন রোজা রেখে সুস্থ ও সতেজ থাকার জন্য সাহরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই সাহরি খেতে চান না অথবা খুব তাড়াতাড়ি খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে যান। এটা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। সাহরিতে একটু সময় নিয়ে পরিমিত পরিমাণে সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন।

ভাতের সঙ্গে সবজি, মাছ অথবা মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া দুধ-কলা-ভাত অথবা আম-দুধ-ভাত খাওয়া যায়। ভাত, সবজি ও মাছ খাওয়ার পর এক কাপ দুধ ও খেজুর খেলে সারা দিন সুন্দরভাবে রোজা রাখা যায়।

সাহরিতে যথাসম্ভব সালাদ, ডাল, ভাজা সবজি বা মাছ এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে অ্যাসিডিটি হতে পারে। সাহরি খাওয়ার পর একটি বা দুটি খেজুর খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়, যা সারা দিন পানিশূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে।

কেমন হবে ইফতার

পুষ্টিবিদরা বলছেন, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে যেকোনো একটি বা দুটি আইটেম রাখা যেতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই ভারি ভাজাপোড়া ও একাধিক আইটেম রাখা উচিত হবে না। যেমন- ছোলার সঙ্গে পেঁয়াজি খেলে, সেদিন বেগুনি বাদ দিন। আবার যেদিন পেঁয়াজি খাবেন, সেদিন বেগুনি বাদ দিন। এ ছাড়া রমজানে শরীরের সুস্থতা ও পুষ্টি চাহিদার কথা বিবেচনা করলে ইফতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাধারণত মুখরোচক বিভিন্ন খাবার দিয়ে ইফতার মেনু তৈরি করে থাকি কিন্তু আমাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদার কথা বিবেচনা করি না।

রাতের খাবার কেমন হওয়া উচিত

অনেকেই ইফতারে অনেক বেশি খাবার খেয়ে থাকেন। ফলে তারা রাতের খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে যান। এটা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। অল্প পরিমাণে হলেও সহজপাচ্য খাবার দিয়ে রাতের খাবার সেরে নেওয়া উচিত। যেমন রাতের খাবারে সাদা ভাতের সঙ্গে সবজি ও এক টুকরা মাছ অথবা মাংস থাকতে পারে। কখনো কখনো রুটি-সবজি, হালিম অথবা স্যুপ খাওয়া যেতে পারে। ইফতারে যদি ডাল জাতীয় খাবার, যেমন ছোলা, পেঁয়াজি, বেসন দিয়ে ভাজা চপ ইত্যাদি খাওয়া হয়ে থাকে তাহলে রাতের খাবারে ডাল না খাওয়াই ভালো।

যেসব খাবার বেশি খাবেন না

♦ভাজাপোড়া খাদ্য যেমন পেঁয়াজু, বেগুনি, বেসন দিয়ে তৈরি চপ।
♦অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত বা কৃত্রিম জুস।
♦তেহারি, বিরিয়ানি, কাবাব।
♦অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাদ্য।

ইফতার শুরু করবেন কোন খাবারে

পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রথমে খেজুর দিয়ে রোজা ভেঙে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর মূল ইফতার শুরু করা উচিত। এতে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা যায়।
♦পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
♦চেষ্টা করুন পানিযুক্ত মৌসুমি ফল খেতে।
♦তাড়াহুড়ো না করে আস্তে আস্তে সময় নিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।

সতর্কতা:
ইফতারে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত অথবা কৃত্রিম জুস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যারা দীর্ঘমেয়াদি কোনো অসুখে ভুগছেন বা হৃদরোগ, কিডনিজটিলতা, হজমজনিত রোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

০২ এপ্রিল ২০২২, ০৮:০৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।