উজ্জ্বল ত্বক ও সুস্থ চুলের জন্য ‘সূর্যমুখীর বীজ’
প্রতিকী ছবি
তেল উৎপন্ন হয়, আবার বীজ দানাও খাওয়া যায়, এমনই এক উপাদান সুর্যমুখী। এটি মূলত এক প্রজাতির ফুল গাছ। সুর্যের দিকে এর সম্মুখ ভাব থাকে বলেই এর নাম সূর্যমুখী। এই ফুল থেকে বীজ সংগ্রহ করে তা থেকে তেল উৎপন্ন করা হয়। তবে সূর্যমুখীর বীজ ভেজে অথবা কাঁচা চিবিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়া এটি দিয়ে নাড়ু ও মুড়ি-মুড়কিতে স্বাদ বৃদ্ধি করা হয়।
প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক কি আছে সূর্যমুখীর বীজে-
পরিচয়:
জাতীয় ফসল হিসেবে ১৯৭৫ সাল থেকে বাংলাদেশে সূর্যমুখী চাষাবাদ হচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখী তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সূর্যমুখীর বীজ বেশ স্বাস্থ্যকর ও উপকারী। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। ঘী এর বিকল্প হিসেবে রান্নায় সূর্যমুখীর তেল বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
পুষ্টিগুণ ও উপাদান:
এই সময়, আনন্দবাজার, বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন ডি, ফ্যাট, প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়ামসহ নানা পুষ্টিকর উপাদান। এ ছাড়া এতে রয়েছে ট্যানিন, অলিক অ্যাসিড ও ওমেগা-৯ ও ওমেগা-৬ ফ্যাট।
উপকারিতা:
বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস, উইকিপিডিয়া ও আনন্দবাজারের পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে, সূর্যমুখীর বীজ-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ওমেগা ৯ ও ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শতভাগ উপকারী ফ্যাট। এতে আরও আছে কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়: এই বীজে রয়েছে স্বল্পমাত্রার ফ্যাট। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
হাঁড় মজবুত করে: সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম, যা হাঁড় গঠনে খুবই কার্যকরী। হাঁড়ের দুর্বলতায় যারা ভুগছেন, তাদের জন্য সূর্যমুখীর বীজ খেতে পারেন।
ওজন কমায়: সূর্যমুখীর বীজ অন্যান্য বীজ দানার মতো উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত নয়, কাজেই এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে।
চুল পড়া ও খুশকি দূর করে: সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ভিটামিন বি-৬, যা মাথার ত্বকের প্রদাহ দূর করে। ফলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং মাথার খুশকি দূর করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: প্রোস্টেট ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে সূর্যমুখীর বীজে থাকা ফ্যাট ও অন্যান্য উপাদান।
আর্থ্রাইটিস নিরাময় করে: দীর্ঘদিনের বাত ব্যথা ও আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে সূর্যমুখী বীজের জুড়ি মেলা ভার। এটি আপনার অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিবে।
স্নায়ুতন্ত্র স্বাভাবিক রাখে: এই বীজে থাকা পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম শরীরের অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমিয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখে।
দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি করে: সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে প্রচুর খাদ্যশক্তি। ফলে এটি দৈহিক শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করে।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার, হেলথ লাইন, এই সময়, উইকিপিডিয়া ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস।
এবি/এসএন