• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাপে কাটলে যা করবেন, বাঁচবেন যেভাবে!

সাপে কাটলে যা করবেন, বাঁচবেন যেভাবে!

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বসন্ত বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে। আসছে গ্রীষ্ম। গ্রীষ্মে বাংলাদেশে সাপের কামড়ে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। সচেতনতার অভাব, বিষধর সাপ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণার না থাকায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনাটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বরং এটি বৈশ্বিক ঝুঁকি। বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ সাপের দংশনে মারা যায়।

বিবিসি বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাপের কামড়ে সবচেয়ে বেশি মারা যায় ভারতে। দেশটিতে সর্পদংশনে মৃত্যুর হার ৪৩ শতাংশ। যাদের অধিকাংশই বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ে মারা যান। শ্রীলংকাতেও এই সাপের উপদ্রব বেশি।

তবে বাংলাদেশে চন্দ্রবোড়া সাপ দেখা গেলেও তা সংখ্যায় কম। বাংলাদেশে বেশি দেখা যায় গোখরা, কালাস বা কাল কেউটে। রাজশাহী অঞ্চলে মাঝে মাঝে চন্দ্রবোড়া বা রাসেল ভাইপার চোখে পড়ে।

সর্প বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে আমাদের এই পর্বটি সাজানো হয়েছে। সাপে কাটলে কি কি করণীয় সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। চলুন দেখে নেয়া যাক-

বিষক্রিয়ার চিকিৎসা:

বিখ্যাত সর্প বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক লেসলি বয়ার বিবিসিকে বলেছেন, ‘প্রায় ১২০ বছর ধরে আমরা জানি সাপের বিষ কাটানোর ওষুধ বা অ্যান্টিভেনম কীভাবে তৈরি করতে হয়। অ্যান্টিভেনম বা সাপে কামড়ানোর ওষুধ তৈরি করতে সংগ্রহ করতে হয় সাপের বিষ। ফ্রান্সের পাস্তুর ল্যাবরেটরিতে বিজ্ঞানীরা বহুকাল আগে অ্যান্টিভেনম তৈরির কিছু কাজ করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীর প্রবন্ধে বলা হয়েছে, সচেতনতার অভাবেই বিষধর সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যু হতে পারে। ওঝা বা বেদের মাধ্যমে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে চিকিৎসা করার কারণে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা বেশি।

যা করবেন:

♦সাপে কাটলে আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে বসে থাকুন।
♦আক্রান্ত অঙ্গ নাড়াচাড়া করবেন না।
♦একটি লম্বা কাঠ ও কাপড়ের সাহায্যে আক্রান্ত স্থানটি বেঁধে ফেলুন।
♦খুব বেশি শক্ত করে বাঁধবেন না, এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
♦এমনভাবে বাঁধতে হবে, যেন আক্রান্ত অঙ্গ ও কাপড়ের মাঝে কষ্ট করে একটি আঙুল ঢোকানো যায়।
♦আক্রান্ত স্থানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে, রক্তক্ষরণ হলে, চোখের পাতা পড়ে গেলে, ঘাড় শক্ত রাখতে না পারলে, ♦হাত-পা অবশ হয়ে এলে ও শ্বাসকষ্ট হলে একটুও দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

যা করবেন না:

◊আক্রান্ত স্থান কাটবেন না,
◊দড়ি দিয়ে খুব শক্ত করে বাঁধবেন না,
◊আক্রান্ত স্থান থেকে মুখের সাহায্যে রক্ত বা বিষ টেনে বের করার চেষ্টা করবেন না,
◊আক্রান্ত স্থানে গোবর, শিমের বিচি, আলকাতরা, ভেষজ ওষুধ বা কোনো প্রকার রাসায়নিক লাগাবেন না এবং
◊অ্যান্টিহিস্টামিন ইনজেকশন প্রয়োগ করবেন না।

বিশেষ সতর্কতা:

সাপের কামড়ে মৃত্যুরোধে সচেতনতা নিয়ে কাজ করছে এমন সংস্থাগুলো বলছে, সাপের কামড় থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে-

⇒রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টানিয়ে ঘুমানো,
⇒ঝোঁপ-ঝাড় বা আগাছার ভেতরে হাটার সময় পায়ে মোটা প্লাস্টিকের জুতা ব্যবহার এবং
⇒বসতবাড়ির আশেপাশের ঝোঁপঝাড় ও জঞ্জাল পরিষ্কার রাখা।

২২ মার্চ ২০২২, ০৫:৪২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।