• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ডিমের খাওয়ার উপকারিতা

ডিমের খাওয়ার উপকারিতা

প্রতিকী ছবি

স্বাস্থ্য ডেস্ক

আমরা সবাই কম বেশি ডিম খাই। কারও হাঁসের ডিম ভাল লাগে, আবার কেউ পছন্দ করেন মুরগির ডিম। কিন্তু ডিম খাওয়ার উপকারিতা বা এর পুষ্টিগুণ কি তা সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা নেই। প্রথমত ডিম হচ্ছে সহজলভ্য এবং তুলনামূলক ভাবে সস্তায় পাওয়া যায় এমন আমিষের সমৃদ্ধ একটি উৎস।

যাদের ওজন বেশি বা যারা হার্টের রোগী তারা অনেকেই ডিম খান না। কারণ তারা ভাবেন যে ডিম খেলে ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাবে, হার্ট অ্যাটাক হবে ইত্যাদি। যা আদতে একটি ভ্রান্ত ধারণা। তবে যেসকল ডায়াবেটিস রোগীদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত ডিম না খাওয়াই ভালো।

ডিমের পুষ্টিগুণ
ডিমে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, জিংক, কোলেস্টেরল, সেলেনিয়াম, ফলেট, এনার্জি, ফ্যাট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-কে এবং ভিটামিন-ই থাকে।

ডিম মস্তিষ্কের জন্য উপকারী
রেগুলার ডিম খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়, মস্তিষ্ক সতেজ থাকে কারণ ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলিন থাকে। কোলিন ভিটামিন-বি পরিবারে অংশ আর ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডিম থেকে নেয়া কোলিন হৃদরোগ, স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও ফ্যাটি লিভারের মত রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে।

চোখের যত্নে ডিমের উপকারিতা অনেক
বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। ডিমে থাকা পুষ্টিগুণ চোখের দৃষ্টি অবক্ষয় জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ডিমে থাকা ভিটামিন-এ এবং ওমেগা-৩ চোখের রেটিনাকে ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষা দেয়। ডিমে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা অন্যান্য চোখের রোগ ও জীবাণু খেকে চোখকে রক্ষা করে থাকে। গবেষকদের মতে উদ্ভিদে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থেকে ডিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানুষের শরীরে বেশি প্রভাব ফেলে।

ওজন কমাতে ডিম উপকারী
যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন তারা ওজন কমাতে অনেক ধরনের পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট নিয়ে থাকেন। যার কারণে শরীরে নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। ডিম প্রোটিনের প্রাকৃতিক উৎস। নিয়মিত ডিম খেয়ে শরীরে ওজনের ভারসাম্য ঠিক রাখা যায় এবং এতে করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না।

ওমেগা-৩ এর উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে ডিম
ওমেগা-৩ হচ্ছে দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় চর্বি। যা মানুষের কোষ ঝিল্লিকে কাজ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তৈলাক্ত মাছ ওমেগা-৩ এর প্রধান উৎস আর ডিমের মধ্যেও ঐ একই ধরনের ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। হৃদপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ওমেগা-৩ খুবি গুরুত্বপূর্ণ।

ডিম কোলিনের অন্যতম সেরা উৎস
কোলিন পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আমাদের বেশির ভাগ মানুষের ধারনা নেই, কোলিন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কোষের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের জন্য কোলিন খুবি প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য কোলিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু ডিমে কোলিন থাকে তাই গর্ভাবস্থায় মায়েরা প্রতিদিন ডিম খেতে পারেন।

ভালো কোলেস্টেরলের (এইচডিএল) মাত্রা বাড়াতে উপকারী ভূমিকা রাখে
ডিম উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল) বা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। এইচডিএল হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করে। এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে ডিম সহায়ক। তাই যারা ভাবেন যে ডিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে তাদের ধারনা ভুল। এজন্য সবাই নিয়মিত ডিম খেতে পারেন। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য ডিম হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

পেশি গঠনে ডিমের ভূমিকা অনেক
ডিম হলো প্রোটিনের দুর্দান্ত উৎস আর প্রোটিন শরীরের টিস্যু গঠনে ভূমিকা রাখে এবং শক্তি বজায় রাখতে সহায়তা করে। এজন্য হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত রাখতে নিয়মিত ডিম খেতে পারেন। তথ্যসূত্র: অস্ট্রেলিয়ান এগস, বিবিসি গুড ফুডস।

 

এবি/এনজে/এসএন

২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:১৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।