• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইউক্রেনের একাংশের স্বাধীনতা চায় রাশিয়া, কিয়েভে অস্ত্র দেবে না তুরস্ক

ইউক্রেনের একাংশের স্বাধীনতা চায় রাশিয়া,  কিয়েভে অস্ত্র দেবে না তুরস্ক

প্রতিকী ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযানের মূল লক্ষ্য দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দোনেস্ক ও লুহানস্ককে (ডনবাস রিপাবলিক) স্বাধীন করা। ইতোমধ্যে অভিযানের প্রাথমিক পর্যায় শেষও করেছে রুশ বাহিনী। এদিকে প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধ শেষ হলেও এখনো ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। রুশ হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। এ ছাড়া ইউক্রেনে আর ড্রোন ও অস্ত্র সহায়তা দেবে না তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান এমন ঘোষণা দিয়েছেন।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ’স মেইন অপারেশনস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান সের্গেই রুডস্কয়।

বিবিসিকে রুডস্কয় বলেন, ‘ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিশেষ সামরিক অভিযানের প্রথম পর্যায় শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধ করার মতো সক্ষমতাও ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে।’

‘এ কারণে আমরা এখন আমাদের মূল লক্ষ্যে মনযোগ দিচ্ছি; আর সেটি হলো ডনবাস রিপাবলিককে স্বাধীন করা। ডনবাস রিপাবলিক থেকে ইউক্রেনের সেনা বাহিনীর মনযোগ অন্যদিকে সরানোর কৌশল হিসেবে কিয়েভ ও তার আশপাশের এলাকায় বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে।’

বিবিসি বলছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে বেশ কয়েক বছর টানাপোড়েন চলছিল। এই টানাপোড়েনের সূত্রপাত ২০০৮ সালে; ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও ক্ষেপে উঠে রাশিয়া।

ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো; কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।

অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দোনেস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।

এদিকে রুশ বিমান বাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের ভিন্নিতসিয়ায় একটি কমান্ড সেন্টার ধ্বংস হয়ে গেছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রুশ বাহিনীর ছোড়া ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এই কমান্ড সেন্টারটিতে আঘাত হানে।

এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ভিন্নিতসিয়া শহরে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর কমান্ড সেন্টারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ দখলদার বাহিনী।’

‘কমান্ড সেন্টারটি লক্ষ্য করে অন্তত ৬টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। দুই/তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের এয়ার ডিফেন্স ইউনিট ধ্বংস করতে পেরেছে, তবে বাকিগুলোর আঘাতে কমান্ড সেন্টার ভবনসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবন ও স্থাপনা সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে গেছে।’

অপরদিকে রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনকে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগন শুক্রবার রাজধানী আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

এ সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান বলেন, ‘এই ব্যাপারটি মিমাংসিত। আমাদের সম্পত্তি এবং আমাদের নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এটি প্রয়োজন। সুতরাং, এই অস্ত্র ইউক্রেনে যাচ্ছে না।’

২৬ মার্চ ২০২২, ০৩:৫১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।