• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

‘বরই’ ফলের বড়ই গুণ

‘বরই’ ফলের বড়ই গুণ

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। এরই মধ্যে গ্রামাঞ্চলে শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। শীত এলেই বাংলাদেশ যেন ফলমূলে সেঁজে ওঠে। এই শীতে নানা ধরণের ফলের গাছে মুকুল আসে। এমনই একটি ফল ‘বরই’ বা ‘কুল’। অক্টোবরের মাঝামাঝিতে বরই গাছে ফুল আসে। ফেব্রুয়ারিতে বাজারে পাওয়া যাবে এই ফল। বরই আচার ও বরই ভর্তা পছন্দ নয়, এমন মানুষ বাংলাদেশে পাওয়া কঠিন।

পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বরই ফলের আদ্যোপান্ত থাকছে আমাদের আজকের পর্বে। চলুন দেখে নেয়া যাক-

পরিচয় : বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় সব ধরনের মাটিতে বরই বা কুল ভালো জন্মে। এটি শুকিয়ে অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়। কাঁচা ও শুকনো বরই দিয়ে চমৎকার চাটনি ও আচার তৈরি করা যায়। কুল, বরই বা বড়ই-এর বৈজ্ঞানিক নাম Ziziphus Zizyphus। ইংরেজিতে একে সচরাচর Jujube বা Chinese Date বলা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একে ‘কুল’ বলা হয়। এই কুলের সাথে হিন্দু সরস্বতী পূজার একটা সম্পর্ক রয়েছে। কথিত আছে, পশ্চিমবাংলার হিন্দুরা সরস্বতী পূজার আগে কুল খায় না। তাদের রীতি অনুযায়ি, সরস্বতী পুজোর দিন সরস্বতীকে কুল নিবেদন করবার পরে কুল খাওয়া যায়। এর আদি নিবাস আফ্রিকা হলেও বর্তমানে এটি বাংলাদেশ, ভারত, আফগানিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় কিছু অঞ্চলে পাওয়া যায়।

পুষ্টিগুণ : চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতারের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসের নিবন্ধে বলা হয়েছে-

প্রতি ১০০ গ্রাম কুলে রয়েছে
খাদ্যশক্তি ৭৯ কিলোক্যালরি
শর্করা ২০.২৩ গ্রাম
আমিষ ১.২ গ্রাম
জলীয় অংশ ৭৭.৮৬ গ্রাম
ভিটামিন এ ৪০ আইইএ
থায়ামিন ০.০২ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লোবিন ০.০৪ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ০.৯ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬ ০.০৮১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৬৯ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ২১ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.৪৮ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেশিয়াম ১০ মিলিগ্রাম
ম্যাংগানিজ ০.০৮৪ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ২৩ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ২৫০ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ৩ মিলিগ্রাম এবং
জিংক ০.০৫ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা : আনন্দবাজার ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, বরই-

শক্তি বৃদ্ধি করে : বরইয়ে থাকা উপাদানগুলো শরীরে শক্তি জোগায়। অবসাদ কেটে যায় দ্রুত। তাই যারা অবসাদে ভুগছেন, তারা বরই খেতে পারেন।

সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে : বরই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফলে এটি সংক্রামক রোগ দূর করতে সহায়তা করে। যেমন : টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বায় ঘা, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া ইত্যাদি দূর করে।

ক্যান্সার দূরে রাখে : বরইয়ের রসকে ক্যান্সাররোধী হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ফলের রয়েছে ক্যান্সার কোষ, টিউমার কোষ ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ ক্ষমতা।

লিভার ভালো রাখে : যারা লিভারের জটিলতায় ভুগছেন, তারা বরই খেতে পারেন। এটি লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

রক্ত বিশুদ্ধ করে : বরই চমৎকারভাবে রক্ত বিশুদ্ধ করে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য টক বরই খুবই উপকারী। সেই সঙ্গে ডায়রিয়া, বাড়তি ওজন ও রক্তশূন্যতা থেকে মুক্তি পেতে বরই অত্যন্ত কার্যকর।

ত্বক ভালো রাখে : বরইয়ে থাকা পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি ত্বকে জমে যাওয়া দাগ ও অবাঞ্ছিত ভাঁজ দূর করে ত্বক টানটান করে।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার, বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন/আরএ

০২ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৪৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।