• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

পুষ্টির সেরা উপাদান রঙিন ‘বিট’

পুষ্টির সেরা উপাদান রঙিন ‘বিট’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বাহারী রঙে রঙিন সবজি বিটরুট। অনেকে বাজারে গিয়ে এই সবজিটি ক্রয়ে আগ্রহ দেখায় না। তবে যারা এই সবজির গুণাগুণ ও পুষ্টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, তারা বিটরুট কিনতে মোটের দেরি করেন না। অন্যান্য সবজির চেয়ে বিটরুট পুষ্টিমানে অনেক এগিয়ে। গাজর ও বিটরুট অনেকটা একই গুণাগুণে ভরা। প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক কি আছে বিটরুটে-

পরিচয়:
বিট আসলে একধরনের মূলজাতীয় সবজি। অর্থাৎ বিটগাছের মূলই হচ্ছে এর প্রধান খাদ্যোপযোগী অংশ। সাধারণত, এই বিটের মূল গাঢ় বেগুনি-লাল বর্ণের হয়ে থাকে। বিটের চোখজুড়ানো লাল রং আসলে বিটালাইন বা এন্থোসায়ানিনযুক্ত রঞ্জক পদার্থেরই অবদান।

এ ছাড়া হলুদ, সাদাসহ আরও নানান রঙের বিটরুট পাওয়া যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের বিটরুট রয়েছে। তবে আমাদের দেশে বেশি পাওয়া যায় বেগুনী রঙের বিটরুট। এটি রসালো একটি সবজি।

পুষ্টিগুণ:
জনপ্রিয় স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইন ও হেলথ বেনিফিট টাইমসে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, বিটরুট মিষ্টি স্বাদের একটি সবজি। এটি দেখতে আলুর মতো। কিছু শালগম আকৃতির হয়ে থাকে। এটি কাঁচা অবস্থায় সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়।

এতে রয়েছে প্রচুর জলীয় অংশ, প্রোটিন, ক্যালরি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ক্লোরিন, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম বিটরুটে রয়েছে-

ক্যালরি- ৪৩ শতাংশ,
জলীয় অংশ- ৮৮ শতাংশ,
প্রোটিন- ১.৬ গ্রাম,
কার্বোহাইড্রেট- ৯.৬ গ্রাম,
সুগার- ৬.৮ গ্রাম,
খাদ্যআঁশ- ২.৮ গ্রাম এবং
চর্বি- ০.২ গ্রাম।

উপকারিতা:
হেলথ লাইন, হেলথ বেনিফিট টাইমস ও বিবিসি ডট ফুডে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, বিটরুট-

রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে: বিটে রয়েছে পর্যাপ্ত নাইট্রেটস, যা মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে। ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে।

লিভার ভালো রাখে: বিটে থাকা বেটাইন নামক উপাদান লিভার ভালো রাখতে সহায়তা করে। এটি লিভারের টক্সিন বের করে দেয়।

ঋতুচক্র স্বাভাবিক করে: অনেকেই ঋতুচক্র সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগে থাকেন। কিন্তু নিয়মিত বিটরুট খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। এটি ঋতুচক্র ধারাবাহিক করে।

ক্যান্সার দূরে রাখে: বিটে রয়েছে অ্যান্টি-টিউমার গুণাগুণ। গবেষকরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কোষ উজ্জীবিত করতে বিটের জুস খুবই কার্যকরী। এটি নুতন কোষ গঠনে সহায়তা করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: যাঁরা উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা দিনে অন্তত দুই গ্লাস বিট জুস পান করুন। এতে থাকা নাইট্রেট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: বিট হল হাই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এতে করে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: পুরনো কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে বিটরুটের জুড়ি মেলা ভার। এটি হজমশক্তি বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিরাময় করে।

আয়রনের ঘাটতি পুরণ করে: বিটে রয়েছে প্রচুর আয়রন। যা লোহিত রক্তকণিকার জন্য অত্যন্ত জরুরি উপাদান। যে কারণে রক্তস্বল্পতায় যাঁরা ভুগছেন, তারা এটি বেশি করে খেতে পারেন।

পেশি মজবুত করে: বিটে থাকা খনিজ উপাদান প্রাকৃতিকভাবে দেহের পেশি মজবুত করতে সহায়তা করে। এটি মাসল বৃদ্ধি করে।

ত্বক উন্নত করে: বিটে থাকা অ্যান্টি-এজিং উপাদান ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ দূর করে। নিয়মিত বিট জুস খেলে ত্বকের অন্যান্য সমস্যাও দূর হয়।

বিষণ্নতা দূর করে: মানসিক স্থিরতার জন্য বিট জুস খুবই কার্যকরী। এটি বিষণ্নভাব দূর করে।

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন, হেলথ বেনিফিট টাইমস ও বিবিসি ডট ফুড

 

এবি/এসএন

০৫ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:২৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।