• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

টমেটো-গাজরের চেয়েও পুষ্টিগুণে সেরা ‘কাঁকরোল’

টমেটো-গাজরের চেয়েও পুষ্টিগুণে সেরা ‘কাঁকরোল’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

সুস্বাস্থ্যের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত নানা ধরণের ফলমূল ও শাক-সবজি খেয়ে থাকি। এসব উপাদান আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ায়, তেমনি সতেজ শাক-সবজি আমাদের দেহে শক্তি যোগায়। আমাদের দেশে নানা ধরণের সবজি পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম একটি সবজি ‘কাঁকরোল’। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও উপকারী নানা উপাদান।

প্রিয় পাঠক, এই পর্বে কাঁকরোলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আর দেরি নয়, চলুন দেখে নেয়া যাক, কী আছে কাঁকরোলে-

পরিচয় : কাঁকরোলের বৈজ্ঞানিক নাম মোমর্ডিকা ডাইয়োইকা। এটি এক ধরনের ছোট সবজি, যা সাধারণত গ্রীষ্মকালে ফলে। কাঁকরোল সম্ভবত ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে জন্মায় না। কাঁকরোলের বীজ কাঁকরোল গাছের নিচে হয়ে থাকে, যা দেখতে মিষ্টি আলুর মত।

পুষ্টিগুণ : ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, কাঁকরোলে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এছাড়া এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ক্যারোটিন, আমিষ, ভিটামিন-বি, শ্বেতসার ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কাঁকরোলে টমেটোর চেয়ে ৭০ গুণ বেশি লাইকোপিন থাকে, গাজরের চেয়ে ২০ গুণ বেশি বিটা ক্যারোটিন থাকে এবং ভুট্টার চেয়ে ৪০ গুণ বেশি জিয়াজেন্থিন থাকে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কাঁকরোল রাখা ভালো।

প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁকরোলে (ভোজন যোগ্য ) থাকে
প্রোটিন ৩.১ গ্রাম
চর্বি ১ গ্রাম
খনিজ পদার্থ ১.১ গ্রাম
শর্করা ৭.৭ গ্রাম
ক্যালরি ৫২ কিলোক্যালোরি
ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৪২ মিলিগ্রাম
আয়রন ৪.৬ মিলিগ্রাম এবং
ক্যারোটিন- ১৬২০ মাইক্রোগ্রাম।

উপকারিতা : জি নিউজ ও উইকিপিডিয়াতে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, কাঁকরোল-

ওজন কমায় : এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’, যা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে থাকা খাদ্যআঁশ দেরিতে ক্ষুধা অনুভবে সহায়তা করে। ফলে কম ক্যালরি দেহে প্রয়োজন হয়।

ত্বক উন্নত করে : কাঁকরোল দেহের কোষের কাজ উদ্দীপিত করে এবং স্ট্রেস কমায়। ফলে ত্বকের বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া মন্থর হয়ে যায়। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভনয়েড উপাদান, যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তেও বাধা দেয়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : এতে রয়েছে হাইপোগ্লাইসেমিক গুণাগুণ। এটি অগ্নাশয়ের বিটাসেলকে সুরক্ষিত রাখে ও পুনর্গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ইন্সুলিন নিঃসরণ ও সংবেদনশীলতা বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

কিডনির পাথর নির্মূল করে : নিয়মিত কাঁকরোল খেলে কিডনির পাথর নির্মূল হয়। এটি কিডনি ও ব্লাডারের পাথর দূর করতে সহায়ক।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : কাঁকরোল হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। 

ফ্যাটি লিভারের নিয়ন্ত্রণ করে : যারা ফ্যাটি লিভার রোগে আক্তান্ত, তারা কাঁকরোল নিয়মিত খেতে পারেন। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভনয়েড উপাদান। যা দেহের ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র‌্যাডিকেল দূর করতে সাহায্য করে।

কাশি নিরাময় করে : ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ছোট বাচ্চাদেরও কাশির সমস্যা দেখা দেয়। তাই কুসুম গরম পানিতে ৩ গ্রাম কাঁকরোল পাউডার বা বাটা মিশিয়ে দিনে তিনবার খেলে খুসখুসে কাশি ভালো হবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : দেহে ফ্রি র‌্যাডিকেলের সংখ্যা বেড়ে গেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কিন্তু কাঁকরোল খেলে সেই ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যায়। এটি দেহের ফ্রি র‌্যাডিকেলের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় : এটি উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তারা নিশ্চিন্তে কাঁকরোল খেতে পারেন।

রক্তশূন্যতা দূর করে : কাঁকরোলে রয়েছে প্রচুর আয়রন, ভিটামিন ‘সি’ ও ফলিক এসিড, যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।

তথ্যসূত্র : জি নিউজ, বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়া।

 

এবি/এসএন/আরএ

২৬ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।