• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে সোনামণিদের যত্ন

গরমে সোনামণিদের যত্ন

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বসন্ত বিদায়ের পথে। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের আবহ। সামনে আসছে ভয়াবহ গরম। গরমে প্রশান্তির জন্য আমরা কত কিছুই না করে থাকি। বারবার গোসল করা, ঠাণ্ডা পানীয় পান, বাতাস লাগানোসহ কত উপায়ই না আমরা খুঁজে ফিরি। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য গরমের কষ্ট দূর করা খুব কষ্টসাধ্য নয়। তবে বিপত্তি শিশুদের বেলায়।

কারণ শিশুরা তাদের সমস্যার কথা বলতে পারে না। শিশুরা কেবল কান্নাকাটি করে তাদের কষ্ট বুঝানোর চেষ্টা করে। বসন্ত শেষে হঠাৎ গরমে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেশি। চিকিৎসকরা বলছেন, এই সময়ে ঋতু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া এলোমেলো আচরণ করে। এই সময়টা শিশুদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। শিশুদের গরম লেগে গেলে নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডা-কাশিও হতে পারে।

প্রিয় পাঠক, গরমে শিশুর বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। তাই আমরা আপনার শিশু সন্তানের সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছি। চলুন দেখে নেয়া যাক।

গরমে শিশুর খাদ্য:

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, গরমে শিশুদের খাদ্য তালিকায় হালকা, পুষ্টিকর ও সহজে হজম হয় এমন খাবার রাখতে হবে। খাবার অবশ্যই নরম ও মসলামুক্ত হতে হবে। বাইরের তৈরি খোলা খাবার, প্যাকেটজাত খাবার ও ভাজা-তেল জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। নরম খাবার বাসায় বানিয়ে আপনার সন্তানকে খাওয়ান। মাছ-মাংস গরমের দিনে কম খাওয়ান। ফলের জুস বাসায় বানিয়ে খাওয়ানো সবচেয়ে নিরাপদ।

শিশুকে পর্যাপ্ত পানি পান করান। শিশুরা গরমের দিনে বেশি ঘামে। শিশু যত ঘামবে, তাকে ততবার পানি পান করাতে হবে। শিশুর শরীরের ঘাম সুতি কাপড়ের গামছা বা তোয়ালে দিয়ে মুছে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে ঘাম যেন কোনো অবস্থাতেই শরীরে বসে না যায়।

শিশুর জন্য গরমের পোশাক:

গরমের দিনে সুতি কাপড় পরা সবচেয়ে আরামদায়ক। আপনার শিশু সন্তানকেও এ ধরণের হালকা পাতলা কাপড় পরাতে পারেন। বাজারে এখন শিশুদের জন্য বিশেষ ধরণের সুতি কাপড়ের পাতলা পোশাক পাওয়া যায়, যা দামেও সস্তা। গরমের দিনে শিশুদের হাতা কাটা কাপড় পরাতে পারেন। এতে আপনার শিশুর বাতাসের চলাচল ভালো থাকবে।

নিয়মিত গোসল:

গরমের দিনে প্রাপ্তবয়স্করা দু-তিনবার গোসল করে। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বিপজ্জনক। তাই, আপনার শিশু সন্তানকে নিয়মিত একটি নির্ধারিত সময়ে সাভাবিক ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করান। গরমের দিনে শিশুর শরীরে ঘামাচি বা র‌্যাশ বের হতে পারে। নিয়মিত সাভাবিক ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করালে এই সমস্যা দূর হবে। শিশুর শরীরের ভাঁজযুক্ত জায়গাগুলোতে পানি পৌছান। কারণ এই ভাঁজগুলোতে পানি না পৌছালে সেখানে স্যাঁতসেঁতে হয়ে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই, নিয়মিত শিশুর শরীরের ভাঁজগুলো পরিষ্কার করুন।

গরমের দিনে শিশুর চুল:

গরম থেকে বাঁচতে চুল ছোট করা খুবই সহায়ক। তাই, গরমের দিনে আপনার ছোট্ট খুকুমণির চুল কেটে দিতে পারেন। এতে মাথায় ঘামাচি বা র‌্যাশ হওয়ার ঝুঁকিও কমে যাবে। মাথায় খুশকিও হবে না। কারণ মাথা ঘামলে চুলের গোড়ায় তা জমে গিয়ে ইনফেকশন তৈরি করে। ফলে মাথার ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়।

শিশু যেখানে ঘুমায়, যেখানে খেলে:

গরমে দিনে শিশুর ঘুমানোর জায়গা অবশ্যই সাভাবিক ঠাণ্ডা রাখতে হবে। ঘরে যেন প্রচুর আলো-বাতাস প্রবেশ করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গরমের দিনে আমাদের দেশে প্রচুর মশা জন্মে। তাই, শিশুকে ঘুম পাড়ানোর পর অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশার কয়েল শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। শিশুকে মাঝে মাঝে ঘর থেকে বাইরে বের করে ঠাণ্ডা ও খোলা বাতাসে নিয়ে যাবেন। এতে শিশু প্রাণোবন্ত থাকবে।

শিশুর দেহে কি লাগাবেন:

গরমের দিনে শিশুকে গোসল করানোর পর তেল, লোশনসহ যাবতীয় প্রসাধনী ব্যবহার বন্ধ রাখুন। গোসল করানোর পর শিশুর শরীর শুকিয়ে গেলে গলা ও পায়ের ভাঁজে পাউডার ব্যবহার করুন। এতে ঘামাচি ওঠা বন্ধ হবে।

বিশেষ সতর্কতা:

গরমের দিনে শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য উপরোক্ত নির্দেশনাবলী অনুসরণের পাশাপাশি সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। রাতে ঘুমানোর সময় ঘরের বাতাস প্রবেশের পথ খোলা রাখুন। মশারি টানিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। এ ছাড়া শিশুর অন্য কোনো ধরণের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হোন।

তথ্যসূত্রধ: হেলথ লাইন ও চাইল্ডস ট্রিপস ডট কম।

২৮ মার্চ ২০২২, ০৭:৫১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।