• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুষ্টিগুণে ভরা প্রকৃতির সেরা দান ‘সাঞ্চি শাক’

পুষ্টিগুণে ভরা প্রকৃতির সেরা দান ‘সাঞ্চি শাক’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

সুস্থ শরীরের জন্য সতেজ শাক-সবজি খাওয়ার বিকল্প নেই। আমাদের দেশে প্রাকৃতিকভাবেই নানা প্রজাতির শাক-সবজি জন্মে। দেখতে আগাছা মনে হলেও, এসব শাক-সবজি বেশ জনপ্রিয়। খেতে যেমন সুস্বাদু, পুষ্টিগুণেও অনন্য প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠা শাকগুলো। তেমনই একটি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও জনপ্রিয় শাক ‘সাঞ্চি শাক’। এটি দেশের একেক এলাকায় একেক নামে পরিচিত।

প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক কি আছে সাঞ্চি শাকে-

পরিচয়:

সাঞ্চি শাকের বৈজ্ঞানিক নাম Alternanthera sessilis। এটি Amaranthaceae পরিবারভুক্ত। বাংলাদেশের ডোবা-নালা, খাল-বিল ও রাস্তার ধারে এই শাক পাওয়া যায়। এটি কোথাও কোথাও মালঞ্চ শাক, সেঁচি শাক, বর্মা শাক, শান্তি শাক, শালিঞ্চে শাক, চিড়া শাক, ইছা শাক বা মলচা শাক নামেও পরিচিত।

এই শাকের ইংরেজি নাম 'alligator weed'। এর আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা। শাক হিসেবে এটি খাওয়ার প্রচলন হলেও সাঞ্চি শাকের ঔষধি গুণাগুণ চমৎকার। এই শাক বর্ষজীবী ভূ-শাষিত অন্যান্য উদ্ভিদের মতো জন্মে।

পুষ্টি উপাদান:

ন্যাচার হোমিপ্যাথি, হেলথ টাইমস বেনিফিট ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, সাঞ্চি শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ক্যালসিয়াম। এ ছাড়া এতে আছে পর্যাপ্ত প্রোটিন, কাবোহাইড্রেট, ফাইবার বা খাদ্যআঁশ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন এ, আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।

ওষুধি ব্যবহার:

হোমিওপ্যাথির নির্ভরযোগ্য পরামর্শক ‘ন্যাচার হোমিপ্যাথি’ ওয়েবসাইট বলছে, নিয়ম মেনে সাঞ্চি শাক খেলে কয়েকটি রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। যেমন-

কৃমিনাশক: এই শাক কৃমিনাশ করে। দুই চা-চামচ সাঞ্চি শাকের রস ও সমপরিমাণ গরম পানি মিশিয়ে খালি পেটে খেলে ক্রিমিনাশ হয়।

অবসাদ দূর করে: সাঞ্চি শাক দেহের দুর্বলতা ও অলসতা দূর করতে সহায়তা করে। এটি ক্ষুধামন্দা দূর করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: নিবন্ধে বলা হয়েছে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নিয়মিত সাঞ্চি শাক খাওয়া উচিত। এই শাকের পাতা সেদ্ধ করে খেলে দ্রুত রক্তচাপ কমে যায়।

চোখের জ্যোতি বাড়ায়: সাঞ্চি শাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, যা চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই কার্যকরী।

প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায়: যাদের দীর্ঘদিন বাচ্চা হয় না, তারা নিয়ম করে সাত দিন সাঞ্চি শাক খেলে বাচ্চা ধারণ বা প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতি মাসে টানা সাতদিন করে এই নিয়ম মানলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে তিনমাসের বেশি অর্থাৎ প্রতিমাসে একবার এই নিয়ম মানা যায়।

অন্যান্য উপকারিতা:

ন্যাচার হোমিপ্যাথি, হেলথ টাইমস বেনিফিট ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, সাঞ্চি শাক-

ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ করে: ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে সাঞ্চি শাক অত্যন্ত কার্যকরী। প্রাকৃতিক ভাবে ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে এই শাক খাবার তালিকায় রাখুন।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে: দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিরাময়ে এই শাক খেতে পারেন। এতে পেটের সমস্যা দূর হবে। কারণ এতে রয়েছে খাদ্যআঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সহায়তা করে।

রক্ত পরিশোধন করে: এই শাকের পাতা ও ডাঁটা রস করে নিয়মিত পান করলে রক্ত পরিশোধন হয়। এতে রক্তে মিশে থাকা ক্ষতিকর উপাদান মলমূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধী নানা ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। ফলে নিয়মিত এটি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

পাকস্থলি ভালো রাখে: সাঞ্চি শাকে রয়েছে প্রচুর খাদ্যআঁশ, যা হজমশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি পাকস্থলির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

দাঁত ভালো রাখে: দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে ক্যালসিয়াম ও আয়রন। যা সাঞ্চি শাকে পর্যাপ্ত রয়েছে।

তথ্যসূত্র- ন্যাচার হোমিওপ্যাথি, হেলথ টাইমস বেনিফিট ও উইকিপিডিয়া।

৩০ মার্চ ২০২২, ০৮:০৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।