• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সুস্বাস্থ্যের জন্য অনন্য ‘লাল চিনি’

সুস্বাস্থ্যের জন্য অনন্য ‘লাল চিনি’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

প্রাত্যহিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য এক অনুসঙ্গ চিনি। নাম শুনে অনেকেই আতকে উঠেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, চিনি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্যউপাদান। অতিরিক্ত চিনি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতির কারণ বটে। তবে পরিমিত স্বাস্থ্যকর চিনির উপকারিতা অপরিসীম।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, বাজারে প্রচলিত সাদা চিনির পরিবর্তে লাল চিনি অধিকতর স্বাস্থ্যকর। এটি খেলে নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। তবে তা খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিমিতি বজায় রাখতে হবে।

প্রিয় পাঠক, এই পর্বে আমরা লাল চিনির উপকারিতা ও পুষ্টি নিয়ে কিছু তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। চলুন এক নজরে দেখে নিই, কী আছে লাল চিনিতে-

লাল চিনি কী?
এটি প্রাকৃতিক বাদামি চিনি, কাঁচা চিনি বা পুরো আখের চিনি। যা শর্করা বা মাদার অ্যালকোহল (আংশিকভাবে বাষ্পীয় আখের রস) থেকে গুড়ের একটি ছোট থেকে বড় পরিমাণ ধরে রাখে। ওজনের উপর ভিত্তি করে, বাদামী বেত চিনি যখন সম্পূর্ণ পরিমার্জিত ৭০% সাদা চিনির ফলন দেয়। চিনির স্ফটিকগুলিতে গুড় কতটা ছিল তার উপর নির্ভর করে ডিগ্রি, যা ঘুরে দেখা যায় বাদামী চিনির কেন্দ্রীভূত ছিল কিনা, তখন প্রাকৃতিক লাল চিনির পরিমাণে গুড় বেশি থাকায় এটিতে গৌণ পুষ্টিগুণ এবং খনিজ উপাদান রয়েছে। কিছু প্রাকৃতিক বাদামী শর্করার নির্দিষ্ট নাম এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং তারা টারবিনেডো, ডিমেরার বা কাঁচা চিনি হিসাবে বিক্রি করা হয় যদি সেগুলি একটি বড় ডিগ্রিতে সেন্ট্রিফিউজ করা হয়। এগুলির উৎস দেশ অনুসারে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়: যেমন- পানেলা, রাপাদুরা, গুড়, মাসকোভাডো, পাইলনসিলো ইত্যাদি।

কীভাবে এলো লাল চিনি?
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে নতুন একীভূত পরিশোধিত শ্বেত চিনি পাওয়া যেতে শুরু করে। যা লাল চিনির উৎপাদনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখে না। লাল চিনির বিরুদ্ধে একটি তীব্র অভিযান চালিয়েছিল এবং বাদামী চিনির মধ্যে থাকা অণুজীবগুলির মাইক্রোস্কোপিক ফটোগ্রাফ প্রজনন করে। প্রচেষ্টাটি এতটাই সফল হয়েছিল যে, ১৯০০ সালের মধ্যে একটি সর্বাধিক বিক্রিত "কুকবুক" সতর্ক করে দিয়েছিল যে, ব্রাউন সুগার নিম্নমানের এবং এটি "এক মিনিটেই পোকামাকড়" দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার জন্য সংবেদনশীল। অপসারণের এই প্রচারটি অন্যান্য খাতেও কাঁচা বা বাদামি চিনি যেমন তৈরি করা হয় বলে অনুভূত হয়েছিল। তবে এর পরেই লাল চিনির কদর বাড়তে থাকে।

পুষ্টিগুণ:
উইকিপিডিয়া ও হেলথ লাইনে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, লাল চিনিতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রনসহ নানান খনিজ উপাদান।
বিখ্যাত পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্যগবেষক ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন এক গবেষণাপত্রে বলেছেন, চিনি রিফাইন করে সাদা করার জন্য চিনির সঙ্গে যুক্ত প্রাকৃতিক ভিটামিন ও মিনারেল সরিয়ে শুধু কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা রাখা হয়। কিন্তু লাল চিনি উৎপাদনে এই প্রক্রিয়াটি অনুপস্থিত থাকে। তাই এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

প্রতি ১০০ গ্রাম লাল চিনিতে রয়েছে-

ক্যালরি- ১৬১৯ কিলোক্যালরি,
কার্বোহাইড্রেট- ৯৯.৯৮ গ্রাম,
সুগার- ৯৯.৯১ গ্রাম,
ভিটামিন বি২- ০.০১৯ মিলিগ্রাম,
ক্যালসিয়াম- ১ মিলিগ্রাম,
আয়রন- ০.০১ মিলিগ্রাম,
পটাসিয়াম- ২ মিলিগ্রাম,
জলীয় অংশ- ০.০৩ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা:
জনপ্রিয় স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইন, হেলথ বেনিফিট টাইমস ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, লাল চিনি-

হাঁড় মজবুত করে: এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা হাড় শক্ত করে। এ ছাড়া এটি দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়। ক্যাভিটি এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকে দাঁত সুরক্ষিত রাখে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: লাল চিনিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং শরীরের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এতে থাকা খনিজ উপাদান ও প্রয়োজনীয় খাদ্যউপাদানগুলো দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

লিভার সুস্থ রাখে: লিভার সুস্থ রাখতে লাল চিনির জুড়ি মেলা ভার। এতে থাকা পটাসিয়াম ও আয়রন লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

জন্ডিসের প্রকোপ কমায়: লাল চিনিতে থাকা প্রাকৃতিক খনিজ উপাদানগুলো জন্ডিসের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া এটি জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: লাল চিনি অপরিশোধিত হওয়ায় এর পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে। ফলে এতে থাকা খাদ্যআঁশ হজমশক্তি বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

অ্যাসিডিটি নিরাময় করে: আখের রসে উৎপন্ন লাল চিনিতে থাকে অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ। যা অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করে।

ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে: লাল চিনিতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি২। যা আমাদের দেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
সতর্কতা:

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন, হেলথ বেনিফিট টাইমস ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

০৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:১১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।