• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

গুণে-মানে সেরা সাদা সোনা চিংড়ি

গুণে-মানে সেরা সাদা সোনা চিংড়ি

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

অত্যন্ত সুস্বাদু একটি মাছের নাম ‘চিংড়ি’। লোনা ও স্বাদু পানিতে দুই ধরণের চিংড়ি পাওয়া যায়। বাংলাদেশে গলদা, বাগদা ও ছোট চিংড়ি বেশি পাওয়া যায়। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চিংড়ি চাষাবাদ হয়ে থাকে। রপ্তানি সম্ভাবনাময় এই মাছকে বলা হয় ‘হোয়াইট গোল্ড’। গুণে-মানে সেরা ও পুষ্টিগুণে ভরা চিংড়ির উপকারিতা নিয়ে আমাদের এই পর্ব সাজানো হয়েছে।

প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক, কী আছে চিংড়িতে-

পরিচয় : চিংড়ি একটি সন্ধিপদী (আর্থ্রোপোডা) প্রাণী। স্বাদু জলের চিংড়ির (Genus) প্যালিমন (Palaemon) এর বিভিন্ন প্রজাতিকে একত্রে চিংড়ী বলে। চিংড়ির প্রতি দেহখণ্ডকে একজোড়া করে মোট উনিশ জোড়া উপাঙ্গ থাকে। অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এদেরকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। শির-উপাঙ্গ, বক্ষ-উপাঙ্গ ও উদর-উপাঙ্গ। 

পুষ্টি উপাদান : স্বাস্থ্যবিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘উপকারী ডটকম’-এ প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, চিংড়ি মাছে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, সেলেনিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান ও ভিটামিন।

প্রতি ১০০ গ্রাম চিংড়ি মাছে রয়েছে
ক্যালরি ৮৪ গ্রাম
প্রোটিন ১৮ গ্রাম
সেলেনিয়াম ৪৮ গ্রাম
ভিটামিন বি১২ ২১ শতাংশ
আয়রন ১৫ শতাংশ
কপার ৯ শতাংশ এবং
ম্যাগনেসিয়াম ৭ শতাংশ।

চিংড়ি কি মাছ, নাকি পোকা ?
গবেষকরা বলছেন, পোকা বলতে সাধারণত তেলাপোকা, গোবরে পোকা, ঘাঁসফড়িং বা বিচ্ছু প্রজাতির কীটপতঙ্গকে বুঝায়। এগুলো আর্থ্রোপোডা শ্রেণির প্রাণী। কিন্তু চিংড়ি আর্থ্রােপোডা শ্রেণির প্রাণী হলেও এটি পোকা নয়। চিংড়ি মূলত আর্থ্রােপোডা পর্বের ম্যালাকোস্ট্রাকা শ্রেণির অমেরুদণ্ডী প্রাণী। ইসলামী শরিয়তে চিংড়ি খাওয়া জায়েজ।

উপকারিতা : উইকিপিডিয়া, আনন্দবাজার ও হেলথ ইন কিউরা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, চিংড়ি-

সুষম খাবারের উৎস : চিংড়িতে রয়েছে ফ্যাট, প্রোটিন ও মিনারেলসের একটি সুষম অনুপাত, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ভালো।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সেলেনিয়াম, যা শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। অর্থাৎ ক্যান্সার প্রতিরোধে চিংড়ি অত্যন্ত কার্যকরী।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে : চিংড়ি মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ একটি খাবার, এটি হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং লিভারের পক্ষেও ভালো।

দাঁত ও হাড় মজবুত করে : চিংড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। এসব উপাদান দাঁত ও হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে।

ত্বক ভালো রাখে : ভিটামিন-ই’তে ভরা চিংড়ি মাছ। এটি ত্বক উজ্জল করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

স্মৃতিশক্তি উন্নত করে : চিংড়িতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন বি-১২। এই বিশেষ ভিটামিনটি স্মৃতিশক্তি প্রখর রাখতে সাহায্য করে।

আঘাত ও ক্ষত নিরাময় করে : চিংড়িতে রয়েছে পর্যাপ্ত প্রোটিন। এই উপাদানটি দেহের আঘাত ও ক্ষত সারাতে সহায়তা করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে : এই মাছে অন্যান্য মাছে তুলনায় ক্যালরি কম থাকে। কাজেই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

সতর্কতা : চিংড়িতে বিভিন্ন স্তরের পারদ থাকে। এছাড়া এতে থাকে উচ্চমাত্রার পিউরিন, যা ইউরিক অ্যাসিড এবং কিডনি বিকল হওয়ার কারণ হতে পারে। এছাড়া চিংড়ি এলার্জি বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ফুসকুড়ি-চুলকানি হতে পারে চিংড়ি খেলে। কাজেই চিংড়ি খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমিতি বজায় রাখা উচিত।

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, বিএন হেলথ কিউরা ডট কম ও আনন্দবাজার

 

এবি/এসএন/আরএ

০৮ নভেম্বর ২০২১, ০৮:২৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।