• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

দেহের তাপমাত্রা ও হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখে ‘লাউ শাক’

দেহের তাপমাত্রা ও হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখে ‘লাউ শাক’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

এখন শীতকাল। বাংলাদেশে শীতকাল মানেই হরেক রকমের সবজির উচ্চ যোগান। বাজারে এখন শীতকালীন সবজিতে ভরা। বছরের এই সময়ে সারাদেশে সবজি ও নানা জাতের শাক পাওয়া যায়। তবে শীতকালে ত্বক ভালো রাখতে ও সুস্বাস্থ্যের জন্য লাউ খুবই উপকারী একটি সবজি। লাউয়ের শাকও আমাদের দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার।

এখন সারাদেশের বাজারেই লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে। এটি পুষ্ঠিগুণ ও মানের বিচারের অনন্য। প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক কি আছে লাউ শাকে-

পরিচয়:
লাউয়ের বৈজ্ঞানিক নাম Lagenaria siceraria। এটি শীতকালীন সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম। লাউ এক প্রকার লতানো উদ্ভিদ, যা এর ফলের জন্যে চাষ করা হয়। লাউ যেমন জনপ্রিয় ও উপকারী, তেমনি লাউ শাকও অত্যন্ত উপকারী ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এটি নানা রোগের নিরাময়ে প্রাকৃতিক ভাবে কাজ করে। লাউয়ের ইংরেজি নাম Bottle gourd।

লাউ শাকের পুষ্টিগুণ:
বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও হেলথ বেনিফিট টাইমস ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, লাউ শাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ। এছাড়া খনিজ উপাদানের মধ্যে লাউয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়ন, জিংক, ফসফরাস ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

প্রতি ১০০ গ্রাম লাউ শাকে রয়েছে-

ক্যালরি- ২৬ কিলোক্যালরি,
শর্করা- ৫ গ্রাম,
আঁশ- ০.৫ গ্রাম,
চর্বি- ০.১ গ্রাম,
আমিষ- ১ গ্রাম,
ক্যালসিয়াম- ২৪ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন সি- ৯ মিলিগ্রাম,
পটাসিয়াম- ৩৪০ মিলিগ্রাম,
আয়রন- ০.৮ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন এ- ৭২০০ মাইক্রোগ্রাম এবং
ফসফরাস- ৪৪ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা:
হেলথ বেনিফিট টাইমস, উইকিপিডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসের নিবন্ধে বলা হয়েছে, লাউ শাক শাক-

সংক্রমণ ঝুঁকি কমায়: লাউ শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি, যা বিভিন্ন সংক্রমণ ও ঠান্ডা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখে: এই শাকে রয়েছে প্রচুর আয়রন, যা রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এটি লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়ায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: লাউ শাকে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, লুটেইন ও জিয়েজ্যান্থিনের মতো উপাদান। এসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে: নিয়মিত লাউ শাক খেলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে। ঘুমের সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা লাউ শাক খেলে উপকার পাবেন।

মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধি করে: মাতৃত্বকালীন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য লাউ ও লাউ শাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধিতে ব্যাপক কাজ করে। লাউ শাকে থাকা আয়রন মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: এই শাকে রয়েছে পর্যাপ্ত খাদ্যআঁশ, যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত লাউ শাক খেতে পারেন।

আয়রনের ঘাটতি পূরণ: লাউ শাকের পাতার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা দেহের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। ফলে রক্তশূন্যতা দূর হয়। নারী ও শিশুদের দেহের আয়রনের ঘাটতি পুরণ করতে লাউ শাক খুবই কার্যকরী।্

হাড় মজবুত করে: লাউ শাকে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম দাঁত ও হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে।

ত্বক ভালো রাখে: লাউ শাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এসব উপাদান ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। এটি চুলের স্বাস্থ্যও সুরক্ষিত রাখে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে: লাউ শাকে রয়েছে পর্যাপ্ত খাদ্যআঁশ বা ফাইবার। এতে রয়েছে নিম্নমাত্রার শর্করা। ফলে এই শাক দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।

দ্রুত ক্ষত শুকায়: এতে থাকা উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি দ্রুত ক্ষত সারাতে বেশ কার্যকর। তাই যে কোনো আঘাত বা শরীরের বাহ্যিক ক্ষত শুকাতে লাউ শাকের জুড়ি মেলা ভার।

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: এই শাকে রয়েছে লুটেইন ও জিয়েজ্যান্থিনের মতো খনিজ উপাদান। এই দুটি উপাদান দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস, আনন্দবাজার ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:০৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।