• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

যৌবন শক্তির বুস্টার ‘শিমুল মূল’

যৌবন শক্তির বুস্টার ‘শিমুল মূল’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

শিমুল তুলার বালিশ-তোশকের কদর বিশ্বজোড়া। কিন্তু আপনি কি জানেন, শিমুল গাছের মূল বা কচি শিমুল গাছের মূল মানবদেহের জন্য কতটা উপকারী? কচি শিমুল মূল বা শিমুল গাছের কচি শেকড় ভেষজগুণে ভরপুর। এটি এখন শহরের অলি-গলিতে পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন সরবতের দোকানেও শিমুল মূলের সরবত পাওয়া যায়। সুস্বাস্থ্যের জন্য অনেকেই সকালে খালি পেটে শিমুল মূলের সরবত খেয়ে থাকেন।

প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক কী আছে শিমুল মূলে-

পরিচয়:
শিমুল গাছের গায়ে কাঁটা থাকে। কাঁটার গোড়া মোটা এবং অগ্রভাগ সরু ও তীক্ষ্ণ। বসন্তে শিমুল ফুল ফোটে। কচি শিমুল গাছের মূল ভেষজ গুণাগুণে ভরপুর। সুপ্রাচীনকাল থেকে এটি খাওয়া হয়। নানা রোগ নিরাময়েও এটি দারুণ কার্যকরী। এটি সাধারণত শিমুল গাছ বা তুলাগাছ নামে পরিচিত। এটির ইউনানী নাম ‘সেম্ভল’। শিমূল মূলের আয়ুর্বেদিক নাম ‘শিমুল বা শেম্ভল’। এর ইংরেজি নাম Cotton tree, Red silkcotton tree। এটির বৈজ্ঞানিক নাম Bombax ceiba Linn।

উপাদান:
উইকিপিডিয়া ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসের নিবন্ধে বলা হয়েছে, শিমুল মূলে রয়েছে, ট্যানিন ও ফিনল জাতীয় পদার্থ। এছাড়া এতে রয়েছে লুপিয়ল, ন্যাফতোকুইনোন, ল্যাকটোন ও গ্লাইকোসাইড। এছাড়া শিমূলের বিচিতে রয়েছে টকোফেরল ও টার্পিন।

শিমুল মূলের উপকারিতা:
মানব দেহের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বীর্য ঘন করে থাকে। অনেক পুরুষের বাবা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে এর প্রধান কারণ এদের বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ অনেক কম। তাই স্ত্রী সহবাস করার পরেও তাদের সন্তান হয় না। বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধি করতে শিমুল মূল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত এই মূল চুর্ণ খেলে শুক্রাণুর বেড়ে যাবে এবং সন্তান হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, শিমুল মূল-

যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে: দাম্পত্য সুখী জীবনের জন্য প্রয়োজন স্বাভাবিক যৌন সক্ষমতা। আর এজন্য আপনি নিয়মিত শিমুল মূল খেতে পারেন। এতে থাকা উপাদানগুলো যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করে।

শুক্রানু বৃদ্ধি করে: শিমুল মূল পুরুষের শুক্রানু বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করে। এটি যৌবন ধরে রাখতেও ব্যাপক কার্যকরী।

রক্ত আমাশায় দূর করে: যারা রক্ত আমাশয়ে ভুগছেন, তারা নিয়মিত শিমুল মূল খেতে পারেন। তবে ভালো ফলাফলের জন্য ছাগলের দুধের সাথে শিমুল মূল চুর্ণ মিশিয়ে খাওয়া প্রয়োজন।

ব্যথা উপশম করে: ফোড়া ও অন্যান্য কারণে সৃষ্ট ব্যথা উপশমে শিমুল মূলের জুড়ি মেলা ভার। এটি যন্ত্রণানাশক হিসেবে সুপ্রাচীনকাল থেকে পরিচিত।

রক্তস্রাব স্বাভাবিক রাখে: যেসব নারী অতিরিক্ত রক্তস্রাবজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত শিমুল মূল খেতে পারেন। এটি রক্তস্রাব স্বাভাবিক করতে ব্যাপক কার্যকরী।

ত্বক উন্নত করে: মুখের মেছতা ও ত্বকের অন্যান্য দাগ ও বলিরেখা দূর করতে শিমুল মূল খুবই কার্যকরী। কাজেই পুরনো মেছতা দূর করতে খেতে পারেন শিমুল মূল।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে: শিমুল মূল চূর্ণের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি দেহের ক্ষতিকর টক্সিনগুলো বের করে দেয়।

ভেষজ গুণাবলি:
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র, আনন্দবাজার ও উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, শিমুল শুক্রবর্ধক, প্রদর ও অতিরিক্ত রক্তস্রাবে কার্যকর। বলকারক, কামোদ্দীপক, মলরোধক। মেছতা, উদরাময় ও অতিরিক্ত রক্তস্রাবে উপকারী।

সতর্কতা:
শিমুল মূল খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ আয়ুর্বেদ চিকিৎসক অথবা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। কারণ অতিরিক্ত শিমুল মূল খেলে তা দেহের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস, আনন্দবাজার ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:১১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।